এমন উপাচার্য আগে কখনও পায়নি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

সদ্য নিয়োগ পাওয়া পাঁচ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
সদ্য নিয়োগ পাওয়া পাঁচ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  © সংগৃহীত

ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগরসহ দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নতুন উপাচার্য (ভিসি) পেয়েছে। এতদিন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় উপাচার্য পদে নিয়োগ হওয়ায় এগুলো নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আগ্রহ থাকতো কম। তবে এবার তাদের ভাষায় একাডেমিক ও প্রশাসনিকভাবে দক্ষ শিক্ষকদের এ পদে নিয়োগ দেওয়ায় তাদের আগ্রহ বেশি। অনেকে বলছেন, এমন উপাচার্য আগে কখনও পায়নি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও বেশ আগ্রহ রয়েছে তাদের।

উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরাও একাডেমিক ও প্রশাসনিকভাবে দক্ষ শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তারা বলছেন, রাজনৈতিক পরিচয়ে ভিসি পদে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের থেকে এখনকার উপাচার্যরা অবশ্যই যোগ্যতম। তবে এজন্য তাদের কাছে শিক্ষার্থীদের আশাও বেশি। নতুন উপাচার্যরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরাবেন বলে আশা তাদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম উপাচার্য। বাবা ড. শফিক আহমদ খানও ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। পড়াশোনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগ থেকে। অর্জন করেছেন প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান। পরবর্তীতে ইউরোপের সারায়েভো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিস্টিংশনসহ ডি.এস.সি ডিগ্রি নিয়ে বাংলাদেশ শিল্প ও গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআই আর)-এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে পাকিস্তানের সুপিরিয়র  ফরেস্ট সার্ভিস ও বিসিএস (বন)-এ যোগদান করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।

শুধু বাবা নয়, পিতামহ কবীর উদ্দিন আহমেদ খান ছিলেন আসাম-বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের ডেপুটি কালেক্টর ও প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট। সে সূত্রেই এলাকায় ‘ডেপুটি বাড়ি’ হিসেবে বিশেষ পরিচিত লাভ করেন ড. নিয়াজ খানদের বাড়ি। এছাড়াও প্র-পিতামহ খান বাহাদুর নাসির উদ্দিন খানও অবিভক্ত ভারতের একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর ছিলেন। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলা লোহাগাড়া উপজেলার বিখ্যাত চুনতি গ্রামের এমন সম্ভ্রান্ত পরিবারেই বেড়ে উঠেছেন অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। 

ঢাবির উপাচার্য হওয়ার আগে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) এর উপ-উপাচার্য ও উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক (গ্রেড-১) ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে-এর সিনিয়র একাডেমিক এডভাইজার এবং সেন্টার অফ রিসোর্সেস এন্ড ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ-এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এরও আগে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনে পেশাজীবন শুরু করেন।

অধ্যাপক ড. খান মর্যাদাপূর্ণ কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যের ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মাননাসহ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণা সম্পাদন করেন। তিনি দু’শতাধিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ ও বইয়ের রচয়িতা। তার তত্ত্বাবধানে বর্তমানে দেশে এবং দেশের বাইরের ১৭ জন পিএইচডি গবেষক রয়েছেন। কর্মজীবনে চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি কাজ করেছেন ইউএনডিপি ও আইইউসিএনসহ বিশ্বের নামকরা অনেক সংস্থাতে। 

দেশের নামকরা অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও তিনি জড়িত। শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কুইন এলিজাবেথ হাউজে ‘দক্ষিণ এশীয় ফেলো’, ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রিসার্চ ফেলো’, মিশরের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি ইন কায়রোতে ‘ডিস্টিংগুইসড ভিজিটিং রিসার্চার’, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ইউমেনের ‘ডিস্টিংগুইসড ভিজিটিং প্রফেসর’, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ‘অধ্যাপক’, থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ‘এশিয়ান রিসার্চ ফেলো’ এবং অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভারসিটির ‘ভিজিটিং স্কলার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আমেরিকান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, যুক্তরাজ্য সরকারের সোয়ানসি-বে রেশিয়াল ইকুইটি কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা, প্রকল্প ও কর্মসূচিতে উপদেষ্টা ও পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অধ্যাপক ড. খান মর্যাদাপূর্ণ কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যের ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মাননাসহ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণা সম্পাদন করেন। তিনি দু’শতাধিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ ও বইয়ের রচয়িতা। এছাড়াও তার তত্ত্বাবধানে বর্তমানে দেশে এবং দেশের বাইরের ১৭ জন পিএইচডি গবেষক এবং ৮ জন এমফিল গবেষক গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন।

অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান নিয়মিতভাবে সরকারের উচ্চপর্যায়ে ও নাগরিক সমাজের বিভিন্ন কমিটি এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে পরিবেশ ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে সরব ভূমিকা রেখে চলেছেন। তিনি বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষক, গবেষণা নির্দেশক ও শিক্ষা  উপদেষ্টা হিসেবে প্রধান জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন: ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পরিকল্পনা ও  উন্নয়ন একাডেমি, ফরেন সার্ভিস একাডেমি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বন একাডেমি, আর্মি আর্টিলারি  সেন্টার এন্ড স্কুল এবং বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি আরণ্যক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ এর বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের চেয়ারম্যান। 

তিনি নিয়মিত একাডেমিক ডিগ্রির পাশাপাশি বিশেষায়িত ও পেশাগতা দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং যুগপোযোগী রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট থেকে ডিপ্লোমা ইন পার্সোনাল ম্যানেজমেন্টে (প্রথম শ্রেণিতে প্রথম) এবং যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস- সোয়ানসি থেকে ডিপ্লোমা ইন ভলেন্টারি এন্ড কমিউনিটি অরগানাইজেশন্স (ডিস্টিংশন) ও যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েলস-ল্যাম্পিটার থেকে প্রফেশনাল সার্টিফিকেট ইন ইন্টারপারসনাল স্কিলস ফর ভলান্টিয়ার (ডিস্টিংশন) অর্জন করেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলেন। অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৮৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৯৫ সালে স্নাতক এবং ১৯৯৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৩ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন।

গবেষণায় তাঁর প্রধান আগ্রহের বিষয় হলো সুপার কন্ডাকটিভিটি এবং কম্পিউটেশনাল ফিজিক্স। ১৯৯৮ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ২০১১ সালে তিনি অধ্যাপক পদে উত্তীর্ণ হন। ২০২০ সালে স্কোপাস তালিকাভুক্ত জার্নালগুলোতে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধ নিয়ে অধ্যাপক নকীব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা গবেষক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি পদার্থবিজ্ঞান গবেষণায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ডিনস অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।

এ ছাড়াও ২০০৮ সালে টাওয়াস ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১১ সালে রাজ্জাক-শামসুন ফিজিক্স রিসার্চ পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি ২০২১ সালে দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স টোয়াসের সদস্য হিসেবে পদ পেয়েছিল। রাবির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো অধ্যাপক হিসাবে তিনি এ সম্মানিত পদটি পেয়েছিলেন। গত ১১ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম থেকে পদত্যাগ করেছিলেন অধ্যাপক সালেহ হাসান নকিব।

ফোরামের কার্যপদ্ধতি, চিন্তা ইত্যাদি কিছু কিছু বিষয়ে চিন্তাগত পার্থক্যের কারণেই তিনি পদত্যাগ করেন বলে উল্লেখ করেছিলেন। গত অন্তত ছয়-সাত বছর ফোরামের কোনো সভা, শোভাযাত্রা, সমাবেশ, মিছিল বা মানববন্ধনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত ছিলেন বলেও উল্লেখ করেছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন। আন্দোলনও যোগদান করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলেন। তিনি ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুছ সোবহান ও মা মাহফুজা বেগম। তিনি নিজ জেলার আরুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে এসএসসি এবং রামগঞ্জ সরকারি মহাবিদ্যালয় থেকে ১৯৮৬ সালে এইচএসসি পাস করেন।  

পরবর্তীতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম ব্যাচের মেধাবী শিক্ষার্থী মোহাম্মদ কামরুল আহসান দর্শন বিভাগ থেকে ১৯৮৯ সালে স্নাতক ও ১৯৯০ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। স্নাতকোত্তর শেষে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে ১৯৯৩ সালে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে সহকারী অধ্যাপক, ২০০৩ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০১৩ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। এছাড়া কামরুল আহসান ২০০০ সালে বুলগেরিয়ার সোফিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর এবং ২০১৩ সালে কারডিফ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন।

কর্মজীবনে অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল, বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, বিভাগীয় সভাপতি, লিও ক্লাবের উপদেষ্টা, দর্শন বিভাগ থেকে প্রকাশিত কপুলা সাময়িকীর নির্বাহী সম্পাদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কর্ম দক্ষতা এবং সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ এর আজীবন সদস্য এবং ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশ ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। 

কামরুল আহসান শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের জাবি শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সভা, সেমিনার এবং গবেষণা কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের জন্য তিনি যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন। রাজনীতির পাশাপাশি একাডেমিক ও টক-শো ব্যক্তিত্ব হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে। একজন সমাজ-সচেতন, সজ্জন, জনপ্রিয় এবং দলমত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি সমাদৃত।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। তিনি বিভাগটি থেকে ২০০১ সালে স্নাতক এবং ২০০২ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে লেকচার হিসেবে নিয়োগ পান। গবেষণা ক্ষেত্রে তার নানান অর্জন রয়েছে।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ। তার দেড় শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন জার্নাল ও কনফারেন্সে প্রকাশিত হয়েছে। তার একাধিক বুক ও বুক চ্যাপ্টার রয়েছে। জাপানের নাগোয়া ইউনিভার্সিটিতে ২০০৩ সালে এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ২০০৬ সালে পিএইচডি ডিগ্রি পানন। তিনি নাসা ফান্ডেড অ্যারোস্পেস সেন্টারে সিনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসেবেও কাজ করেছেন।

আরো পড়ুন: ঢাবির শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে তৈরি হচ্ছে রোডম্যাপ

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করেছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ। তিনি কুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্ট, সিআরটিএসের চেয়ারম্যান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সের (আইসিএমআইইই) অর্গানাইজিং কমিটির কনফারেন্স সেক্রেটারিসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। 

ড. মুহাম্মদ মাছুদ ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি) খুলনা থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (মেকানিক্যাল) ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন বিআইটি ও খুলনার প্রভাষক ও ২০০৩ সালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৯ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও ২০১১ সালে অধ্যাপক হন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ