চিকিৎসক হয়রানির প্রতিবাদে হোমিও কলেজ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২২, ০৫:২৯ PM , আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২২, ০৫:২৯ PM
চিকিৎসক হয়রানি ও ডাক্তার পদবি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করেছেন দুটি সরকারি ও ৬৬ বেসরকারি হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রবিবার (২৮ আগস্ট) সারাদেশে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এর আগে গত ২৩ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হোমিও চিকিৎসক আজিজুর রহমান সুজনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নামের আগে ডাক্তার লেখার কারণে র্যাব-১ এর সদস্যরা তাকে আটক করে থানায় মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করেন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দেশে হোমিও চিকিৎসায় গ্রাজুয়েশন, পোস্ট গ্রাজুয়েশন ও ডিপ্লোমা পাশ চিকিৎসকরা ‘দি হোমিওপ্যাথিক প্র্যাক্টিশনার্স অর্ডিন্যান্স-১৯৮৩ অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছেন। সরকারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী তাদের চিকিৎসক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। গত বছর মন্ত্রিপরিষদ সভায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন-২০২১ এর খসড়া আইন হয়েছে যা এখনো পাশ হয়নি।
অন্যদিকে ভেটেরিনারি আইন অনুযায়ী প্রাণী চিকিৎসকরা নামের আগে ডাক্তার লিখে থাকেন। কিন্তু ভুল বিশ্লেষণে আদালতের আদেশে হোমিও চিকিৎসকদের ডাক্তার পদবি ব্যবহারে নিষেধজ্ঞা দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কিডনির পাথর চিকিৎসায় হোমিও প্রতিবিধান
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী জিহাদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) এমবিবিএস এবং ডেন্টালের শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করেন। কিন্তু যারা হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী বিষয়ে পড়াশোনা করছেন তাদের বিষয়ে বিএমডিসির কোন এখতিয়ার নেই। অধিকার না রেখেও কেন তাদের আইনে এসব বিষয়ে পড়াশোনা করা অন্যান্যদের হয়রানি করা হচ্ছে?
জিহাদুল ইসলাম বলেন, বিএমডিসি শুধুমাত্র এমবিবিএস এবং ডেন্টালের জন্যই গঠিত হয়েছে। কিন্তু তাদের আইনেই হোমিওপ্যাথিসহ অন্যান্যদেরও শাসন করছে। আমরা বিএমডিসির মত বিকল্প একটি কাউন্সিল চাচ্ছি। যারা আমাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবেন এবং একই আইনে হোমিওপ্যাথিসহ অন্যান্য চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের পরিচালিত করবেন। এতে করে এমবিবিএস এবং ডেন্টালের বাইরের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) ডা. শেখ আসহান হাবিব বলেন, আমাদের হয়রানি না করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পরও বিভিন্ন সময় হয়রানি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ভিপি সোহেল রানা বলেন, আমরা যারা এমবিবিএস ও ডেন্টালের বাইরে হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী নিয়ে পড়াশোনা করছি- বিএমডিসি আমাদের সঙ্গে অন্যায় করছে। আমরা এ অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার রয়েছি। যতদিন আমাদের জন্য পৃথক কাউন্সিল না হবে ততদিন আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে।
সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. জাকারিয়া মানিক বলেন, সুপ্রিমকোর্টে আমাদের আপিল মামলা চলমান। আশা করি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। তবে আমরা যেহেতু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে থাকি। এছাড়া আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন করে অল্টারনেটিভ মেডিসিন হিসেবে হোমিও চিকিৎসা দিচ্ছি।