করোনাকালে এক স্কুলের ৪০ ছাত্রীর বিয়ে

ঘোগাদহ মালেকা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
ঘোগাদহ মালেকা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

করোনা মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল প্রায় দেড় বছর। এসময়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের ঘোগাদহ মালেকা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্তত ৪০ শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে।

অথচ সদর উপজেলার দুধকুমার নদ অববাহিকার ঘোগাদহ ইউনিয়নকে ‘বাল্যবিয়ে মুক্ত’ ঘোষণা করা হয়েছিল। ছাত্রীর অভিভাবকরা জানান, স্কুল বন্ধ থাকায় পারিবারিক ও সামাজিক নানা কারণে বাধ্য হয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। স্কুল খোলা থাকলে বিয়ে দিতাম না।

বিয়ে হওয়া নবম শ্রেণির এক ছাত্রী জানান, আমি বিয়েতে রাজি ছিলাম না। ছোট বয়সে বিয়ে হওয়ায় আমার শরীরে খুব অসুবিধা হয়। এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছি। আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে খুব কষ্টে আছি। আমি চাই আর কারও যেন বাল্যবিয়ে না হয়।

তার আরেক সহপাঠীর মা বলেন, নবম শ্রেণির মেয়েকে ছয় মাস আগে বিয়ে দিয়েছি। মেয়ে এখন শ্বশুরবাড়িতে। মেয়ের মেধা ভালো ছিল। মেয়েকে পড়াতে চেয়েছি। কিন্তু আর কতদিন বাড়িতে রাখবো। এক বছর ধরে স্কুল বন্ধ। তাই বিয়ে দিয়েছি। স্কুল খোলা থাকলে বিয়ে দিতাম না।

ঘোগাদহ মালেকা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন, আমার বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ১৫১ জন শিক্ষার্থীর ১১৫ জন রেজিস্ট্রেশন করেছে। বাকি ৩৬ জনের ২৫ জনের বিয়ে হয়ে গেছে। অষ্টম ও দশম শ্রেণির আরও ১৫ জন বাল্যবিয়ের শিকার। আরও কয়েকজন বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে বলে জেনেছি।

তিনি বলেন, দারিদ্র্য ও সামাজিক নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে বাল্যবিয়ের মতো অভিশাপ লালন করছে এলাকার মানুষ। নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে কিছু শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন না করায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি বিয়ে হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ে পাঠদান চালুর পর থেকে দশম শ্রেণির ২০ জন শিক্ষার্থী ধারাবাহিকভাবে অনুপস্থিত থাকছে। আমাদের আশঙ্কা, তাদের অনেকের বিয়ে হয়ে গেছে।


সর্বশেষ সংবাদ