ঢাবি এলাকায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের ২ নেতাকে বেধড়ক মারধর

আহত ছাত্রলীগ নেতা
আহত ছাত্রলীগ নেতা  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায় ঢাকা কলেজের দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে বেধড়ক মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় এঘটনা ঘটে। পরে রাতেই আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান৷ 

মারধরে আহতরা হলেন কাওসার হাসান কায়েস ও সাব্বির হোসাইন। আহত দুজনকে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরমধ্যে সাব্বির আহমেদ কে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছুটি দেওয়া হলেও গুরুতর আহত কাওসার হোসেনকে পরে ধানমন্ডি পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ 

আহতদের মধ্যে কাউসারের মাথায়, চোখে জখমের চিহ্ন রয়েছে আর সাব্বিরের মথায় ঘাড়ে হাতে জখমের চিহ্ন রয়েছে৷ 

ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা কাওসার জানান জানান, রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইমারজেন্সি গেট সংলগ্ন আমতলী গেটের সামনে দিয়ে বের হওয়ার সময় একটা মোটরসাইকেল সামনাসামনি হয়৷ আমাদের বাইকের সামনে এসে তারা বলে নেশা করেছিস নাকি এসব বলে গালমন্দ করতে থাকে৷ পরে দুই পক্ষই সরি বললে তারা সেখান থেকে চলে যায়৷  এই ঘটনার কিছু সময় পরে আরও চারটা মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের গতিরোধ করে৷ পরে আমরা মোটরসাইকেল থেকে নামলে আমাদেরকে আবারো গালমন্দ করতে থাকে৷ বলে, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ করোস তাই না৷ এই বলেই আমাদের উপর হামলা করে৷ পরে পুলিশ আসলে তারা সেখান থেকে চলে যায়৷ যারা হামলা করেছে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই হবে এবং মনে হয়েছে হামলা পূর্ব পরিকল্পিত৷ 

তবে ধারনা করা হচ্ছে, সাত কলেজ ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের টানাপোড়েন চলছে তার প্রেক্ষিতে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

হামলার বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ২ নেতার উপর হামলা হয়েছে এমন খবর শুনে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেলে ছুটে আসি। রাত তিনটার দিকে আমি এ খবর পাই। এসে দেখতে পাই এখানে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতাকর্মী ছুটে এসেছেন তাদের আহত সহযোদ্ধাদের পাশে থাকার জন্য। মূলত, ঢাকা মেডিকেল মোড়ে চা পান করার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহত দুইজনই বেশ জখম হয়েছেন। সাথে সাথে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। 

 তিনি বলেন, এদের মধ্যে একজন (কাওসার হোসেন কায়েস) গুরুতর  আহত হয়েছেন। তার মাথায় এবং বাম চোখে জখম হয়েছে। আরেকজনের (সাব্বির আহমেদ) কাঁধে ঘাড়ে আঘাত পেয়েছেন। সাব্বির আহমেদকে প্রয়োজনে চিকিৎসা দিয়ে ওষুধপত্রসহ ঢাকা কলেজে তার হলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর গুরুতর আহত কাওসার হোসেনকে ঢামেকে  প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ধানমন্ডি পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। 

কারা হামলা করেছে এবিষয় জানতে চাইলে ইনান বলেন, বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে বলতে পারছি না। এটি সকালে খতিয়ে দেখব এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করব যেন সন্ত্রাসী হামলাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে পারেন। একইসাথে ছাত্রলীগের কেউ এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ ঘটনার সাথে জড়িত এমন অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, কারা হামলা করেছে সেটি এখনও আমার জানা নেই। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ ছাত্রলীগকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অধীনে নিয়ে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক ইনান বলেন, এটি একটি সাংগঠনিক বিষয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাজ হবে। গঠনতন্ত্র ছাত্রলীগের সকল নেতাকর্মীদের কাছে সংবিধান। গঠনতন্ত্রে যেভাবে ছাত্রলীগের ইউনিট সমূহের কমিটি গঠন করার কথা রয়েছে সেভাবেই কাজ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ