অধ্যক্ষ ছাড়াই চলছে ৫ মেডিকেল কলেজ, উপাধ্যক্ষ নেই ৪টিতে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:২৪ AM , আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৩৪ AM
বিগত দশক থেকে দেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। তবে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক-জনবলের অভাবে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যহত হচ্ছে পাঠদান-সেবা কার্যক্রম। বর্তমানে দেশের ৫টি সরকারি মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষ নেই। উপাধ্যক্ষ নেই এমন সরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা অন্তত ৪টি। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ৪২ শতাংশ শিক্ষকের পদ খালি পড়ে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (গবেষণা, প্রকাশনা ও পাঠ্যক্রম উন্নয়ন) মো. হুমায়ুন কবীর তালুকদার। বাংলাদেশে ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য জনবল তৈরিতে মেডিকেল শিক্ষার কৌশল নিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর বলেন, ২০১০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৩৫২ শতাংশ। তবে প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ঢাকাকেন্দ্রিক। দেশের প্রায় অর্ধেক মেডিকেল কলেজ ঢাকা শহরে বা তার আশপাশে। সরকারি হোক বা বেসরকারি হোক, চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো চলছে না। কারণ, জনবল বা শিক্ষকের ঘাটতি চলছে।
আরও পড়ুন: ললিপপ হাতে শিক্ষিকার সঙ্গে সেলফি তোলা জাবি প্রক্টরের পদত্যাগ
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। শিশুমৃত্যু হার, মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। এসব অগ্রগতি জাদুর বলে হয়নি। অবকাঠামো, জনবল ও পরিকল্পনা ছিল বলেই বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে উন্নতি করতে পেরেছে।
মেডিকেল কলেজের সঙ্গে নিজস্ব কোনো হাসপাতাল ভবন নেই—এমন কলেজের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। তথ্য বলছে, দেশে ১৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজের সঙ্গে নিজস্ব কোনো হাসপাতাল ভবন নেই। শিক্ষক সংখ্যাও অপ্রতুল। শ্রেণিকক্ষ না থাকায় অন্য প্রতিষ্ঠানের বারান্দায় চলছে পাঠদান। কলেজ ক্যাম্পাস নেই কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের। নেই ছাত্রাবাস ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য হোস্টেল সুবিধাও।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সরকারি পাবনা মেডিকেল কলেজ, আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ (নোয়াখালী), কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, যশোর মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ (জামালপুর), রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ (হবিগঞ্জ), নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজ, নীলফামারী মেডিকেল কলেজ, নওগাঁ মেডিকেল কলেজ, মাগুরা মেডিকেল কলেজ ও চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের নিজস্ব কোনো হাসপাতাল নেই।
এছাড়া কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ (গোপালগঞ্জ), শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ (গাজীপুর), পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ (সুনামগঞ্জ) এবং শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ (গোপালগঞ্জ) নির্মাণাধীন। এগুলোর ক্যাম্পাস ও হাসপাতাল কিছুই নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্র্থীরা অস্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে লেখাপড়া এবং অন্য হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল পাঠ নিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, হাসপাতাল ছাড়া মেডিকেল কলেজ চালানো যায় না। যেসব প্রতিষ্ঠানের হাসপাতাল নেই, সেখানে সাময়িক সময়ের জন্য জেলা সদরের হাসপাতাল ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সব মেডিকেলেরই নিজস্ব হাসপাতাল হবে। চারটা মেডিকেলের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এখন নিজেরাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাজস্ব বাজেট থেকে এসব হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে।
মেডিকেল শিক্ষার কৌশল নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, সরকারি পাঁচটি মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষ নেই, চারটি মেডিকেল কলেজে উপাধ্যক্ষ নেই। বিভিন্ন ধরনের ৪২ শতাংশ শিক্ষকের পদ খালি। অন্যদিকে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেসরকারি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি ও মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল চলছে না। এসব প্রতিষ্ঠানে যত আসন আছে, ভর্তির সময় তত আবেদন পড়ে না।