টেস্ট পরীক্ষায় চারের অধিক বিষয়ে অকৃতকার্য, এইচএসসিতে সুযোগ না পেলে আত্মহত্যার হুমকি

ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রি কলেজে, বাউফল
ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রি কলেজে, বাউফল  © সংগৃহীত

পটুয়াখালীর বাউফলে ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রি কলেজের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এইচএসসি বাছাই (টেস্ট) পরীক্ষায় ১৯ শিক্ষার্থী চার বা তার অধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন। শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে, এই  সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন ৫-৬ জন শিক্ষার্থী।  

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অহিদুজ্জামান সুপন। 

আত্মহত্যার হুমকি দেওয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সরকার পতনের পরে নানা জটিলতায় শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটার কারণে তারা টেস্ট পরীক্ষার আগে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারেনি। তবে নিশ্চিত ভাবে এইচএসসিতে ভালো ফলাফল করবেন বলে আশাবাদী তারা। শিক্ষাজীবন থেকে এক বছর হারিয়ে গেলে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই তাদের। 

তারা আরও জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ অকৃতকার্য অন্য শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিলেও, তাদের অনুমতি  দিচ্ছেন না। 

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অহিদুজ্জামান সুপন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, গভর্নিং বডি, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সম্মতিতে চার বা তার অধিক বিষয়ে পাশ করতে না পারা শিক্ষার্থীদের এইচএসসি পরীক্ষায়  অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান উন্নয়ন, পরীক্ষায় পাশের হার বাড়ানো, প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার জন্যই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ১৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫-৬ জন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে তারা নানা চেষ্টা করছেন এবং বিভিন্ন তদবির করিয়েছেন। ব্যর্থ হয়ে এখন আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছেন। আমার বাসায় গিয়েও আমার বৃদ্ধ বাবা-মা এর কাছে গিয়ে তারা বিভিন্ন হুমকি দিয়ে এসেছেন। এছাড়া কলেজে এসেও সকলের সামনে তারা আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়ে গেছেন। আমরা তাদের অভিভাবকদের সাথেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। অভিভাবকদের মধ্যেও একজন মেয়ের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ চেয়ে হুমকি দিচ্ছেন।      

অন্য অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই শিক্ষার্থীরা বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন। টেস্ট পরীক্ষায় এক বা দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিলেন এমন শিক্ষার্থীদের পুনরায় পরীক্ষা নিয়ে পাস করা সাপেক্ষে তাদের ফরম পূরণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ছয় বিষয়ের মধ্যে চার বা তার অধিক বিষয়ে যারা অকৃতকার্য হয়েছেন তাদের আমরা এইচএসসি পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিতে পারি না। তাছাড়া, ফরম পূরণের সময় ১৭ মার্চ শেষ হয়ে গেছে, তাই আর কোনো সুযোগ নেই।

কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, টেস্ট পরীক্ষায় চার পেপারে ফেল করেও বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষকে আত্মহত্যার হুমকি দেওয়া অযৌক্তিক। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ভালো করে পড়াশুনা করে আগামী বছর বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। আমাদের শিক্ষকেরা  সবসময়ই শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সহযোগিতার মানসিকতা পোষণ করে।  

তিনি আরও বলেন, যদি পিছন থেকে কেউ এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এরকম হুমকি দেয়ার ইন্ধন দিয়ে থাকেন, তারা আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী হিসেবে বিবেচিত হবেন।


সর্বশেষ সংবাদ