তাইওয়ান দখলের হুমকি চীনের

তাইওয়ান দখলের হুমকি চীনের
তাইওয়ান দখলের হুমকি চীনের  © সংগৃহীত

চীনা মন্ত্রিসভার এক দফতর বুধবার এক বিবৃতিতে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে তাইওয়ান দখলের হুমকি দিয়েছে। তাইওয়ানকে ঘিরে অনির্দিষ্টকালের জন্য সামরিক মহড়ার মাঝে চীন এমন ইঙ্গিত দিলো। উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টার বদলে চীন তাইওয়ানের উপরআরও চাপ সৃষ্টি করছে। সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে সে দেশকে বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে আনার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

চীনা মন্ত্রিসভার তাইওয়ান সংক্রান্ত দফতর বুধবার এক বিবৃতিতে এমন সম্ভাবনার কথা বলেছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তাইওয়ানের চারিপাশে জোরালো সামরিক তৎপরতা চালিয়ে এবং সে দেশের স্থল ও জলসীমার মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও রণতরি প্রবেশ করিয়ে বেইজিং বেদখলের আশঙ্কা মোটেই উড়িয়ে দিচ্ছে না। তবে বিবৃতিতে ‘শান্তিপূর্ণ' পথে পুনরেকত্রিকরণের ইচ্ছাও প্রকাশ করা হয়েছে।

তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের শক্তি প্রদর্শনের ফলে ব্যবসা বাণিজ্যেরও প্রবল ক্ষতি হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী পণ্য ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ একাধিক দেশ এমন বিঘ্নের ফলে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে চীনের কড়া সমালোচনা করেছে।

আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী পাঠানোর তালিকায় শীর্ষে চীন

অন্যদিকে চীন অ্যামেরিকার আচরণের প্রতিবাদে সে দেশের সঙ্গে  জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে সমুদ্রপথে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক বিষয়ে চলমান সংলাপ থেকে সরে এসেছে। গত সপ্তাহে মার্কিন সংসদের নিম্ন কক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকেই বর্তমান উত্তেজনার জন্য দায়ী করছে চীন। ওয়াশিংটন অবশ্য পেলোসির সফরকে চীনের বৈরি আচরণের ‘অজুহাত' হিসেবে বর্ণনা করেছে।

তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ মঙ্গলবার চীনা সেনাবাহিনীরমহড়ার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে দাবি করেছেন, যে বেইজিং আসলে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমের বড় অংশের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চায়। পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরের পাশাপাশি তাইওয়ান প্রণালীর উপর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চীন গোটা অঞ্চল অবরোধ করতে পারে বলে উ মনে করেন। সে ক্ষেত্রে তাইওয়ানের উপর চীন হামলা চালালে অ্যামেরিকা ও সহযোগীরা সহায়তা করতে পারবে না। অনির্দিষ্টকালের জন্যতাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া চালিয়ে চীন এমনই প্রস্তুতি চালাচ্ছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করছেন।

আরও পড়ুন: তাইওয়ানে ন্যান্সি পেলোসি, আমেরিকা-চীন উত্তেজনা

চীনকে রুষ্ট না করতে তাইওয়ানের সঙ্গে সরাসরি কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সে দেশের প্রতিরক্ষার ক্ষমতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একাধিকবার বলেছেন, যে চীন তাইওয়ানের উপর হামলা চালালে অ্যামেরিকা সেনাবাহিনী পাঠাতে বাধ্য হবে। কিন্তু মার্কিন প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সামরিক মহড়া চালিয়ে তাইওয়ানের সেনাবাহিনী সম্ভাব্য চীনা হামলা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চীনও তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী শুধু মঙ্গলবারই চীনের দশটি রণতরি এবং ৪৫ যুদ্ধবিমান তাইওয়ান ও সংলগ্ন এলাকায় শনাক্ত করা গেছে। এর মধ্যে ১৬টি বিমান তাইওয়ান প্রণালীর ‘মেডিয়ান লাইন’ লঙ্ঘন করেছে। [সূত্র: ডয়চে ভেলে বাংলা]


সর্বশেষ সংবাদ