মিয়ানমারকে ছাড়াই আসিয়ান সম্মেলন শুরু

মিয়ানমারকে ছাড়াই আসিয়ান সম্মেলন শুরু
মিয়ানমারকে ছাড়াই আসিয়ান সম্মেলন শুরু  © সংগৃহীত

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসয়িান) সম্মেলন শুরু হয়েছে মিয়ানমারের কোন প্রতিনিধিত্ব ছাড়াই। এর আগে আঞ্চলিক শান্তির প্রতিশ্রুতি মানতে ব্যর্থ হবার পর এই সম্মেলনে মিয়ানমারের জান্তা প্রধানকে আমন্ত্রণ জানায়নি সংস্থাটি। আর এতে ক্ষমতাসীন জান্তা তাদের দেশ থেকে কাউকে পাঠাতে অস্বীকৃতি জানায়।

এবছর এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভার্চ্যুয়াল। এবারের সম্মেলনের সভাপতিত্ব করছে ব্রুনাই। তবে এই ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে সংস্থাটির সভাপতি ও মহাসচিব মিয়ানমার বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি।

মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক সরকারকে হঠিয়ে ক্ষমতা দখল করা সামরিক জান্তা সরকার দেশটিতে চলা সংঘাতময় সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আসিয়ানে দেওয়া প্রতিশ্রুতি শান্তি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে ব্যর্থ হবার পর দেশটির জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংকে জোটের এই আঞ্চলিক সম্মেলন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি ছিল সংস্থাটির (আসিয়ান) আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে একটি অনন্য সাহসী পদক্ষেপ যা সচরাসচর দেখা যায়না। কারণ সংস্থাটি তার সহযোগী দেশের নিজস্ব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।

এদিকে আসিয়ান সম্মেলনের সভাপতিত্ব করা ব্রুনাই জানিয়েছে, আঞ্চলিক এই জোট (আসিয়ান) মিয়ানমারের অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে নিমন্ত্রণ দিত যদি সম্মেলন শুরুর পূর্বে মিয়ানমারের জান্তা সরকার তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করত।

সোমবার (২৫ অক্টোবর) মিয়ানমারের সামরিক সরকার বলেছে, তারা তাদের জান্তা প্রধান বা মন্ত্রি পর্যায়ের প্রতিনিধি ব্যতীত অধস্তন কোন প্রতিনিধি সম্মেলনে পাঠাবে না। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সম্মেলনের যৌথ অধিবেশনে যোগ দেবার কথা রয়েছে। এবারের ভার্চ্যুয়াল সভায় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছে।

এপি’কে দু’জন কূটনীতিক জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবারের সম্মেলনে অরাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে মিয়ানমারের বর্ষীয়ান উচ্চ পদস্থ কূটনীতিক চ্যান আই-ই’কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ব্রুনাই। কিন্তু তিনি তাতে যোগ দেননি। ওদিকে তিনদিনের এই সম্মেলনে সামরিক জান্তাকে আমন্ত্রণ না জানানো অথবা তাকে এড়িয়ে সম্মেলন করার আসিয়ান সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানোর প্রতিশ্রুতি নিয়েছে সামরিক বাহিনী।

স্থানীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থা দ্যা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স বলেছে, সুচির বেসামরিক সরকারকে সরানোর পর থেকে তাকে আটকের পাশাপাশি তার বহু সহযোগী, শরীক ও সমর্থকদের উপর জান্তা সরকার কঠোর দমন-পীড়ন চালিয়েছে এতে করে সহস্রাধিক জান্তা বিরোধী সাধারণ জনগণ নিহত হয়েছে এবং আরো হাজার হাজার গ্রেফতার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

এদিকে মিয়ানমারের বেসামরিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জোট জাতীয় ঐক্যের সরকার আসিয়ানের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

আসিয়ানের সদস্য দেশগুলো হলো ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। এর আগে মিয়ানমারে যখন সামরিক শাসন ছিল, তখন ১৯৯৭ সালে সেই সামরিক সরকারের অধীনে আসিয়ানে যোগ দেয় দেশটি।


সর্বশেষ সংবাদ