ভুট্টার দুটি নতুন জাত উদ্ভাবন শেকৃবি অধ্যাপকের
- আরাফাত রহমান অভি
- প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০১৮, ০৩:৩০ PM , আপডেট: ১০ আগস্ট ২০১৮, ০৪:৫৬ PM
দুটি নতুন হাইব্রিড জাতের ভুট্টা উদ্ভাবন করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহেল বাকী। জাতীয় বীজ বোর্ড (এনএসবি) এগুলোতে সাউ হাইব্রিড ভুট্টা-১ ও সাউ হাইব্রিড ভুট্টা-২ নামে নিবন্ধিত করেছে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোনমি (কৃষিতত্ত্ব) বিভাগ জানায়, ভুট্টার জাত দুটি পুরো দেশে চাষযোগ্য। এগুলো রবি (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ও খরিপ-১ (মার্চ-মে) মৌসুমে চাষ করা যাবে। জাত দুটির গড় উৎপাদন রবি মৌসুমে বিঘাপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ মণ ও খরিপ-১ মৌসুমে বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ৩৩ মণ। চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর ও পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জে জাত দুটির মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষামূলক ভাবে চাষাবাদ করা হচ্ছে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোনমি (কৃষিতত্ত্ব) বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহেল বাকীকে গবেষনায় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছে নীল সাগর বীজ কোম্পানি।
ড. আবদুল্লাহেল জানান, দেশীয় অন্যান্য জাতের চেয়ে উদ্ভাবিত জাত দুটি তুলনামূলক খাটো প্রকৃতির। তাই ঝড়ে বা প্রবল বাতাসে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা কম। জাত দু’টির গোড়া থেকে মোচার উচ্চতা ৬০ থেকে ৮৫ সে.মি.। ফলে ভুট্টার অন্যান্য জাতের চেয়ে উদ্ভাবিত জাত দু’টি মাটি থেকে বেশি পরিমাণে পানি ও পুষ্টি সংগ্রহ করে মোচায় সরবরাহ করতে পারে। এগুলোর ট্যাসেল (একটি আবরণ বিশেষ; যার ভেতর ভুট্টা হয়) খাড়া ও ছড়ানো। এতে বৃষ্টির পানি ট্যাসেলে জমে থাকে না। বীজের গঠন চোকা। তাই এর র্যাকিসে (ভুট্টার ভেতরে সাদা অংশ; যার ওপরে ভুট্টা সারি সারিভাবে বিন্যস্ত থাকে) বেশি সংখ্যক বীজ জন্মায়। ফলে চাষীরা লাভবান হবেন।
উদ্ভাবিত জাত দু’টি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন উদ্ভাবিত জাত দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে করা হয়েছে। ফলে এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ। আপাতত এ জাতগুলো কোনো কৃষক চাষ করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা বীজ সরবরাহ করব। পরবর্তীতে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাত দুটি কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া হবে। জাতগুলো নিয়ে এখন স্নাতকোত্তর ও পিএইচডির শিক্ষার্থীরা গবেষণা করবেন। তাদের গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল পর্যালোচনা করে কৃষক পর্যায়ে বীজ সরবরাহ করা হবে। আমাদের দেশে খাদ্য হিসেবে ভাতের পর ভুট্টার সম্ভাবনা ব্যাপক। এছাড়া পোল্ট্রি ফিডের জন্য বাংলাদেশ এখনও প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে ভুট্টা আমদানি করে। ফলে কৃষক পর্যায়ে উদ্ভাবিত জাত দু’টির চাষ বাড়ানো গেলে কৃষক লাভবান হবে।