শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন জাতির আকাঙ্ক্ষা : বিপিএসএন

বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স নেটওয়ার্ক (বিপিএসএন)
বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স নেটওয়ার্ক (বিপিএসএন)  © সংগৃহীত

বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সংগঠন বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স নেটওয়ার্ক (বিপিএসএন)।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিপিএসএনের সাধারণ সম্পাদক ড. সাব্বীর আহমেদ স্বাক্ষরিত আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কিত বিবৃতিতে শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন জাতির আকাঙ্ক্ষা বলে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের দ্বিমেরুকৃত রাজনৈতিক বিভাজন সাংঘর্ষিক রূপ পরিগ্রহ করার আশংকা দেখা দিয়েছে, যা কিছুতেই কাম্য নয়। অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে নিবন্ধনকৃত সকল দলের অংশগ্রহণে এই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং ব্যালটের মাধ্যমে প্রদত্ত জনগণের রায় বাঁধাহীনভাবে প্রকাশিত হোক এটিই দেশবাসীর একান্ত কাম্য। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন ব্যতীত সরকার পরিবর্তন বা সরকার গঠনের গ্রহণযোগ্য অন্যকোন পন্থা বা মাধ্যম নেই। অনির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা যে-কোনো গণতান্ত্রিক সংবিধানের মূল স্তম্ভ বা কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং অসাংবিধানিক সংবিধান কাগজের কোনো পিন্ড নয় যা কথায় কথায় কাঁটাছেঁড়া করা যায়। আমাদের সংবিধানের (অনুচ্ছেদ ৭) ঘোষণা- সকল ক্ষমতার মালিক জনগণই হবে সকল রাজনৈতিক কর্মকারের কেন্দ্রবিন্দু। রাজনীতিতে বিদেশমুখীনতা দেশের জন্য কল্যাণকর হয় না। উপরন্ত বর্তমানে যেখানে উচ্চমূল্য জীবন বিপর্যয় করে ফেলছে, এ অবস্থায় সাংঘার্ষিক রাজনীতি হবে 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা'। 

অরও পড়ুন: নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ নেই : প্রধান নির্বাচন কমিশনার

সংবিধান একটি জাতির সর্বোচ্চ রাজনৈতিক দলিল উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, সংবিধানকে সমুন্নত রাখা একটি জাতির পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য। অন্যদিকে, একটি সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অবাধ, সুষ্ঠু, নির্বিঘ্ন, প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এরূপ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান আমাদের জাতীয় দায়িত্ব। আমরা মনে করি, সরকার, বিরোধী দল, প্রশাসন, গণমাধ্যম, পর্যবেক্ষক ও জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেলে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান দুঃসাধ্য নয়। নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সহযোগীতামূলক পরিবেশ ভোটাদেরকে নির্ভীকভাবে ভোটদানে উৎসাহিত করবে। 

সুষ্ঠু নির্বাচনে কোনোরূপ ব্যত্যয় ঘটলে তা শুধু জনগণেরই নয়, তাদের জন্যও সমূহ বিপদ ডেকে আনবে জানিয়ে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বাস্তবতা মেনে নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ যেমন আন্দোলনরত দলসমূহের কর্তব্য, অনুরূপভাবে নির্বাচনকালীন দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান যে 'সম্ভব', তা প্রমাণ করা সরকার ও সরকারী দলের জন্য অপরিহার্য। তাই বাস্তব পরিস্থিতির তাগিদ মেনে নিয়ে সঠিক রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ ও যথাযথ ভূমিকা পালনের জন্য আমরা নির্বাচন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলের প্রতি বিনীত আহবান জানাচ্ছি।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২১ জন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর পক্ষে এই বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স নেটওয়ার্ক (বিপিএসএন)।


সর্বশেষ সংবাদ