‘শহিদ ও ছাত্র-জনতার কাছে দায়বদ্ধ অন্তর্বর্তী সরকার’
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ PM , আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ PM
কোনো ব্যবসায়ী বা পেশিশক্তির কাছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়বদ্ধতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, এ সরকারের দায়বদ্ধতা আছে জুলাই অভ্যুত্থানে এক হাজারের বেশি শহিদ, ৩০ হাজারের বেশি আহত হয়ে যারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং অগণিত ছাত্র-জনতার প্রতি। এ দায়বদ্ধতা থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। এ সরকার কোনো ক্ষমতা গ্রহণ করেনি, শুধু ছাত্র-জনতার অনুরোধে দায়িত্ব নিয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণ করলে সে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সবসময় সতর্ক থাকতে হয়। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ দায়িত্বকে আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং তা রক্ষার্থে সবসময় সচেষ্ট রয়েছে। সাধারণ জনগণ আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন যাতে আমরা দেশের সম্পদকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করি।
আরও পড়ুন: আইসিজির প্রতিবেদনে উঠে এলো অন্তর্বর্তী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জগুলো
তিনি বলেন, কর্ণফুলী টানেল আমাদের জন্য এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেটার পাশ দিয়ে আসার সময় দেখলাম সেখানে কোনো গাড়ি নেই। মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর করে তার সাথে সংযোগ সড়ক হয়ে একটা ইকোনমিক জোন তৈরি করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখন দেখেন সেখানে একটা বিদ্যুৎ প্রকল্প হয়েছে আর এখানে একটা টানেল তৈরি করা হয়েছে যা অপরিকল্পিত পরিকল্পনার একটা অংশ। ফলে দেশ এখন টানেলের লোকসান বয়ে বেড়াচ্ছে।
ফাওজুল কবির খান বলেন, বাপেক্সের এক-একটি গাড়ির দাম ৫ কোটি টাকা। কিন্তু বিদ্যুৎ খাতের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। আবার জ্বালানি খাতে সরকারকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে পদ্মা রেল সংযোগ করা হয়েছে যার বার্ষিক রাজস্ব আয়ের কথা ছিল ১৪শ’ কোটি টাকা। কিন্তু ৬ মাস পরে গিয়ে জানতে পারলাম মাত্র ৩৭ কোটি টাকার রাজস্ব এসেছে। এগুলো উন্নয়নের নামে অপচয় করা হয়েছে। আমি কর্মকর্তাদের সাথে বসেছি যাতে অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে দেশের টাকা অপচয় করা না হয়। কারণ অপচয় করার মতো অবস্থা এখন আমাদের নেই।
আরও পড়ুন: ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন কাল, প্রাধান্য পাবে বাণিজ্য-রোহিঙ্গা ইস্যু
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান, ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির প্রতিনিধি মেজর মাহমুদ বক্তব্য দেন।
এর আগে উপদেষ্টা ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের প্ল্যান্ট পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড, পদ্মা অয়েল কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড, যমুনা অয়েল কোম্পানি ও স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সে বিষয়ে তিনি বলেন, ইস্টার্ন রিফাইনারি তেল শোধনাগার ১৯৬৮ সালে নির্মিত হয়। বর্তমানে এটা খুবই নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে এটা ভেঙে যেতে পারে। দ্বিতীয় আরেকটা রিফাইনারি তেল শোধনাগার তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে এবং অতিদ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু হবে।