বিদেশ থেকে ফিরে রেললাইনে মাথা দিয়ে কাতার প্রবাসীর আত্মহত্যা
- নোয়াখালী প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৮ AM , আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৯ PM

নোয়াখালী চৌমুহনীর রেললাইনে পড়ে থাকা নিথর শরীরটি দেখে থমকে গিয়েছিল স্থানীয়রা। কেউ ভাবতেও পারেনি, ট্রেনে কাটা পড়া মানুষটি এতদিন পর প্রবাস থেকে ফিরে আসা একজন কাতার ফেরত। তাঁর ঘরে ফেরার কথা ছিল, ফিরলেনও বটে, তবে নিঃশব্দে, একা, আর নিজের জীবন শেষ করে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী রেলস্টেশন এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। নিহত ব্যক্তি মো. আবুল বাশার ওরফে দুলাল (৫৫), সেনবাগ উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের উত্তর সাওপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে কাতারে ছিলেন। পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন—সবাই জানতেন তিনি কাতারেই আছেন। কিন্তু বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়েই তিনি বাংলাদেশে ফিরেছিলেন সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি একুশে পরিবহনের একটি বাসে চড়ে তিনি আসেন চৌমুহনী চৌরাস্তায়। এরপর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। হঠাৎই খবর আসে—রেললাইনে মাথা দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি।
রেলওয়ে পুলিশ জানায়, চৌমুহনী রেলস্টেশনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সমতট এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে পড়ে কাটা পড়েন তিনি। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ প্রদীপ কুমার মজুমদার বলেন, ব্যাপারটি খুবই দুঃখজনক। আমরা প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে করছি। তবে ঠিক কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তাঁর পরিবারের সদস্যরাও কিছু বলতে পারছেন না। মরদেহ আমাদের হেফাজতে রয়েছে। একটি অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয়রা বলছেন, আবুল বাশার বা দুলাল নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। পরিবারে ছোটখাটো দ্বন্দ্ব, প্রবাসজীবনের ক্লান্তি, কিংবা মানসিক বিষণ্ণতা—সবই হতে পারে এই আত্মহননের পেছনে। তবে কোনো চিঠি, কোনো শেষ কথা রেখে যাননি তিনি। শুধু রেখে গেছেন শোক, বিস্ময়, আর অজস্র প্রশ্ন।