হিটস্ট্রোকের লক্ষণ-প্রাথমিক চিকিৎসা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

তীব্র দাবদাহে নাকাল অবস্থা সবার। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। এমন গরমে হিটস্ট্রোক হয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে লোকজন। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই ঝুঁকি বেশি থাকে।

হিট স্ট্রোক

আইসিডিডিআর’বি হাসপাতালের চিকিৎসক ড. আলিয়া নাহীদ জানান, বাইরে তাপমাত্রা যাই হোক না কেন আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা প্রায় স্থির রাখতে সক্ষম। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করা বন্ধ করে দিলে তখন তাকে হিট স্ট্রোক বলা হয়। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ

১. শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যাওয়া

২. চোখে ঝাপসা দেখা

৩. মাথা ঘোরা ও তীব্র মাথা ব্যথা।

৪. ঘাম কমে যাওয়া

৫. ত্বক গরম ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া

৬. শারীরিক দুর্বলতা ও পেশিতে টান অনুভব করা 

৭. প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়।

৮. হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া

৯. শ্বাস কষ্ট

১০. খিঁচুনি

১১. মানসিক বিভ্রম

১২. গরমে অচেতন হয়ে যাওয়া
১৩. বমি হওয়া

হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসায় যা করবেন

কারো হিটস্ট্রোক হলে বা অচেতন হয়ে গেলে রোগীকে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে, ঘরে চিকিৎসা করার কোনো সুযোগ নেই। তার সাথে সাথে যে কাজগুলো করবেন:

১. হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নিয়ে যেতে হবে। রোগীর শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় কাপড় খুলে ফেলতে হবে।

২. রোগীর শরীরে বাতাস করতে হবে। কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে গা মুছে দিতে হবে। সম্ভব হলে গোসল করতে হবে।

৩. প্রচুর পানি ও খাবার স্যালাইন পান করাতে। চা বা কফি পান করা যাবে না।

হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে যে কাজগুলো করতে পারেন

১. ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের পোশাক পরুন

২. শরীরে পানিশূন্যতা এড়াতে অতিরিক্ত পানি পান করতে হবে

৩. বাড়ির বাইরে থাকার সময় সরাসরি রোদ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন

৪. স্যালাইন পানিতে থাকা সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও চিনি শরীর সজীব রাখতে বিশেষভাবে কার্যকর। দীর্ঘ সময় গরমে থাকলে স্যালাইন পান করুন।

৫. গ্রীষ্মকালীন ফল দিয়ে তৈরি তাজা জুস পান করতে পারেন।

৬. মাংস এড়িয়ে বেশি করে ফল ও সবজি খান।

৭. প্রস্রাবের রঙ খেয়াল করুন। প্রস্রাবের গাঢ় রঙ পানি স্বল্পতার লক্ষণ। এমন হলে বেশি বেশি পানি পান করুন।

৮. সব সময় পানির বোতল, টুপি, ছাতার মতো জিনিসপত্র সাথে রাখুন।

৯. ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করতে, কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন অথবা সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

১০. চেষ্টা করুন যেন দিনে কম বাইরে যেতে হয়।

পানি পান করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন। আমরা অনেকেই রাস্তার পাশে অস্বাস্থ্যকর পানি দিয়ে বানানো শরবত পান করে থাকি। এর থেকে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। ডায়রিয়ার জীবাণু ছড়ানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হচ্ছে পানি। তাই যে পানিই আপনি পান করবেন, তা যেন বিশুদ্ধ পানি হয়।

 

সর্বশেষ সংবাদ