ঘোষণাপত্রে কী থাকছে, জানালেন সারজিস
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৯ PM , আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৭ PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আগামী ৩১ ডিসেম্বর ‘প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভুলেশন’ ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। ওই দিন বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘোষণা দেবেন তারা। ঘোষণাপত্রে কী কী বিষয় থাকবে, তা জানাতে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
সংবাদ সম্মেলন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান হওয়ার পেছনে যে কারণ ছিল, প্রেক্ষাপট ছিল সেটা ১৬ বছরে তৈরি হয়নি। এটা ৫৩ থেকে ৫৪ বছরের প্রেক্ষাপট, আড়াই শ বছরের প্রেক্ষাপট। বিগত ১৬ বছরে এই প্রেক্ষাপট তার সব মাত্রা অতিক্রম করে। সে সময় নির্যাতন, নিপীড়ন, অন্যায়, জুলুম, ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি, মানুষকে জিম্মি করা, হত্যাসহ সবকিছু নিয়ে মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘১৬ বছরের নিপীড়ন শেষে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে একটি যৌক্তিক আন্দোলন শুরু হলো। এটি ৫ আগস্টে গিয়ে শেষ হয়। এটি বিপ্লবই। বিপ্লবের প্রথম যেই ধাপ, তার একটি অতিক্রম করেছি আমরা।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের যে ঘোষণাপত্র, সেটি অবশ্যই আরও আগে ঘোষণা করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু পুরো দেশের রাষ্ট্রীয় যে সিস্টেম, এই দুর্নীতিগ্রস্ত সিস্টেমকে একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে এসে, সেখান থেকে কিছু করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি সিস্টেমকে সুন্দরভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যে সহযোগিতা প্রয়োজন, রাষ্ট্র এই মুহূর্তে সিস্টেমের সবার কাছ থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী তা পাচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: ‘বিনা বিচারে ৬ বছর জেলে মানারাতের দুই ছাত্রী’
সারজিস আরও বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে মানুষ কীভাবে অন্যায় অত্যাচার, নিপীড়নের শিকার হয়েছে, কোন ঘটনার প্রেক্ষাপটে এই অভ্যুত্থানটি সংঘটিত হয়েছে, মানুষ জীবনের মায়া না করে, রক্তের মায়া না করে, রাজপথে নেমেছে এবং খুনি হাসিনার পতন হয়েছে। মানুষের নামার পেছনে কিছু কারণ ছিল। প্রত্যেক মানুষের মনে কিছু আকাঙ্ক্ষা ছিল, স্বপ্ন ছিল, একটা স্পিরিট ছিল। এই স্পিরিটগুলো কী ছিল এবং সামগ্রিকভাবে আমাদের জুলাই বিপ্লব, এই বিল্পব থেকে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা কী, আশা-আকাঙ্ক্ষা কী, এই সামগ্রিক বিষয়গুলো একটি ঘোষণাপত্রে লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ থাকা প্রয়োজন।’
‘এই ঘোষণাপত্র পুরো বাংলাদেশের একটি লিখিত দলিল হিসেবে থাকবে। সেই দলিল আমাদের নতুন স্বপ্নকে ধারণ করবে, বিগত সিস্টেমগুলোকে প্রত্যাখ্যান করবে, নতুন যে সিস্টেম আমরা প্রত্যাশা করি, সেগুলোকে বাস্তবায়নের পথ দেখাবে।’
বিগত সময়ে যে বিষয়গুলো মানুষ নিজের জায়গা থেকে গ্রহণ করেনি এবং আগামীতে মানুষ যে সিস্টেম চায়, তার মধ্যে একটি পার্থক্য তৈরি করবে ঘোষণাপত্র, এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামীতে মানুষের দায়িত্ব যারা ভোটের মাধ্যমে গ্রহণ করবে, তাদের ক্ষেত্রেও এটি একটি নির্দেশিকা হিসেবে থাকবে। সেই বিষয়গুলো আমরা প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভুলেশনে লিপিবদ্ধ করব।’
ইতোমধ্যে এর একটি খসড়া তৈরি করেছেন জানিয়ে এই নেতা বলেন, ‘এই বিপ্লবের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, দলমত-নির্বিশেষে সবার মতামত নেওয়া হচ্ছে; সংশোধন, পরিমার্জন করা হচ্ছে। এই বিপ্লব যেমন ফ্যাসিস্টবিরোধী সবাইকে ধারণ করতে পেরেছিল, আমাদের ঘোষণাপত্রও সবার আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে পারবে বলে আশা করি। এটি আগামীর বাংলাদেশের ঘোষণাপত্র।’
সংবাদ সম্মেলনের অন্যদের মধ্যে ছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ, আব্দুল হান্নান মাসুদ।