অবিবাহিত নারীদের গর্ভপাতের অধিকার দিল ভারত
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:২৬ PM , আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:৩১ PM
ভারতের গর্ভপাত আইনে সংশোধনী এনেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, এখন থেকে বিবাহিত নারীদের পাশপাশি অবিবাহিত নারীরাও করতে পারবেন গর্ভপাত।
এছাড়া ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ বা স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত তার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকেও অপরাধের তালিকাভুক্ত করছেন সুপ্রিম কোর্ট।
২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত বিবাহিত ও অবিবাহিত নারীদের গর্ভপাতে কোনও বাধা থাকবে না। আদালতের এই রায়ের প্রশংসা করছেন দেশটির নারী অধিকারকর্মীরা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।
জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট দেশটিতে গর্ভপাতের বৈধতা বাতিলের রায় ঘোষণা করে। ওই রায়ের পর থেকেই বিশ্বজুড়ে গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘নারী-পুরুষের জন্য আলাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকা উচিত নয়’
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, বিবাহিত নারীদের মতো অবিবাহিতরাও ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করতে পারবেন।
গর্ভপাত ইস্যুতে ভারতে সামাজিকভাবে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকলেও দেশটিতে এ ব্যাপারটি বহুল চর্চিত। ভারতের সমাজ-সংস্কৃতিতে কন্যা সন্তানের চেয়ে পুত্র সন্তান বেশি কাঙ্খিত, ফলে পারিবারিক ও সামাজিক কারণে প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক নারী গর্ভপাত করাতে বাধ্য হন।
১৯৭১ সালে প্রথম গর্ভপাতকে বৈধ ঘোষণা করা হয় ভারতে। পরে ২০২১ সালে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে গর্ভপাত আইনে সংশোধনও আনে কেন্দ্রীয় সরকার।
২০২১ সালের সংশোধিত আইনে সাধারণ বিবাহিত নারীদের পাশাপাশি ধর্ষণের শিকার, মানসিক ভারসাম্যহীন, সংখ্যালঘু, গর্ভপাতের পর বিবাহবিচ্ছেদ বা বৈধব্যের শিকার এবং যেসব নারীর ভ্রুণে গুরুতর অস্বাভাবিকতা রয়েছে, তাদেরকেও গর্ভপাতের অনুমোদন দেওয়া হয়।
কিন্তু সংশোধিত আইনে অবিবাহিত নারীদের অন্তর্ভুক্ত না করায় এতদিন গর্ভপাত আইনের সমালোচনা করে আসছিল ভারতের বিভিন্ন নারী ও মানবাধিকার সংস্থাসমূহ। বৃহস্পতিবারের আদেশের মাধ্যমে সেসব সমালোচনার যতি টানলেন সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়, বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালের সম্মিলিত বেঞ্চ শুক্রবারের আদেশে বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ থেকে মুক্তিলাভ নারীর মৌলিক অধিকার। বৈবাহিক মর্যাদা এই অধিকারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
বৈবাহিক ধর্ষণ সম্পর্কে বৃহস্পতিবারের শুনানি শেষে এই তিন বিচারপতির বেঞ্চ বলেন, এখন থেকে কোনো পুরুষ তার স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত জোরপূর্বক সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ালে তাকে যৌন সহিংসতামূলক অপরাধের তালিকাভুক্ত করা হবে।