ফেনীর ৯ কলেজকে শিক্ষা বোর্ডের চিঠি, ভর্তি না নেয়ার নির্দেশ

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড  © টিডিসি ফটো

ফেনীতে নানা জালজালিয়াতির মাধ্যমে পাঠদানের অনুমতি নিয়ে শর্ত ভঙ্গকারী কলেজের বিরুদ্ধে এ্যাকশনে যাচ্ছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। ইতোমধ্যে ৯ টি কলেজকে পাঠদানের সময় বেধে দেয়া শর্তগুলো জরুরী ভিত্তিতে পূরণের নির্দেশনা দিয়ে পত্রজারী করা হয়েছে। শর্তপূরণে ব্যর্থ হলে আগামী বছর থেকে ভর্তি কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞাসহ প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনাও আসতে পারে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মানহীন ও নাম সর্বস্ব কলেজগুলোর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে শীঘ্রই অভিযানের হুশিয়ারী দিয়েছেন ফেনী জেলা প্রশাসক। এমন খবরে কিছুটা অস্বস্থিতে রয়েছে শর্ত ভঙ্গকারী কলেজ কর্তৃপক্ষ। এমতাবস্থায় প্রাইভেট ও বেসরকারী কলেজের চলমান ভর্তিকার্যক্রমে খোঁজ-খবর নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যথায় মাঝপথে কলেজ বন্ধ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।

আরও পড়ুন: সাত কলেজের শূন্য আসন পূরণের দাবি অপেক্ষমাণদের

শিক্ষা বোর্ড জানায়, ফেনীতে দীর্ঘদিন কলেজ কার্যক্রম পরিচালনার পরও নিজস্ব ভবনে যেতে না পারায় ইতোমধ্যেই ৯টি কলেজকে বিশেষ তাগাদা দিয়ে পত্র জারী করা হয়েছে। তাগাদাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, ফেনী সিটি কলেজ, ভিক্টোরিয়া কলেজ, মডেল কলেজ, নোবেল কলেজ, মহিলা কলেজ, গ্রীনল্যান্ড কলেজ, এশিয়ান কলেজ, ভাষা শহীদ সালাম মেমোরিয়াল কলেজ ও ছাগলনাইয়া মহিলা কলেজ।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড জানায়, যে কোন কলেজ পাঠদানের অনুমোদনের আবেদনের সময়ে কলেজের সর্বনিম্ন ৭৫ শতাংশ ভূমি, সরকারী কাঠামো অনুযায়ী নির্ধারিত একাউন্টে টাকা ও নির্ধারিত জনবল থাকা, নির্ধারিত কলেজ থেকে দূরত্বে থাকা, নিজস্ব খেলার মাঠ ও ২ হাজার বই সংবলিত লাইব্রেরী রয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন জমা দিয়ে থাকে। এসব যাছাই-বাছাই করে জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শন প্রতিবেদন দেখে কলেজকে পাঠদানের অনুমতি দেয়া হয়ে থাকে। প্রাথমিক ভাবে নিজস্ব ভূমিতে ভবন থাকার শর্ত পূরণ না হলে তার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তুু বিগত কয়েক বছর জুড়ে ফেনীতে চালু হওয়া কলেজগুলো অসাধু প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ভূয়া প্রতিবেদন জমা দিয়ে বোর্ডের সাথে প্রতারণা করে পাঠদানের অনুমতি নিয়ে শিক্ষার নামে ব্যবসায় নেমেছে।

করোনাকালীন সময় থেকে এযাবতকালে প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ড নিশ্চুপ ভূমিকায় থাকলেও চলতি ভর্তি মৌসূমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের পদক্ষেপের দিকেই হাটছে।

সরে জমিনে পরিদর্শন ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের একটি পরিত্যাক্ত বাড়ি ভাড়া নিয়ে ২০১০ সালে কার্যক্রম শুরু করে ফেনী সিটি কলেজ। বারবার প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ড থেকে নিজস্ব ভবনে কলেজটি স্থানান্তরের নির্দেশনা দিয়ে পত্র জারি করা হলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এখনো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতেই চলছে শ্রেনী কার্যক্রম। মাঝে মধ্যে প্রশাসন এ বিষয়ে তৎপরতা দেখালে চোখ ভোলানো কিছু সংস্কার করেই পার পেয়ে যাচ্ছেন ওই কলেজের কর্তৃপক্ষ।

একইভাবে ফেনী এফ রহমান এসি মার্কেটের বিপরীতে আড্ডা বাড়ির প্রবেশ মূখে একটি ভাড়া বাড়িতে শ্রেনী কার্যক্রম শুরু করে এশিয়ান কলেজ। বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির অজুুহাত দেখিয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে দাউদপুর ব্রীজ সংলগ্ন কাজী সেন্টারের কয়েকটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে চলতি মৌসূমে ছাত্র ভর্তি নিচ্ছে কলেজটি।

এদিকে একই কারণ দেখিয়ে শহরের জিয়া মহিলা কলেজের বিপরীত পাশ থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে মিজান পাড়াস্থ একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে গ্রীনল্যান্ড কলেজে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে নীতিমালা আসছে, চলতি সপ্তাহেই বৈঠক

শুধু তাই নয় শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়ে ফেনী মহিলা কলেজ ও ফেনী নোবেল কলেজ ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। তবে পূর্বের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন তারা।

ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান জানান, অনুমতিহীন ও অনিবন্ধিত কলেজ গুলোর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ চলছে। তা যাছাই বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও নাম সর্বস্ব কলেজগুলোতে শিঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এদিকে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, প্রাথমিক অনুমতিপ্রাপ্ত সকল কলেজই অনুমোদনের সময় নিজস্ব জমি দেখিয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে নিজস্ব ভূমিতে ভবন নির্মাণ করে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর শর্তে এসব প্রতিষ্ঠান অনুমোদন পেয়েছে। তবে করোনাকালীন সময়ে কলেজগুলো আর্থিক ব্যয় গুছাতে না পেরে অনেকেই নিজস্ব ভবনে যেতে পারেনি। যাছাই বাছাই করে বোর্ড থেকে আমরা ৯টি কলেজকে এবিষয়ে তাগাদা দিয়েছি। কয়েকটি কলেজকে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি। ক্রমান্বয়ে সবগুলো প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence