খুশকি প্রতিরোধের উপায়

সবাই জীবনের কোনো না-কোনো এক সময় খুশকিতে আক্রান্ত হন
সবাই জীবনের কোনো না-কোনো এক সময় খুশকিতে আক্রান্ত হন  © প্রতীকী ছবি

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অন্যতম সমস্যা হচ্ছে খুশকি। তাই আমাদেরকে খুশকি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে হবে। খুশকি হচ্ছে এক ধরনের চর্মরোগ, যা সাধারণত মাথার খুলির ত্বকে হয়। খুশকি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। খুশকির ফলে চর্মরেণু মাথার ত্বক থেকে আঁশের মত উঠে উঠে আসে এবং ঝরে পড়ে। নারী-পুরুষ এ সমস্যায় সমানভাবে ভোগে থাকেন। অনেকেই এই রোগকে হালকাভাবে নেন। এমনকি এটি যে একটি রোগ  এবং এর যথাযথ চিকিৎসা প্রয়োজন,এটাও জানে না অনেকেই।

প্রত্যেকেই জীবনের কোনো না-কোনো এক সময় খুশকিতে আক্রান্ত হন। কিন্তু অনেকেই জানে না যে খুশকির প্রভাবে মাথায় প্রচণ্ড চুলকানি হতে পারে। চুলও নিয়মিত পড়তে পারে। তবে সঠিক চিকিৎসায় অনেক ভালো ফল পাওয়া যায় এমনকি খুশকি দূর করা সম্ভব হয়।

খুশকি হওয়ার কয়েকটি কারণ
>বিশেষজ্ঞদের মতে, খুশকি হওয়ার মূল কারণ হল ফাঙ্গাল ইনফেকশন এবং কয়েকজন মিলে একই চিরুনি ব্যবহার করার মাধ্যমে এটি ছড়াতে পারে। এছাড়াও, চুল না ধোওয়া হলে এবং মাথার ত্বকে ঘাম জমে থাকলে, ফাংগাল ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। ঘাম জমে এবং ধুলো-ময়লা জমে খুশকি হয়।

আরও পড়ুন: এই গরমেও আরামে থাকার উপায়

>যদি চুলে ময়লা জমে থাকে এবং তা যদি ঠিকভাবে পরিষ্কার না করা হয়, তাহলে খুশকি হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটাই বেড়ে যায়।

>মাথার ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত অথবা শুষ্ক হলে খুশকির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তৈলাক্ত ত্বকে ধুলোবালি বেশি জমে। ত্বকের মৃত কোষগুলির অত্যধিক বৃদ্ধি হলে খুশকি হয়।

>যারা দৈনন্দিন সঠিকভাবে চুল আঁচড়ায় না, চুলে ঠিকমতো শ্যাম্পু করেন না তাদের ক্ষেত্রে খুশকি সমস্যাটা বেশি দেখা যায়। এছাড়া শ্যাম্পু করার পর চুল ভাল করে না ধুলে বা মাথার তালুতে কন্ডিশনার লাগিয়ে ফেললে এবং ঠিকভাবে না পরিষ্কার করলে, খুশকির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

খুশকি প্রতিরোধের উপায়
ডাক্তারের সঠিক পরামর্শ মেনে চললে সহজেই খুশকি দূর করা যায়। আবার আমরা অনেকেই জানি না চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরোয়া  উপায়েও খুশকি দূর করা যায়।

>নারিকেল তেল ও লেবু খুশকি দূর করতে খুব ভালো কাজ করে। দুই টেবিল-চামচ নারিকেল তেল ও সমপরিমাণ লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মাথার ত্বকে মালিশ করতে হবে। এর পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে নিতে হবে। তবে মাথার ত্বক যাদের সংবেদনশীল তাদের লেবু ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: তুলসী পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা

>গ্রিন টি ব্যাক্টেরিয়া-রোধী উপাদান সমৃদ্ধ এবং এটা মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। এক কাপ গরম পানিতে দুটা টি ব্যাগ ২০ মিনিট ধরে ডুবিয়ে রেখে। ঠাণ্ডা হয়ে আসলে তা মাথার ত্বকে ব্যবহার করে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এর পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে তা চুল ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে খুশকি রোধ করা যায়।

>খুশকির সমস্যা দূর করতে জলপাই তেল বা অলিভ অয়েলের ব্যবহার নানা দেশে খুবই জনপ্রিয়। নিয়মিত জলপাই তেল ব্যবহারে খুশকি কমে। কারণ জলপাই তেল প্রাকৃতিকভাবেই ভালো ময়েশ্চারাইজার এবং ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে বা ত্বকের আর্দ্রতা ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে।

>প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসেবে লবণ খুশকি দূর করতে দারুণ কাজ করে। হালকা করে লবণ ব্যবহার করে তারপর শ্যাম্পু করলে শ্যাম্পুর পুরো সুবিধা আপনি কাজে লাগাতে পারবেন। এ ছাড়া চুলকাতে থাকা খুশকি ভরা মাথায় লবণ-চিকিৎসা দারুণ প্রশান্তিও দেয় বটে।

আরও পড়ুন: রোগ-বালাই রুখবে যেসব খাবার

>চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খুশকি নিরোধক শ্যাম্পু ব্যবহার করে খুশকি প্রতিরোধ করা যায়।

>চুল আচঁড়াতে সবসময় চিরুনি ব্যবহার করতে হবে। ‘ব্রাশের’ ব্যবহার করা যাবে না।

>মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে সপ্তাহে দু’বার শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত।

>চিকিৎসকদের মতে, খুশকি প্রতিরোধে কিটোকোনাজল শ্যাম্পু খুবই উপকারি। চুল ধুয়ে তাতে কিটোকোনাজল শ্যাম্পু লাগিয়ে ২-৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে দুবার করে দুই-চারবার ব্যবহারে খুশকি কমে যাবে। যাদের নিয়মিত খুশকি হয়, তাঁরা এক বা দুই সপ্তাহ পরপর খুশকি প্রতিরোধক হিসেবে এই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন, এতে তারা দীর্ঘদিন খুশকিমুক্ত থাকতে পারবেন।


সর্বশেষ সংবাদ