করোনাকালে যেসব দেশে বেড়েছে বই বিক্রি

বই পড়া
বই পড়া  © সংগৃহীত

করোনাকালে ব্যবসায়িক মহামন্দার ভেতরে বেড়েছে বইয়ের বিক্রি করোনাকালে ছাপা বইয়ের বিক্রিও বেড়েছে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে। এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে প্রকাশক এবং বইপ্রেমীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিষয়ক সাময়িকী পাবলিশার্স উইকলিতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এ বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিতে ছাপা বইয়ের বিক্রির হার বেড়েছে। নিয়েলসেন বুকস্ক্যানের তথ্য উদ্ধৃত করে পাবলিশার্স উইকলি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

আরও পড়ুন: টিকা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২০

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর যুক্তরাজ্যে বই বিক্রি ৩ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় ২১২ মিলিয়নেরও বেশি ছাপা বই বিক্রি হয়েছে এবং মোট বিক্রির পরিমাণ ১ দমমিক ৮২ বিলিয়ন পাউন্ড। যা বুকস্ক্যানের মাধ্যমে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ পরিসংখ্যান।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ব্লুমসবারি জানিয়েছে, ২০০৮ সালের পর গত ছয় মাসে তাদের মুনাফা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। হ্যারি পটারের প্রকাশক হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত এই প্রতিষ্ঠানের আয় লকডাউনের সময়ে ৬০ শতাংশ। শুধু ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত তারা আয় করেছে চার মিলিয়ন পাউন্ড। এই আয় হয়েছে অনলাইনে বই বিক্রি ও ই-বুক থেকে। লকডাউনের সময়ে রেনি এদো লজের লেখা হোয়াই আই অ্যাম নো লংগার টেকিং টু হোয়াইট পিপল অ্যাবাউট রেস ও সারাহ জে মাসের লেখা ক্রিসেন্ট সিটি: হাউস অব আর্থ অ্যান্ড ব্লাড বিক্রি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

ফ্রান্সের পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশনের (সিন্ডিকেট ন্যাশনাল দে এল' এডিশন, এসএনই) সভাপতি ভিনসেন্ট মন্টেন বলেছেন, বই বিক্রি থেকে আয় ২০২০ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেড়েছে। যদিও তিনি নির্দিষ্ট বিক্রয় পরিসংখ্যান দেননি। তবে, ফ্রেঞ্চ বুকসেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (সিন্ডিকেট দে লা লিব্রাইরি ফ্র্যান্সেজ, এসএলএফ) পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে সদস্য স্টোরগুলোতে বিক্রি বেড়েছে ২০ দমমিক ৪ শতাংশ ও ২০১৯ সালের তুলনায় ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ।

পাবলিশার্স উইকলি বলছে, ২০২১ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত বেশ কয়েকটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে ফরাসি বই বিক্রেতাদের সহায়তা করা হয়। যেমন- বই পড়া এবং সংস্কৃতি সচেতনতা বাড়াতে প্রচারাভিযান চালানো। এর মধ্যে আছে সারা দেশে ১৮ বছর বয়সীদের সাংস্কৃতিক পণ্যে কিনতে ৩০০ ইউরো সহায়তা এবং সেগুলোর মধ্যে বই অন্যতম। এর ফলে প্রায় ৩ হাজার অংশগ্রহণকারী বইয়ের দোকানে প্রায় ৪ লাখ ২৬ হাজার বই বিক্রি হয়। এই কার্যক্রম ২০২২ সালে ১৫-১৭ বছর বয়সীদের জন্য প্রসারিত করা হচ্ছে। যা প্রকাশনা শিল্পকে আরও এগিয়ে নেবে।

আরও পড়ুন: এইচএসসির ফল রোববার

জার্মান প্রকাশকরা বলছেন, জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ডে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে সামগ্রিকভাবে প্রায় ৩ শতাংশ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় এক শতাংশ বই বিক্রি বেড়েছে। মিডিয়া কন্ট্রোলের ২০২১ সালের বাজার প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে পাবলিশার্স উইকলি। তবে, ব্রিকস ও মর্টার স্টোরে বই বিক্রিতে লকডাউনের প্রভাব পড়ে এবং বিক্রির পরিমাণ ২০১৯ সালের প্রাক-মহামারি সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ কমেছে।

লকডাউনের সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও চালু ছিল অনলাইন শিক্ষা। ফলে এই সময়ে পাঠ্যপুস্তক বিক্রির হারও বেড়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদন বলছে, লকডাউনের সময়ে ব্লুমসবারির ডিজিটাল রিসোর্স বিভাগের বিক্রি বেড়েছে ৪৭ শতাংশ।


সর্বশেষ সংবাদ