পানিবন্দি ঢাকা কলেজ, চরম দুর্ভোগে আবাসিক শিক্ষার্থীরা

পানিতে ডুবে যাওয়া আবাসিক হলের সামনের অংশ
পানিতে ডুবে যাওয়া আবাসিক হলের সামনের অংশ  © টিডিসি ফোটো

ছয় ঘন্টার প্রবল বৃষ্টিপাতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ঢাকা কলেজ। এতে চরম দুর্ভোগে পরেছেন কলেজের ৫ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী। পানি বন্দি অবস্থায় সময় কাটাতে হচ্ছে শিক্ষক ও কোয়ার্টারের কর্মচারীদেরও। এছাড়া রিজার্ভ পানির ট্যাংকও ডুবেছে ময়লা পানিতে। ফলে নিরাপদ খাবার পানির সংকটও তৈরি হয়েছে। 

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে বৃষ্টির পর একাডেমিক এলাকার পানি সকালের মধ্যে নেমে গেলেও ভয়াবহ অবস্থা আবাসিক এলাকার। উত্তর ছাত্রাবাস, দক্ষিণ ছাত্রাবাস, পশ্চিম ছাত্রাবাস, আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস, আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাস, শহীদ ফরহাদ হোসেন ছাত্রাবাস, দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাস ও শহীদ শেখ কামাল ছাত্রাবাসের সামনে জমে আছে হাঁটু সমান পানি।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকা এবং দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার কারণে পুকুর উপচে ২টি খেলার মাঠ, সড়ক এবং ছাত্রাবাসের করিডোর পর্যন্ত পানিতে থৈথৈ অবস্থা। পানির জন্য কেউ ছাত্রাবাস থেকে বের হতে পারছেনা। যারাও জরুরি প্রয়োজনে বের হচ্ছেন তাদের ময়লা পানি মাড়িয়ে মূল সড়কে যেতে হচ্ছে। একইসাথে পানির কারণে ভেতরের দোকান গুলোতে পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ না থাকায় সকাল থেকে না খেয়ে খালি পেটে বসে আছেন অনেক শিক্ষার্থী। 

আরও পড়ুন: ৫ ঘণ্টার বর্ষণে তলিয়ে গেছে ঢাবির মৈত্রী হলের নিচতলা

দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থী মিতুল হোসাইন বলেন, এমন বৃষ্টি এযাবৎকালে দেখিনি। আগেও অনেকবার বৃষ্টিতে মাঠে পানি জমেছে কিন্তু এমন পরিবেশ তৈরি হয়নি। পানি নামার কোন লক্ষণ নেই। তাছাড়া পানি নিষ্কাশনের জন্য কলেজের পুকুর ছিলো অন্যতম ভরসা। কিন্তু গতকালের বৃষ্টিতে পুকুর উপচে পানি উঠে গেছে। ঢাকার ভেতরেই মনে হচ্ছে অন্যরকম এক মানবেতর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

অপরদিকে কলেজের  তত্ত্বাবধায়ক সহকারী তত্ত্বাবধায়করাও পরিবার পরিজন নিয়ে পানি বন্দি অবস্থায় সময় পার করছেন। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পড়েছেন কোয়ার্টারের কর্মচারীরা। কোয়ার্টার অপেক্ষাকৃত নিচু ভূমিতে হওয়ার কারণে অধিকাংশ ঘরেই প্রবেশ করেছে পানি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মচারী বলেন, সারারাত না ঘুমিয়ে থাকতে হয়েছে। ঘরের জিনিসপত্র খাটের উপরে তুলে বসে আছি। দ্রুত যদি পানি অপসারণের ব্যবস্থা করা না হয় তাহলে আমরা খুব বিপদে পড়ে যাব। সকাল থেকে খাওয়া-দাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। খুব খারাপ সময় পার করছি। 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কলেজ উপাধ্যক্ষ এবং ছাত্রাবাস কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ.টি.এম. মইনুল হোসেন বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবস্থা নিতে যতটুকু সম্ভব তা করা হচ্ছে। আর বিষয়টি ঢাকা কলেজের একক কোন বিষয় নয়। এখানে সিটি কর্পোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা জড়িত। কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়নসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ