চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি: ইনডেক্সধারীরা কি আবেদনের সুযোগ পাবেন?

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ  © ফাইল ছবি

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা (আগে থেকেই এমপিও পদে নিয়োগপ্রাপ্ত) আবেদন করতে পারবেন কি পারবেন না সেটি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা ধরনের পোস্ট লক্ষ্য করা গেছে। এ নিয়ে নতুন নিবন্ধনধারী এবং ইনডেক্সধারীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।  তবে ইনডেক্সধারীরা আবেদন করতে পারবেন কি পারবেন না সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা বলছেন, এমপিও নীতিমালায় উল্লেখ থাকলেও তাদের বদলির ব্যবস্থা নেই। শিক্ষকরা নিজ বাড়ি থেকে ৪০০/৫০০ কিলোমিটার দূরের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। যেহেতু বদলির জন্য পৃথকভাবে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় না সেহেতু তারা গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিজের বাড়ির কাছের প্রতিষ্ঠানে বদলির চেষ্টা করে থাকেন।

অন্যদিকে নতুন নিবন্ধনধারীরা বলছেন, এখন পর্যন্ত তিনটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিটিতেই ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে করে সনদধারী বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেননা একজন ইনডেক্সধারী যখন আবেদন করেন তখন তার বর্তমান প্রতিষ্ঠানের পদটি শূন্য হয়ে যায়। ওই পদটি পূরণের জন্য আবার আরেকটি গণবিজ্ঞপ্তির অপেক্ষা করতে হয়। এতে করে শিক্ষক সংকট দূর হচ্ছে না।

তাদের মতে, ইনডেক্সধারীদের অনেকেই উচ্চ নম্বরধারী। গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করলে তাদের সুপারিশ নিশ্চিত। ফলে নতুন নিবন্ধনধারীদের অনেকেই ভালো নম্বর পেয়েও চাকরি পাবেন না। তাই চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ না দেওয়ার দাবি তাদের।

জানা গেছে, বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা  ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আগামী অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। 

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের থেকে শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই তথ্য তিনটি অধিদপ্তরের মাধ্যমে যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তথ্য যাচাই করতে ইতোমধ্যে অধিদপ্তরগুলো থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবরের মধ্যে শূন্য পদের তথ্য যাচাই করে জমা দিতে বলা হয়েছে।

অধিদপ্তর থেকে তথ্য যাচাই শেষে শূন্য পদের প্রকৃত সংখ্যা পাওয়া যাবে। এই তথ্য পরবর্তীতে এনটিআরসিএ’র ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে। এরপর চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদের আবেদন করতে পারা না পারার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি এনটিআরসিএ।

এনটিআরসিএ বলছে, ইনডেক্সধারী এবং নতুন নিবন্ধনধারী দুই পক্ষ থেকেই তাদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। দুই পক্ষই তাদের দাবি এবং যুক্তি কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছেন। আমরাও বিষয়টি নিয়ে মৌখিকভাবে আলোচনা করেছি। তবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে মন্ত্রণালয় থেকে। মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটিই চূড়ান্ত।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ সচিব মো. ওবায়দুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের লক্ষে শূন্য পদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম শেষ হলে শূন্য পদের প্রকৃত সংখ্যা পাওয়া যাবে। সবকিছু ঠিক থাকলে অক্টোবরের শেষ দিকে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদের আবেদন করতে পারা না পারার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীরা আবেদন করতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা সেটি বাস্তবায়ন করব।


সর্বশেষ সংবাদ