কওমি সনদের কার্যকরী বাস্তবায়ন চায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৮ PM , আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৮ PM

কওমি সনদ স্বীকৃতির কার্যকরী বাস্তবায়ন চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর ও সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে তারা বলেন, কওমি মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা একটি প্রাচীন ও সমৃদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থা, যা যুগ যুগ ধরে দেশ ও জাতির কল্যাণে আলেম, গবেষক ও নৈতিকতাসম্পন্ন নাগরিক তৈরি করে আসছে। এই শিক্ষাব্যবস্থা ইসলামী জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি রাষ্ট্র ও সমাজে ন্যায়, ইনসাফ ও আদর্শিক নেতৃত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
অথচ কওমি শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বরাবরই বঞ্চিত। স্বৈরাচার পতন-পরবর্তী সম্ভাবনাময়ী নতুন বাংলাদেশে পূর্বে গেজেটে পাস হওয়া কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন না হওয়া দুঃখজনক ঘটনা।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, স্বৈরাচার সরকারের আমলে দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স সমমান দিয়ে গেজেট পাস করা হলেও এর আইনি ও নৈতিক দিকগুলো এখনো অস্পষ্ট। ফলে স্বীকৃতি পেলেও যথাযথ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন অধরাই রয়ে গেছে। উচ্চশিক্ষা, সরকারি-বেসরকারি চাকরি, গবেষণা ও পেশাগত প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে কওমি শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে, যা হতাশাজনক।
স্বৈরাচার পতন পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলগণ কওমি শিক্ষার উন্নয়নে আশানুরূপ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যদি কোনো দায়িত্বশীল নিজস্ব চিন্তা-চেতনাকে কওমের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, তা মেনে নেওয়া হবে না।’
বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, কওমি শিক্ষার্থীরা সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির ক্ষেত্রে স্বীকৃত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত না হওয়ায় তারা কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার সুযোগ সীমিত থাকায় আধুনিক গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা কাজে লাগানোর সুযোগও পাচ্ছে না।
আমরা চাই, কওমি শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের মেধাকে মেলে ধরার সুযোগ পাক। উচ্চশিক্ষার কেন্দ্রগুলোতে ও প্রতিযোগিতায় তারা যেন বাধাহীনভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। তাদেরকে সমাজের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করার সুযোগ কেউ যেন না পায়। তবেই দেশ ও জাতি তাদের দ্বারা আরও বেশি উপকৃত হবে।
সরকারকে আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, কওমি সনদের স্বীকৃতি কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, এটি কওমি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার। তাই এর যথাযথ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত রাষ্ট্রকেই করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, কওমি শিক্ষার উন্নয়ন হলে দেশের ধর্মীয় ও নৈতিক ভিত্তি আরও সুদৃঢ় হবে এবং দক্ষ আলেম ও গবেষক তৈরির পথ সুগম হবে। তাই দ্রুত সময়ে কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’