‘আওয়ামী লীগের আমলে ১৫ লাখ মৃত মানুষ ভোট দিয়েছে’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৬ PM , আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৬ PM

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, আওয়ামীলীগের সময়ে মৃত মানুষ ভোট দিয়েছে। একই সাথে আমরা ভোট কারচুপি, ভোট জালিয়াতি, ভুয়া ভোটার দেখেছি। সেগুলো আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, কোন মৃত মানুষ যাতে ভোট দিতে না পারে সে বিষয়ে কিন্তু আপনাদের অবশ্যই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। তারা (নির্বাচন কমিশন) আমাদের বলেছেন যে, তারা নতুনভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং একই সাথে কতজন মৃত ভোটার এর আগে ভোট দিয়েছে সে বিষয়গুলো কিন্তু আমাদের স্পষ্ট করেছেন।
তিনি বলেন, ‘তারা (কমিশন) আমাদের স্পষ্ট করেছেন যে, প্রায় ২৫ লাখ নতুন ভোটার এবং তারা দেখেছেন, ১৫ লাখ মৃত মানুষ এর আগে ভোট দিয়েছে, সেকথাগুলো কিন্তু তারা আমাদের জানিয়েছে। একই সাথে তারা দেখেছে যে, ইতঃপূর্বে আওয়ামী লীগের আমলে শঙ্কা-সমস্যা হয়েছে। তারা চায়, আগামীতে তারা এধরনের সমস্যা, শঙ্কা, ভোটকেন্দ্রে জালিয়াতি এধরনের সমস্যা যেন না হয়। আমাদের কাছে তারা সহযোগিতা চেয়েছেন। আমরা তাদের শতভাগ সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইসির কাছে জানতে চেয়েছি, আগামীতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেক্ষেত্রে তারা কি ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, যদি ডিসেম্বরে হয় তাহলেও তারা প্রস্তুত আছে। যদি আগামী বছরের জুনে নির্বাচন হয়, সেক্ষেত্রেও তারা প্রস্তুতি রাখছেন। আমরা গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে প্রত্যাশা করি, বর্তমানে যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, তারা জনগণকে একটি আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন উপহার দিবে। এ প্রত্যাশা শুধু বাংলাদেশের জনগণের নাহ, আগামীতে যে জাতীয় নির্বাচন হবে, সে নির্বাচনের দিকে পুরো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাকিয়ে থাকবে। কারণ বাংলাদেশে একটি অভ্যুত্থান হয়েছে, বর্তমান যে একটা নির্বাচন কমিশন, এ কমিশন কিন্তু অভ্যুত্থানের ফসল। যে কারণে তাদের কাছে কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা অনেক।’
রাশেদ খান বলেন, ‘আমরা জানিয়েছি যে, আগামীতে যেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা কোনোভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে। ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এটি একটি রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং আদালতের বিষয়। তবে আমরা বলেছি, ইতঃপূর্বে রাজনৈতিক দলকে আপনারা নিবন্ধন বাতিল করেছেন। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ যেহেতু একটা গণহত্যাকারী দল এবং তার দোসররা এই গণহত্যার সাথে সম্পৃক্ত সুতরাং, আপনারা অন্তত তাদের নিবন্ধনটা স্থগিত করেন অথবা বাতিল করেন। এ ব্যাপারে তারা বলেছেন, এটি নিয়ে তারা ভাববেন, আরও অনেকের সাথে আলোচনা করবেন। তবে ইসি যেটি বলছেন, তারা অত্যন্ত স্বাধীনভাবে এবং সরকারের সাথে পরামর্শ করে সরকার যে তাদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিবেন সেটি নাহ, তারা অত্যন্ত স্বাধীন একটি কমিশন হিসেবে কাজ করবেন। আমরা তাদেরকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে কমিশন আমাদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন, আমরাও তাদের সহযোগিতা করতে চেয়েছি।’
আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলে ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি মূলত একটি, আওয়ামী লীগের যে নিবন্ধন সেটি অবশ্যই বিচারপূর্বক বাতিল বা স্থগিত করতে হবে। এই বিষয়টি মূলত আমরা আগেও জানিয়েছি, আজকেও জানিয়েছি। আমরা চাই, বর্তমান যে ইসি রয়েছে, তারা সকল দলের সাথে পরামর্শ করে তাদের মতামত নিয়ে, কমিশন আগামীতে কীভাবে নির্বাচন করতে চায় সেটি কিন্তু খোলাসা করা দরকার। ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি যে, তাদের কারো কারো বক্তব্যে নিয়েও কিন্তু অস্পষ্ট তৈরি হয়েছে, তারা আসলে কীভাবে, কোন পথে এগোচ্ছে সেটি যদি তারা স্পষ্ট করেন যে, তারা (নির্বাচন কমিশন) অমুক সময়ের মধ্যে নির্বাচনটা করতে চাই, এই..এই..প্রস্তুতি নিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে রাশেদ খান সহ ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সাথে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন, নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, বেগম তাহমিদা আহমদ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।