আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে পুনরায় সরবরাহ শুরু

  © সংগৃহীত

ভারতের আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হঠাৎ করে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ১৭ ঘণ্টা পর ফের একটি ইউনিট চালু হয়েছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ ফের শুরু হয় কেন্দ্রটি থেকে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে জাতীয় গ্রিডে কেন্দ্রটি থেকে সরবরাহ করা বিদ্যুতের পরিমাণ ছিল ৪৬ মেগাওয়াট, যা ধীরে ধীরে আরও বাড়বে বলে জানা গেছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি জানান, কয়লাভিত্তিক এই কেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে বাংলাদেশ গড়ে এক হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়ে আসছিল। কিন্তু কারিগরি জটিলতার কারণে প্রথম ইউনিটটি ৮ এপ্রিল বন্ধ হয়ে যায় এবং দ্বিতীয় ইউনিটটিও শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বন্ধ হয়ে যায়।

এই দুই ইউনিট বন্ধ থাকায় জাতীয় গ্রিডে বড় ধরনের বিদ্যুৎ ঘাটতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গ্যাস ও তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন বাড়ানো হয় বলে জানান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সদস্য (উৎপাদন) মো. জহুরুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার দামের বিষয়টি নিয়ে আদানি ও বিপিডিবির মধ্যে কিছু বিরোধ রয়েছে, যা নিয়ে আলোচনা চলছে। একই সঙ্গে বকেয়া বিল নিয়েও আদানি কর্তৃপক্ষ মাঝে মাঝে চাপ প্রয়োগ করে। গত বছরও তারা একবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। পরবর্তীতে চলতি বিল পরিশোধ নিয়মিত হলে তারা একটি ইউনিট চালু করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পুরো উৎপাদন পুনরায় চালুর জন্য বিপিডিবি অনুরোধ জানায় এবং মার্চে দুটি ইউনিট থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।

পিজিসিবি ও বিপিডিবি সূত্র জানায়, শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম ছিল। বিকেল ৩টা পর্যন্ত সারাদেশে সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৫৫২ মেগাওয়াট, আর এই সময় ৪২৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে। আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি চালু না হলে রোববার এই ঘাটতি আরও বাড়তে পারত। এ জন্য বিপিডিবি পেট্রোবাংলার কাছ থেকে বাড়তি গ্যাস সরবরাহের অনুরোধও জানিয়েছিল।

উল্লেখ্য, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মোট উৎপাদন সক্ষমতা ১,৬০০ মেগাওয়াট। এর দুটি ইউনিটের প্রত্যেকটির সক্ষমতা ৮০০ মেগাওয়াট। ২৫ বছরের জন্য উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিনতে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে প্রথম ইউনিট এবং জুন থেকে দ্বিতীয় ইউনিট বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে বিপিডিবি। এ চুক্তির মূল্যায়নে বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বিশেষ কমিটি কাজ করছে।


সর্বশেষ সংবাদ