নতুন বছরে বেরোবির শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

আলোকিত দিন ও নিরাপদ জীবনধারার সূচনা হোক, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বেরোবির কয়েকজন শিক্ষার্থী
আলোকিত দিন ও নিরাপদ জীবনধারার সূচনা হোক, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বেরোবির কয়েকজন শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

নতুন বছরে আসে নতুন স্বপ্ন, নতুন প্রত্যাশা। ২৪-এর জুলাই বিপ্লব এক নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষা ক্ষেত্রে নানা দাবি-দাওয়া তুলছেন, ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে চাচ্ছেন। নতুন স্বপ্ন আর প্রত্যাশার আলোকে উদ্ভাসিত ২০২৫ সাল আলোকিত দিন ও নিরাপদ জীবনধারার সূচনা হোক।

এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসের কয়েকজন শিক্ষার্থী। নতুন বছরের প্রতিটি মুহূর্ত শিক্ষার্থীদের জন্য নবীন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে, যা তাদের একাডেমিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনকে আরও সমৃদ্ধ ও উন্নত করার সুযোগ এনে দেয়। তারা সেই সুযোগগুলোকে সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের জীবনকে নতুন মাত্রায় পৌঁছানোর প্রত্যাশা করেন।

২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অভিস্মরণীয় বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে এবং আমার ব্যক্তিগত জীবনেও এটি গভীরভাবে স্মরণীয়। এ বছর আমাদের দেশ কঠিন সংকটের মুখোমুখি হলেও, তা দেশের মানুষের মধ্যে ঐক্য ও সংহতির অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে চলার অভিজ্ঞতা আমাদের শিখিয়েছে, নতুন বছরে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত জীবনে এই বছরে অনেক বাস্তবতার সম্মুখীন হয়েছি।

আরও পড়ুন: যেমন ছিল ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪ সাল

এ থেকেই ২০২৫ সাল আমাদের নতুন আঙ্গিকে ও নতুন করে দেশ গড়বার সময়। চিন্তা-ভাবনা, মানসিকতা ও মনোভাব পরিবর্তনের মাধ্যমে সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও চরিত্রবান ব্যক্তি হয়ে ওঠা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। দেশ ও জনগণের কল্যাণে একত্রিত হয়ে কাজ করার সময় এখনই। নতুন বছর যেন সবার জীবনে কল্যাণ, শান্তি এবং সুখের বার্তা বয়ে আনে। নতুন বছর হোক নতুনত্বের সূচনা। ভালো থাকুক আমার দেশ, ভালো থাকুক আমার দেশের মানুষজন—এই প্রার্থনাই করি।

মো. মোজাহিদ হোসেন (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ১৪তম ব্যাচ)

খুব কম মানুষই আছেন, যারা প্রকৃত অর্থে বদলে যাবার শপথ নেয়। নতুন বছরের নতুন প্রত্যয় হোক নিজের সত্ত্বাকে ধরে রাখার আর প্রতিটি মানবিক সম্পর্ক হোক ভালোবাসার। মানুষ বদলায়। এই বদলে যাওয়ার তীব্র বাসনা থেকে আমরা সমাজ কিংবা রাষ্ট্রকে সুন্দর করতে পারি। নতুন বছরে নতুন গান সবাই লিখে, খুব কম মানুষই আছেন, যারা প্রকৃত অর্থে বদলে যাওয়ার শপথ নেয়। নতুন বছরের নতুন প্রত্যয় হোক নিজের সত্ত্বাকে ধরে রাখার আর প্রতিটি মানবিক সম্পর্ক হোক ভালোবাসার।

সৈয়স তাহমিদ তৌসিফ (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ ১৩তম ব্যাচ)

নতুন বছর মানেই নতুন স্বপ্ন, নতুন সম্ভাবনার দ্বার। এ আশা ব‍্যক্ত করি। গত বছর আমরা নতুন গেট পেলাম। ধীরে ধীরে অনেক উন্নতি হচ্ছে  আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। নতুন বছরে একটাই চাওয়া মেয়েদের পর্যাপ্ত আবাসন ব‍্যবস্থা নেই। তাই চাই বন্ধ হয়ে যাওয়া হলো এবং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কাজ  দ্রুত শুরু হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধাসহ ক্যাম্পাসের সব সমস্যার সমাধান যেন নতুন বছরে হয় এই প্রত্যাশায় করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৷

রওনক জাহান (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ ১৩তম ব্যাচ)

আরও পড়ুন: নতুন বছরে পবিপ্রবি বরিশাল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

নতুন বছরে সবাই নিজেকে নতুন করে খুঁজে নিতে চাই। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রত্যাশা থাকে বিগত বছরের ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেকে আগামীর জন্য প্রস্তুত করা। নতুন বছর নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবনা সাধারণত শিক্ষা, ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত উন্নয়নকে কেন্দ্র করে গড়া তোলা উচিত বলে মনে করি। একজন শিক্ষার্থীর একাডেমিক, ব্যক্তিগত উন্নয়ন, নেতৃত্ব গুণ এবং সৃজনশীলমূলক চিন্তা-ভাবনা বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ। তবে এই প্রত্যাশা রাখি যে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের কাছে যেন সব সমস্যার সমাধান হয় নতুন বছরে৷

মোহাম্মদ আনাস (ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ ১৩তম ব্যাচ)

ঘটনাবহুল ও বিপ্লবের ২৪ পেরিয়ে আমরা ২০২৫-এ প্রবেশ করেছি। অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় তাই এই বছরের প্রত্যাবর্তন একটু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান আমাদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে কিছুটা হলেও সচেষ্ট করে তুলেছে। সেই জায়গা থেকে ২০২৫সালে আমাদের, বিশেষ করে আমার প্রত্যাশাটা একটু বেশিই। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র, রাষ্ট্র থেকে বিশ্ব, সব জায়গাতেই নতুন বছরে ইতিবাচক পরিবর্তনগুলো অন্ততপক্ষে দৃশ্যমান হওয়ার প্রত্যাশা করি।

আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে মাভাবিপ্রবি প্রশাসনে নতুন মুখ যারা

বিশেষ করে একজন বেরোবিয়ান হওয়ায় আবু সাঈদ ভাইয়ের উত্তরসূরি হিসেবে একটা দায়বদ্ধতা চলে আসে। সেই জায়গা থেকে আমার নিজেকে নিয়েও একটা প্রত্যাশার জায়গা আছে। ২৪ যেমন বিভিন্ন সংকট নিয়ে এসেছে, তেমনি এই সংকট নিরসনের পথও খুলে দিয়েছে। সেই সুযোগগুলোকেই সঠিকভাবে কাজে লাগানোর ওপর ২৫-এর সফলতা নির্ভর করতেছে। এই নতুন বছরে আমি দেশের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর হিসেবে দেখতে চাই। এবং এটা বাস্তবায়নের জন্য এই বছরের চেয়ে সেরা সুযোগ কখনো আসবে না। সেই সঙ্গে বিশ্বে চলমান সংঘাত-অশান্তিগুলোরও অবসান চাই। সর্বোপরি, নতুন বছরটি সব মিলিয়ে সবার ভালো কাটুক, দেশ, বিশ্ব সব জায়গায় শান্তি বয়ে আনুক এইটুকুই প্রত্যাশা।

 
আসিউর রহমান (পরিসংখ্যান বিভাগ ১৫তম ব্যাচ)


সর্বশেষ সংবাদ