শিক্ষার্থীদের চাঁদায় দেয়া হবে শিক্ষকদের অবসর ভাতা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়
শিক্ষা মন্ত্রণালয়  © ফাইল ছবি

দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রাপ্য অবসর ভাতার তহবিল যোগাতে স্কুল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে প্রায় ২২১ কোটি টাকা তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে এ বাবদ ফি নেওয়াও শুরু হয়েছে কিছু কিছু জায়গায়। বর্তমানে, তহবিল সংকটের কারণে ঝুলে আছে প্রায় ৬১ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর অবসরভাতা আবেদন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যাচ্ছে, নিয়মানুযায়ী, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের সরকারি অংশ থেকে চাঁদা হিসাবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ কেটে নেয়া হয়। এর মধ্যে অবসর সুবিধা বোর্ড পায় ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ৪ শতাংশ পায়। পাশাপাশি, বিশেষ বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেয়া গচ্ছিত অর্থের লভ্যাংশ পায় সংস্থা দুটি। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে ১৯৯০ সাল থেকে। আর ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে অবসর সুবিধা দেওয়া। এই দুই সুবিধা মিলিয়ে শিক্ষকেরা এককালীন ভাতা পান।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি ২১ লাখ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বছরে প্রায় ২২১ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আর বছরে কত টাকা তোলা যাবে, এর খসড়া হিসাবও করেছে অবসর সুবিধা বোর্ড। জানা যাচ্ছে, ষষ্ঠ থেকে মাস্টার্স শ্রেণির ১ কোটি ৭৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫২২ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তির সময় ১০০ টাকা করে নেওয়া হলে বছরে সম্ভাব্য আয় হবে ১৭৫ কোটি ৯৩ লাখ ৫২ হাজার ২০০ টাকা। এর বাইরে এসএসসি, এইচএসসি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) ও মাস্টার্স পর্যায়ে ৪৫ লাখ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণ থেকে ৪৫ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা আছে। ওই টাকা দিয়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসর সুবিধা বোর্ড এবং কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিল যোগানো হবে।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি বলেন, তহবিল সংকটের কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষকদের আবেদনগুলো অনিষ্পন্ন অবস্থায় থাকে। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির ভর্তির নীতিমালায়ও অবসর সুবিধা ফি নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। চলতি বছরই ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির সময় এই ফি নেওয়া হয়েছে। 

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার জানান, চলতি বছর শিক্ষা বোর্ডগুলো একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় ১০০ টাকা করে নিয়েছে। নিজ নিজ বোর্ডের হিসাবে তা জমা আছে। তহবিল সংকট কাটাতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। শিগগির তা হস্তান্তর করা হবে। তবে এসএসসি ও এইচএসসির ফরম পূরণের সময় এ খাতে ১০০ টাকা করে নেওয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এ প্রসঙ্গে অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী বলেন, তহবিল সংকটের কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের পাওনা যথাসময়ে পরিশোধ করা যাচ্ছে না। তবে আগে এ জট আরও দীর্ঘ ছিল। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর জট অনেকটা কমিয়ে এনেছি।’ 


সর্বশেষ সংবাদ