নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ১১তম গ্রেড আদায়ের মূল অন্তরায়

  © ফাইল ফটো

আমি কিছু দিন আগে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই। এর পর পর দেখলাম অনেক শিক্ষকই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন অথবা মতামত প্রদান করেছেন।

এ মূহুর্তে আমাদের প্রধান দাবি হচ্ছে প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০গ্রেড ও সহঃ শিক্ষকদের ১১ গ্রেড প্রদান। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষকদের ১০গ্রেড হবে এটা অনেকটাই নিশ্চিত কেননা ২০১৪ সালের ৯ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় দ্বিতীয় শ্রেণির কথা উল্লেখ আছে। এ ছাড়াও এ বিষয়ে মামলার রায় আছে। একারণে আমরা নিশ্চিত যে প্রধান শিক্ষকরা ১০ গ্রেড পাব।

এখন বিষয়টি হচ্ছে সহকারী শিক্ষকদের ১১ গ্রেড প্রাপ্তি প্রসঙ্গে। আমরা অধিকাংশ প্রধান শিক্ষকই চাই যে, সহকারী শিক্ষকরা ১১ গ্রেড পাক। সহকারী শিক্ষক ১১ গ্রেড পেলে প্রাথমিক শিক্ষায় গতি সঞ্চার হবে ও প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধি পাবে বলে আমার বিশ্বাস।

তাই আমরা প্রধান শিক্ষকগন সহকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করেই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। যাতে করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের দাবি আদায় করতে পারি। কিন্তু সহকারীরা যা শুরু করেছে তাতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোন সুযোগ দেখছিনা। তাদের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ শুরু হয়ে গেছে।

সহকারী শিক্ষকদের নেতারা কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না। সবাই বড় নেতা, কেউ কারো থেকে কম নন। বড় নেতা হওয়ার প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়ে পড়েছে। কেউ মিটিং ডেকেছে ১৬ সেপ্টেম্বর, আবার পাল্টাপল্টি কেউ ডেকেছে ২০ সেপ্টেম্বর। সহকারীরা কাঁদা ছোড়াছুড়িতে লিপ্ত হয়ে পড়ছেন।

দুই পক্ষই মিটিংয়ে অংশগ্রহের জন্য আমন্ত্রন জানিয়েছেন। তাহলে আমরা প্রধান শিক্ষকগন যাবো কোথায়? আপনারা নিজেরা আগে ঐক্য বদ্ধ হন। তার পর আমরা প্রধান শিক্ষক সমিতি বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখবো।

আপনারা অর্থাৎ সহকারী শিক্ষকগন প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অশ্রাব্য অশোভন, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও স্ট্যাটাস দেন যা ঐক্যের অন্তরায়। এছাড়াও সচিব মহোদয়ের প্রস্তাবনা অনুযায়ী সরকার যদি প্রধান শিক্ষকদের ১০ গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১ গ্রেড এর পরিবর্তে কোন কারণে ১২ গ্রেড প্রদান করেন তখন আপনারা আমাদেরকে বেঈমান, মির্জাফর, মুনাফেক, দালাল ইত্যাদি ভাষায় কথা বলা শুরু করে দেবেন যা আমাদের কাম্য নয়। তবে সবাই যে খারাপ তা বলছিনা।

তাই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের পূর্বে এসব বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি। আমরা কখনো সহকারী শিক্ষকদের বিপক্ষে ছিলাম না, এখনো নই। আমরা তাদের দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এবং তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী।

আমার লেখায় ভুলভ্রান্তি হলে কিম্বা কেউ বিন্দুমাত্র মনে কষ্ট পেলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আবারও বলি, আমি ঐক্যের বিপক্ষে নই এবং কোন সহকারী শিক্ষকদের বিপক্ষে নই। বাস্তবতা তুলে ধরেছি এই আর কি? সবাইকে ধন্যবাদ।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতি (কেন্দ্রীয় কমিটি)


সর্বশেষ সংবাদ