সাধারণ শিক্ষার্থীদের সব সমস্যা সমাধানে প্রস্তুত ছাত্রদল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ বুধবার (১ জানুয়ারি)। ১৯৭৯ সালের এই দিনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেন। ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির ছাত্ররাজনীতি ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে। গল্প-আলাপে পাঠকদের জন্য তার চুম্বক অংশ তুলে ধরছেন নিজস্ব প্রতিবেদক আলামিন—
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী গত ১৫ বছরের চেয়ে ভিন্ন আবহে উদযাপিত হবে, প্রস্তুতি কেমন?
নাছির উদ্দিন নাছির: ১ জানুয়ারি ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আমরা খুব উচ্চাভিলাষী কর্মসূচির মাধ্যমে এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছি না। যেহেতু জুলাই-আগস্টে অসংখ্য ছাত্রজনতা শহীদ হয়েছেন তার পরিক্রমাতে আমরা খুব স্বাভাবিকভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীকে আমরা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সেইসাথে ছাত্রদলের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান ঘোষক বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে, যার হাত ধরে শিক্ষা, ঐক্য, প্রগতির পতাকাকে ধারণ করে ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপার্সন সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে যিনি ছাত্রদলের প্রতিটা নেতাকর্মীকে পরম মাতৃস্নেহে দেশের মাটি ও মানুষের জন্য তৈরি করেছেন। যিনি কোন নির্বাচনে কখনো পরাজিত হননি, আমরা তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি। সেই সাথে তার সুস্থতাও কামনা করছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে হারানো নেতাকর্মীদের স্মরণে আলাদা কোনো কর্মসূচি আছে?
নাছির উদ্দিন নাছির: গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতার ২ হাজারেরও বেশি শহীদ হয়েছেন। তাদের স্মরণে আমরা অনেকগুলো প্রোগ্রাম করেছি। বাংলাদেশ ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীটি খুবই সরল এবং স্বাভাবিক করছি। যেখানে ছাত্রদলের যে আলোচনা সভা হবে সেখানে শহীদদের স্মরণে আলাদা একটা প্রোগ্রাম থাকবে। এর বাইরে আমরা যেহেতু পূর্বেও বলেছি, ভবিষ্যতে এরকম আলাদা একটা প্রোগ্রামের পরিকল্পনা আছে, সেটার সময়ও নির্ধারণ করা রয়েছে। আমরা মনে করছি যে, শহীদদের স্মরণে পূর্বেও করেছি এবং পরবর্তীতেও আমরা করব, সেগুলো সেট করা আছে। তাদের স্মরণে আমাদের একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নেতাকর্মীদের প্রতি কি বার্তা থাকবে?
নাছির উদ্দিন নাছির: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে। দীর্ঘ এই পথপরিক্রমায় ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মী বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে শহীদ হয়েছেন। বিশেষ করে আমরা গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম করার কারণে ছাত্রদল পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে নির্যাতিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র সংগঠন হিসেবে ইতোমধ্যে সর্বজন এটি বলছে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, যেটি আপনারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখেছেন। বাংলাদেশের অন্যকোনো ছাত্র সংগঠনগুলো এখনো পর্যন্ত তাদের কতজন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন বা হামলার শিকার হয়েছেন অথবা জেলে গিয়েছেন এরকম তথ্য আসলে গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে পারেনি।
আমরা মনে করছি, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও তার পূর্ববর্তী সময়ে সাড়ে ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সেখানে ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন এবং একই সাথে জুলাই-আগস্টে শহীদ হয়েছেন তার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল একটি স্বাভাবিক সময়ে উপনীত হয়েছে।
ছাত্রদলের প্রত্যেকটা নেতাকর্মী একুশ শতক উপযোগী একটি ছাত্ররাজনীতি বিনির্মাণ যেখানে শুধু সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য রেখে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এদেশের মালিকানা এদেশের মানুষের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আমাদের যে আপোষহীন সংগ্রাম সেই সংগ্রাম ভবিষ্যতেও আমরা অব্যাহত রাখব। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে ছাতদল ভবিষ্যতের রাজনীতি প্রস্তত করতে চায়। সেজন্য আমাদের প্রত্যেকটা নেতাকর্মী সচেতন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকল নেতাকর্মীকে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। একই সাথে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক জনাব তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ছাত্রদলে নতুন নেতৃত্বে নিয়মিত ছাত্র থাকছে না, যেটা বারবার আলোচিত হয়। এটা কেন সম্ভব হয় না?
নাছির উদ্দিন নাছির: গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে নিয়মতান্ত্রিক যে রাজনীতির সেটি ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে হাসিনার ফ্যাসিস্ট আমলে। আপনি দেখেছেন যে, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে একটি ইতিবাচক রাজনীতি চলমান রয়েছে। বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনগুলো আগের জায়গায় রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা মহানগর কেন্দ্রিক আমাদের যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে সেখানে আমরা অনেকগুলো সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি অপেক্ষাকৃত নিয়মিত শিক্ষার্থী এবং গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে যাদের আন্দোলন সংগ্রামে ত্যাগ রয়েছে তাদেরকে আমরা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছি, কমিটিতে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। আগামী ৪৫ দিন পরবর্তী সময়ে সম্মেলনের মাধ্যমে এই কমিটি শতভাগ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে একটি সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি করবে। গণমাধ্যম যে বিষয়টি বলেছে যে, আসলে সেটি আমরা পূর্বে পারিনি, একটা বাস্তবতা ছিল, আমাদের জন্য কঠিন ছিল। আমরা এখন মনে করছি, ২ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করেছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে দেশের দুই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত আসবে। শতভাগ নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে কমিটি নির্বাচন করা হবে।
গত কয়েকদিন আগে ঢাকা মহানগরে আমরা যে কমিটি করেছি সেখানে অর্ধেকেরও বেশি নিয়মিত শিক্ষার্থী। স্পেসেফিক ভাবে যদি বলি, আমরা কমিটিতে ২০১৮-১৯ সেশন থেকে শুরু করে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদেরও কমিটিতে রেখেছি। যে কমিটি আমরা দিয়েছি সেটি আগামী ৪৫ দিনের জন্য একটি সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি। তারা আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে নিয়মিত ছাত্রদের নেতৃত্ব তুলে দিবে। সাড়ে ১৫ বছর যে বাস্তবতার কারণে আমরা পারিনি, এ বিষয়টি সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবগত রয়েছেন, সচেতন রয়েছেন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদলের ভাবনা কী?
নাছির উদ্দিন নাছির: স্পষ্টতভাবে আমরা বলতে চাই, ছাত্রদল সবসময় ছাত্রসংসদ নির্বাচনমুখী ছাত্ররাজনীতি চালু থাকুক সেটা আমরা অতীতেও চেয়েছি, ভবিষ্যতেও চাইবো এবং আমাদের এ চাওয়াটা প্রাসঙ্গিক থাকবে। আপনাকে যেটি স্মরণ করে দিতে চাই, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ব্যতীত অন্যকোনো ছাত্রসংগঠন ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক রাজনীতি করতে পারেনি। কেউ যদি গোপন তৎপরতায় কাজ করে থাকে তাহলে সেটি আলাদা বিষয়। এখনকার বাস্তবতায় ক্যাম্পাস স্বাভাবিক অবস্থায় উপনীত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যাচ্ছে। ক্যাম্পাসে প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। আমরা মনে করছি অবশ্যই ছাত্রসংসদ নির্বাচন হওয়া উচিত। কিন্তু ছাত্রসংগঠনগুলোকে পর্যাপ্ত সময় নিশ্চিত করতে হবে যে, অপেক্ষাকৃত শিক্ষার্থীরা কোন ছাত্রসংগঠন অধিক বেশি কল্যাণকর হবে সেই সময়টুকু বুঝে ছাত্রসংসদ নির্বাচন করলে সবচেয়ে বেশি কল্যাণকর হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে দ্রুত কীভাবে ছাত্রসংসদ নির্বাচন করা যায় সেটির রূপরেখা আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলোকে দেব। একইসাথে গণঅভ্যুত্থান পরর্ব্তী সময়ে সব পলিসিতে সংস্কার চলছে, আমরাও মনে করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পলিসিগত যে সংস্কার দরকার রয়েছে সেগুলো অবশ্যই দরকার রয়েছে। সেগুলো করে যদি খুব দ্রুত সময়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করা হয়, তাহলে সেটি কল্যাণকর হবে। ২০১৯ সালের মত ডাকসু আমরা চাইনা, শিক্ষার্থীদের ম্যানডেট পালন করতে পারবে এমন একটি ডাকসু আমরা চাই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকতে কি কি করবে ছাত্রদল?
নাছির উদ্দিন নাছির: গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে খুনি সংগঠন, যে সংগঠন ইতোমধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ হয়েছে। সে সংগঠন বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ক্যাম্পাসে যে গতানুগতিক নেতিবাচক রাজনীতি কায়েম করেছে। বিশেষ করে পিটিয়ে মানুষ মেরে ফেলা, জোর করে মিছিলে নেয়া, গেস্টরুম নির্যাতনের যে ভয়াবহ চিহ্ন রেখে গেছে ছাত্রলীগ তার বিপরীতে ছাত্রদল ইতিবাচক রাজনীতি শুরু করেছে ছাত্রদল। গত সাড়ে চার মাসে দেশের কোন ক্যাম্পাসে এমন একটি ঘটনা দেখাতে পারবেন না জোর করে মিছিলে নেয়ার একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনোভাবকে শ্রদ্ধা করে ছাত্রদল মধুর ক্যান্টিন পর্যন্ত যায়নি। ছাত-জনতার আন্দোলন এক ধরনের মাইলফলক করে দিয়েছে যে আপনি কীভাবে আগামী ছাত্ররাজনীতি পরিচালিত করবেন। আমাদের সেই মাইলফলকের ব্যাপারে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ রয়েছে। ছাত্রলীগ গেস্ট রুম নির্যাতনের যে কালচার তৈরি করেছিল সেটা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমরা ছাত্রদলের পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করছি, ইতিবাচক ছাত্র রাজনীতির জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের বাইরে ছাত্রদল কোন রাজনীতি করবে না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হল দখল, গেস্টরুম চালু, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির মতো ঘটনাগুলো পুনরায় দেখা যাবে কিনা?
নাছির উদ্দিন নাছির: ৫ আগস্টের স্পিরিটকে ধারণ করে ছাত্রদল একটি ইতিবাচক রাজনীতি করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এজন্য যাবতীয় পদক্ষেপ আমরা শুরু করেছি। শিক্ষার্থীদের যাবতীয় সমস্যা রয়েছে, সেগুলো নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা চলমান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবাসন সংকট রয়েছে, শিক্ষার্থীদের প্রতিবছর শিক্ষার যে যাবতীয় খরচ সেটি বেশি এবং বর্ধিত করা হচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রয়েছে সেখানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট শিক্ষার্থীদের উপর আরোপ করা হয় এমন সব সমস্যা নিয়ে ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ আলোচনা করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট, শিক্ষা ব্যয়সহ যাবতীয় সমস্যা সমাধানে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সম্প্রতি রাজধানীর একাধিক কলেজে কমিটি ঘোষণার পর অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়েছে পদবঞ্চিরা। তাদের এসব দাবি কতটুক যৌক্তিক?
নাছির উদ্দিন নাছির: ঢাকাতে আমরা ১১টি সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে কমিটিগুলো দিয়েছি সেটা হচ্ছে আমাদের সম্মেলন প্রস্তুত করার জন্য করেছি। এই কমিটি আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সম্মেলনে করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেব। তবে কমিটির পরে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী সংক্ষুব্ধ হয়েছে, তারা প্রতিবাদ করছে। আমরা এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। কিন্তু ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় সাথে আমাদের কোন নেতাকর্মী জড়িত নয়। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক দুটি পদের বিপরীতে আমাদের অসংখ্য যোগ্য নেতা রয়েছেন। কিন্তু এটি বাস্তবতা আপনি যখন সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন তখন আপনি যেকোনো দুজনকে পদ দিতে পারবেন, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাকিদের আপনি পদ দিতে পারবেন না। আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের উদাত্ত আহ্বান জানাব, যেন তারা সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে এসে কথা বলেন। আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমানের সাথেও কথা বলতে পারেন। যা সমস্যা তৈরি হয়েছে তা ইতোমধ্যে আমরা প্রায় সব সমাধান করেছি। ককটেল বিস্ফোরণের সাথে পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তির এক ধরনের ইন্ধন রয়েছে বলে আমরা অনুমান করছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শিবিরের সঙ্গে ছাত্রদলের রাজনৈতিক মতপার্থক্য/বিরোধ আছে কিনা?
নাছির উদ্দিন নাছির: বিএনপির সাথে জামায়াতের একটি আন্দোলনমুখী জোট ছিল সেটি এখন কার্যকর রয়েছে কি না আমরা শতভাগ নিশ্চিত না। আপনি যে সংগঠনের কথা বললেন আমাদের তাদের সাথে কখনো কোন ঐক্য ছিল না। আদর্শগত দিক থেকেও শতভাগ আমরা আলাদা কাজ করছি। ৫ আগস্টের পর ছাত্রদলের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে প্রোপাগান্ডা হচ্ছে। সেখানে আমরা দেখছি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী এরকম প্রোপাগণ্ডায় অংশগ্রহণ করছে। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে, প্রত্যেকটি এমন কর্মকাণ্ডে সে সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়িত রয়েছে। চব্বিশের আন্দোলনেও তাদের সাথে আমাদের পলিসিগত বিষয়ে বিরোধ হয়েছে। ১৯৭১ সাল, ১৯৯০ সাল নিয়ে আপত্তি তো রয়েছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে আগামীতে ছাত্রদলের কি ভূমিকা থাকবে?
নাছির উদ্দিন নাছির: ছাত্রদল বিএনপির একটি সহযোগী ছাত্রসংগঠন। আমরা স্বতন্ত্রভাবে আমাদের সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং ২০১৯ সালে যে সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল, সেসব কাউন্সিলররা তারেক রহমানকে আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক নির্বাচিত করেছেন। বাংলাদেশের মালিকানা বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে দিতে আমরা বিএনপির সাথে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাব। সেই সাথে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আপোষহীনভাবে ছাত্রদল কাজ করে যাবে। এছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে আমাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন চলমান, ভবিষ্যতেও করতে চাই। শিক্ষার্থীদের মতামতের বাইরে ছাত্রদল রাজনীতি করতে চায় না। শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত ছাত্রদলের উপর চাপিয়ে দিবে, আর আমরা সেটি নিয়ে কাজ করতে চাই।