আবু সাঈদের বাবা ‘ছেলের বুকে গুলি চালানো অভিযুক্তের বিচার দেখে যেতে চাই’

  © সংগৃহীত

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের জন্য স্বজনের কান্না থামছে না। গত মঙ্গলবার বিকেলে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামের বাড়িতে গেলে তাঁর বাবা সোজা নিয়ে যান কবরের দিকে। ছেলের কবর দেখিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মকবুল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। কার বিরুদ্ধে মামলা করব! সরকার তো শিক্ষার্থীদের কোটার দাবি মেনে নিয়েছে। এখন শুধু আমার ছেলের বুকে গুলি চালানো পুলিশের বিচার দেখে যেতে চাই।’

বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। গত ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফটকের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের তাক করা অস্ত্রের বিপরীতে বুক পেতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন আবু সাঈদ। এ সময় পুলিশ সদস্যরা গুলি ছুড়তে থাকেন। হাতে থাকা লাঠি দিয়ে গুলি ঠেকানোর চেষ্টা করেন সাঈদ। এক পর্যায়ে কয়েক পা পিছিয়ে তিনি সড়কের বিভাজক পার হন এবং হঠাৎ মাটিতে বসে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সাঈদের মৃত্যু হয়। তাঁর শরীরে রাবার বুলেটের একাধিক ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরদিন বাবনপুর গ্রামের বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়।

আবু সাঈদ নিহত এবং পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের অভিযোগে তাজহাট থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার দিনই মামলাটি করেন তাজহাট থানার এসআই বিভূতি ভূষণ। পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান রংপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) সায়েকুজ্জামান ফারুকী। দুই সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

অন্যদিকে সাঈদ নিহতের ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। 


সর্বশেষ সংবাদ