ভারতের লোকসভায় ‘বিতর্কিত’ ওয়াকফ বিল পাস
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৩ PM , আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৩ PM

অবশেষে ভারতের লোকসভায় পাস হয়েছে বিতর্কিত ওয়াকফ বিল। ১২ ঘণ্টার দীর্ঘ বিতর্কের পর পাস হয় বিলটি। এর পক্ষে ভোট পড়ে ২৮৮টি। আর বিপক্ষে ভোট দেয় ২৩২ জন সদস্য। আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় পেশ করা হবে ওয়াকফ বিল।
বুধবার লোকসভায় বিলটি পেশ করেন সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। এর আগে সরকারের অবস্থানের কথা ব্যাখ্যা করেন অমিত শাহ। এই ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ১৯৯৫-এর ওয়াকফ সম্পত্তি সংক্রান্ত আইন সংশোধন করবে। ২০১৩-তেও এই আইনের সংশোধন হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মন্ত্রিসভায় বিনা বিতর্কে সর্বসম্মতিতে সেই বিল পাস হয়েছিল।
এখন বিতর্ক এই বিলটির পিছু ছাড়ছে না। সংশোধিত বিল অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল এবং ওয়াকফ বোর্ডে দুজন মুসলমান নন এমন সদস্য থাকা বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া সম্পত্তি প্রদানের আরেকটি প্রাথমিক শর্ত হলো, অন্তত পাঁচ বছর ধরে ইসলাম ধর্মাবলম্বী হলে একমাত্র ওয়াকফকে সম্পত্তি দেয়া যাবে।
বিরোধীরা একজোট
বিরোধীরা এই বিলের তীব্র সমালোচনা করেছেন। বিরোধী ইন্ডিয়া জোট এককাট্টা হয়ে এই বিলের বিরোধিতা করেছে। তারা সংশোধিত বিলটিকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটি বা জেপিসি বিরোধীদের মতামতে কর্ণপাত করেনি।
আরও পড়ুন: শ্রীপুরে ট্রেনে আগুন, ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল যোগাযোগ বন্ধ
কংগ্রেস জানিয়েছে, সরকার সংখ্যালঘুদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। এআইএমআইএমের আসাদউদ্দিন ওয়াইসি জানান, তিনি প্রতীকী পদক্ষেপে মহাত্মা গান্ধীর অনুসরণে এই আইন ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানালেন। তিনি বলেন, ‘২০১৩-তে যখন লালকৃষ্ণ আডবানি, সুষমা স্বরাজের উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে বিলের সংশোধনী পাস হয় তখন কোনো বিতর্ক হয়নি।’ তার প্রশ্ন, তারা কি ভুল ছিলেন?
অন্যদিকে, উদ্ভব ঠাকরের শিবসেনার সংসদ সদস্য অরবিন্দ সাওয়ন্ত ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলমান সদস্য এবং ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালের সিইও পদে আমলা নিযুক্ত করার সমালোচনা করে বলেছেন, সরকার কি মন্দির কমিটিতে অ-হিন্দুদের থাকার অনুমতি দেবে?
সরকারের দাবি
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এই বিলটি সম্পত্তি সংক্রান্ত আইন সংশোধন করবে এবং এর সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। বক্তব্য রাখার সময় অমিত শাহ একটি ওয়াকফ সম্পত্তির একটি দীর্ঘ তালিকা দেখান। তাতে মন্দির বা অন্যান্য ধর্মের জমি প্রদানের খতিয়ান আছে। তিনি বলেন, আপনি অন্যায় করে কারো সম্পত্তি দান করতে পারেন না।
কিরণ রিজিজু বলেন, ‘আমরা যদি আজ এই আইনের সংস্কার না করি তাহলে যেখানে এই বিতর্ক হচ্ছে, সেই সম্পত্তি ওয়াকফের কাছে চলে যাবে।’