জুলাই গণহত্যা মামলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেপ্তার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০২ PM , আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০২ PM

নরসিংদীতে আলোচিত জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন সরকারের দুই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা—অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান চৌধুরী এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম। তারা দু’জনই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রসিকিউটর তামীম এ তথ্য জানান। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে বিচারাধীন এই মামলায় পূর্ব নির্ধারিত অভিযোগপত্র অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান চৌধুরীকে রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে রাঙামাটি জেলা পুলিশ কার্যালয় থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়। এরপর যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সোমবার তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। অনির্বান চৌধুরী বর্তমানে রাঙামাটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
প্রসঙ্গত, ৩০তম বিসিএস-এ উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন অনির্বান চৌধুরী। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি নরসিংদী জেলা পুলিশে যোগ দেন। গত বছরের জুলাই ও আগস্টে জেলার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি সেখানেই কর্মরত ছিলেন। এরপর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর তিনি রাঙামাটি জেলা পুলিশে বদলি হন।
অপরদিকে, মামলার আরেক আসামি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে। তবে তাকে কোথা থেকে বা কখন গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ঘটনার তদন্ত ও বিচার নিয়ে এরই মধ্যে সারাদেশে আলোচনা তৈরি হয়েছে। এই মামলায় প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গ্রেপ্তারের ঘটনা নতুন করে নাড়া দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা ও বিচার প্রশাসনকে।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কোনো সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এমন মামলা এবং গ্রেপ্তার ঘটনা বিরল এবং গুরুত্ববহ। তারা বলছেন, এটি বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হতে পারে।
এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। মামলার অগ্রগতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও বাড়ছে আগ্রহ ও প্রত্যাশা। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মামলার অন্যান্য আসামিদের অবস্থানও নজরদারিতে রয়েছে এবং খুব শিগগিরই এদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।