ধীরগতির ইন্টারনেটে ভোগান্তিতে বেরোবি শিক্ষার্থীরা

বেরোবি
বেরোবি  © টিডিসি সম্পাদিত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের আওতায় থাকলেও ইন্টারনেটের ধীরগতি ভোগান্তিতে ফেলেছে শিক্ষার্থীদের। ধীরগতি ও বারবার সংযোগ বিচ্যুতির ফলে শিক্ষার্থীদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্যাম্পাসের, বিশেষ করে আবাসিক হল বিজয় ২৪-এর ইন্টারনেট সেবা। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

২৪-এর আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত আবাসিক হল মেরামত করা হলেও ইন্টারনেট সেবার তেমন সমাধান হয়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিজয় ২৪ আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে ইন্টারনেটের ধীরগতির জন্য প্রায়ই প্রয়োজনীয় কাজে অতিরিক্ত সময় লেগে যায় তাদের।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২০১৭ সাল থেকে ওয়াই-ফাই সংযোগ চালু করা হয়। ক্যাম্পাসজুড়ে এটি ধাপে ধাপে সম্প্রসারিত হয়। তবে এটি পুরোপুরি কার্যকর হতে কিছুটা সময় লেগেছে এবং ধাপে ধাপে বিভিন্ন হলে সংযোগ দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুর রহমান বলেন, ‘হলে ওয়াই-ফাই সংযোগ তো আছেই, কিন্তু সেটা আমাদের কোনো কাজে আসে না। একবার কানেক্ট করতে গেলে একাধিকবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।’

ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. রিফাত হোসেন রাফি বলেন, ‘বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। ডিজিটাল শিক্ষার অগ্রযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ও হলগুলোয় নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় আমাদের ক্যাম্পাসে ওয়াই-ফাই সংযোগ দুর্বল, ধীরগতির কিংবা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এটি কেবল ছাত্রদের দৈনন্দিন কাজেই সমস্যা সৃষ্টি করছে না, বরং গবেষণা, অনলাইন ক্লাস, লাইব্রেরি রিসোর্স ব্যবহার, এমনকি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধ পড়ার ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা তৈরি করছে।’

তিনি আরও বলেন, অনেকে প্রয়োজনীয় ডেটা সংগ্রহ করতে পারে না, সফটওয়্যার চালাতে সমস্যায় পড়ে, এমনকি গুরুত্বপূর্ণ প্রেজেন্টেশন বা রিপোর্ট জমা দিতেও ব্যর্থ হয়। এ সমস্যার ফলে শিক্ষার্থীদের শিখনপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ছে গবেষণার মান ও দক্ষতা অর্জনের ওপর। তাই আমাদের উচিত যৌক্তিকভাবে এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসা। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ছাড়া একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়া অসম্ভব।

লোক-প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু ইসলাম বলেন, ‘দেশের কোনো ক্যাম্পাসে এমন ধীরগতির ইন্টারনেট সংযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না। এখানে যে ইন্টারনেট স্পিড, তাতে মেসেঞ্জারেই চ্যাটিং করা যায় না, অন্য কাজ তো দূরের কথা।’

জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদুল বলেন, ‘আপনারা জেনে থাকবেন যে, গণ-অভ্যুত্থানের সময় জুলাইয়ের ১৬ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হল (বর্তমান জুলাই ২৪ হল) সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রশাসন আসার ৬ মাসেও এই ক্ষতিগুলো হল প্রশাসন কাটিয়ে উঠতে পারেনি। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি সিটের জন্য শিক্ষার্থীরা মাসিক ভাড়া প্রদান করে নামে মাত্র, সেখানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিমাসে ২৫০ টাকা করে হলের সিট ভাড়া প্রদান করেও হলের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে ৬ মাস ধরে।’

আবিদুল বলেন, একুশ শতকে এসে জ্ঞানচর্চার অন্যতম একটি মাধ্যমে হলো ইন্টারনেট। অথচ ‍‍“জুলাই-২৪” হলের ইন্টারনেট যেন অমাবস্যার চাঁদ। দীর্ঘ ৬ মাস অকেজো হয়ে পড়ে থাকা রাউটার মেরামত এবং নতুন রাউটার যুক্ত করে ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানোর কথা অনেকবার হল প্রশাসনকে বলা হয়েছে। কিন্তু হল প্রশাসন এখনো কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে শুধু শিক্ষার্থীদের মুলা ঝুলিয়ে রেখে আসছে দিনের পর দিন। বিশেষ করে ইন্টারনেট সেবা বৃদ্ধির সঙ্গে হলের অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে যেন হল প্রশাসন গুরুত্ব দেয়, এই আবেদন থাকবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। শিক্ষার্থীরা আর ফাঁকা বুলি শুনতে চান না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার আইসিটি সেলের শাখা প্রধান নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার মো. বেলাল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তাকে ফোন কলে পাওয়া যায়নি।

কবে নাগাদ এ সমস্যা সমাধান হবে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, ‘অলরেডি টেন্ডার হয়ে গেছে, কাজ চলছে আবাসিক হল দুটির। হলগুলোতে ইন্টারনেট আছে, কিন্তু সেটা স্লো। কয়েক দিনের মধ্যেই ওয়াই-ফাই লাইন ঠিক করা হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence