শরীরে পানির ঘাটতি বুঝবেন যেভাবে

পানি শূন্যতা
পানি শূন্যতা  © সংগৃহীত

আমাদের শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ পানি। শরীরের প্রতিটি কোষ, অঙ্গ ও টিস্যু পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি ছাড়া একজন মানুষ হয়তো কয়েকদিনই বেঁচে থাকতে পারে। পানি ত্বক ভালো রাখে, হজমে সাহায্য করে, শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখে। শরীরে পানি শূন্যতা তৈরী হলে দেখা দিতে পারে নানান সমস্যা। দীর্ঘদিন এই সমস্যায় ভুগলে হতে পারে মৃত্যুও।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের তথ্য অনুসারে প্রতি ২০ কেজি ওজনের জন্য দৈনিক এক লিটার পানি পান করতে হবে। অর্থাৎ, কারও ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, তবে তাকে দৈনিক তিন লিটার পানি পান করতে হবে। যারা দিনে প্রচুর পরিশ্রম করেন কিংবা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তাদের ক্ষেত্রে পানি পানের মাত্রা আরেকটু বাড়াতে হবে। পর্যাপ্ত পানি ‍পান করা না হলে শরীরে নানান রকম প্রভাব পড়ে।

বিভিন্ন কারণে শরীরে পানি শূন্যতা তৈরী হতে পারে। পানিশূন্যতার লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায় জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট এনএইচএস।

আরও পড়ুন- মেধাতালিকা প্রকাশের সময় নিয়ে যা জানা গেল 

পানি শূন্যতার লক্ষণ

শরীরে পানির ঘাটতি হলে মাথাব্যথা হতে পারে। পানিশূন্যতা হলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন ও রক্ত প্রবাহ কমে যায়। আর এ থেকে মাথাব্যথা হয়। পানিশূন্যতা স্মৃতি, মেজাজ ধরে রাখা ও সীদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলে। পানিশূন্যতা হলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। মল ভালোভাবে হতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে পানি। পানিশূন্যতা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য, বুক জ্বালাপোড়া ও হজমের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। প্রস্রাব ঠিকঠাকমতো হওয়া মানে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি রয়েছে। প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ এবং তাতে তীব্র দুর্গন্ধ থাকলে বুঝতে হবে শরীরে পানির ঘাটতি রয়েছে। পানিশূন্যতা দেখা দিলে শরীরে অবসন্নভাব চলে আসে। পানির অভাবে শরীর ঠিকমতো কাজ করতে পারে না বলেই এটা হয়।

পানি শূন্যতা প্রভাব

পর্যাপ্ত পানি ‍পান করা না হলে শরীরে নানান রকম প্রভাব পড়ে। পানি শূন্যতার কারণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। শরীরে পানির অভাব থাকলে লালারস তৈরি হয় কম, ফলে মুখে দুর্গন্ধও হয় বেশি। মানবদেহে থাকা বিভিন্ন ধরনের তরলকে বিভিন্ন অঙ্গে পৌঁছে দিতে পানির প্রয়োজন। পানির অভাব দেখা দিলে এই কাজ হয় রক্তের মাধ্যমে। ফলে পেশিতে রক্ত দেরিতে পৌঁছায়, তখন পেশিতে ব্যথা হয়। অন্ত্রে জমে থাকা মলকে বাইরে ঠেলে বের করার জন্য পর্যাপ্ত পানি না থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে বাধ্য। পানির অভাবে রক্ত ঘন হয়ে যায়, ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন পৌঁছাতে হৃদযন্ত্রের বেশি পরিশ্রম করতে হয়। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে প্রসাব কম হবে, আর প্রসাব কম হলে তাতে থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদানে একত্রিত হয়ে বৃক্কে পাথর তৈরি করবে।

আরও পড়ুন- সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে দোটানায় আয়োজক কমিটি

প্রতিরোধ

দিনে অন্তত দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করুন। সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে পানি পান করে নিন। এটি অনেক সমস্যা কমাতে কাজ করবে। সব সময় ব্যাগে পানির বোতল রাখুন। খাদ্যতালিকায় রাখুন পানি জাতীয় সবজি ও ফল। যেমন : তরমুজ, শসা, টম্যাটো, বাঁধাকপি ইত্যাদি।
তবে কিডনি রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পানি পান করবেন।


সর্বশেষ সংবাদ