আমের জনপ্রিয় জাতগুলোর নামকরণ হয় যেভাবে

  © সংগৃহীত

ফজলি থেকে ল্যাংড়া, গোপালখাস থেকে হিমসাগর। গ্রীষ্মের তীব্র গরমে শীতল পরশ বুলিয়ে যায় নানা জাতের আম। যেমন গন্ধ তেমনই স্বাদ। কিন্তু জানেন কি, আমের জনপ্রিয় জাতগুলোর নামকরণ করা হয় কিভাবে? আসুন জেনেনি-

ফজলি: ১৮০০ সালে মালদহ জেলার কালেক্টর রাজভেনশ এই আমের নামকরণ করেন ‘ফজলি’। কথিত আছে, ফজলি বিবি নামক এক বৃদ্ধ বাস করতেন স্বাধীন সুলতানদের ধ্বংসপ্রাপ্ত গৌড়ের একটি প্রাচীন কুঠিতে। তার বাড়ির উঠানেই ছিল একটি আমগাছ। ফজলি বিবি এই গাছটির খুব যত্ন নিতেন। এলাকার ফকির বা সন্ন্যাসীরা সেই আমের ভাগ পেতেন। কালেক্টর রাজভেনশ একবার ফজলি বিবির কুঠিরের কাছে শিবির স্থাপন করেন। কালেক্টরের আগমনের খবর পেয়ে ফজলি বিবি সেই আম নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। রাজভেনশ সেই আম খেয়ে খুবই তৃপ্ত হন। জানতে চান আমের নাম। কিন্তু ইংরেজি না বুঝে শুধু ‘নেম’ শুনেই নিজের নাম বলে দেন ফজলি বিবি। সেই থেকেই এই আমের নাম হয় ‘ফজলি’।

ল্যাংড়া: মুঘল আমলে এই জাতের আম চাষ শুরু হয়। কিন্তু তখন কেউ এর নাম নিয়ে মাথা ঘামায়নি। পরে আঠারো শতকে এক ফকির সুস্বাদু এই আমের চাষ শুরু করেন। সেই ফকিরের পায়ে সমস্যা ছিল। সেই থেকেই এই আমের নাম হয়ে যায় ‘ল্যাংড়া’।

লক্ষ্মণভোগ ও গোপালভোগ: চণ্ডীপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মণ একটি আম গাছ রোপণ করেন। স্বাদে-গন্ধে সেই আম ছিল তুলনারহিত। লক্ষ্মণ চাষির নাম থেকেই লক্ষ্মণভোগ আমের উৎপত্তি। ইংরেজবাজারে নরহাট্টার গোপাল চাষির নামে আবার নাম হয় গোপালভোগের।

গোলাপখাস: এ আম বিখ্যাত তার গন্ধের জন্য। মিষ্টি গোলাপের গন্ধ বহন করে বলে এই আমকে এই নামে ডাকার চল শুরু হয়ে যায়। প্রাচীন বাংলার আমগুলির মধ্যে গোলাপখাস অন্যতম। এই আমের গায়ে গোলাপের রঙের লালচে আভা থাকে।

গুটি ও আশ্বিনা: চেহারায় ছোট এক প্রকারের আম খেয়ে সেই আঁটি নিজের বাগানে পুঁতেছিলেন মালদহের এক দরিদ্র কৃষক। সেই আঁটি থেকেই জন্ম নিয়েছিল আরেক আমগাছ। কাঁচা অবস্থায় টক। কিন্তু পাকলে খুব মিষ্টি। আঁটি বা গুটি থেকে গাছটি জন্মায় বলে আমের নামও হয়ে যায় ‘গুটি’। এদিকে এ আম আশ্বিন মাসে পাকে বলে অনেকে একে ‘আশ্বিনা’ হিসেবে চেনে।


সর্বশেষ সংবাদ