হাবিপ্রবিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ঈদ উদযাপন
- হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ মে ২০২২, ০৫:২৪ PM , আপডেট: ০৩ মে ২০২২, ০৫:২৪ PM
করোনার কারণে গত দুই বছর ঈদ উদযাপনে কিছুটা ভাটা পরলেও এবারে বৃহৎ পরিসরে ঈদ উদযাপন করছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা। একই সাথে দেশ-বিদেশের সকল মুসলিম ভাই-বোনদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থীদের ঈদ উদযাপনের অনুভূতি অনুবাদ করে তুলে ধরেছেন মো. মিরাজুল আল মিশকাত।
দেশের বাইরে ঈদ উদযাপন করতে কেমন লাগে এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল্লাহ্ আলী ইবরাহিম ( সোমালিয়া ) বলেন, পরিবার থেকে হাজার কিলোমিটার দূরে ঈদ উদযাপন করা সত্যিই অনেক কষ্টের। তবে কষ্টটি অনেকাংশে কমে যায় এখানকার সহপাঠীদের জন্য। আমরা ঈদের সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বন্ধুদের সাথে মজা করি। ঈদের দিনে মসজিদে গিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করি। এখানকার আবহাওয়া চমৎকার তাই ঘোরাঘুরি অনেক বেশি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাঙালী বন্ধুদের বাড়িতে অনেক দাওয়াত পেয়েছি। এটি আমার জীবনের স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এমন ঈদ উদযাপন করার সুযোগ দেওয়ায় মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি ।
আনন্দের কমতি ছিল না উল্লেখ করে লিবান আলী মহামুদ ( সোমালিয়া ) বলেন, আলহামদুলিল্লাহ! ঈদ আনন্দ করার দিন। বিভিন্ন দেশের বন্ধুরা এবং বাঙালিরা অনেক বেশি আন্তরিক বলেই পরিবার ছেড়ে দূরে থাকলেও ঈদের আনন্দের কোনো কমতি ছিলো না । সুস্বাদু খাবার খেতে খেতেই দিনটা পার হয়ে যায়। আমরা বিদেশিরা নিজেরা নিজেদের ছোটবেলার ইদের গল্প একে অপরের সাথে শেয়ার করি ৷ এছাড়া আমার দেশীয় বন্ধুদের সাথে আমার ঈদ উদযাপনের গল্প শেয়ার করেছি। মোটকথায় আমাদের আনন্দের কোনো কমতি নেই ছিলোনা।
ঘোরাঘুরির ব্যাপারে জানতে চাইলে মো. শফিউল্লাহ্ ( ভারত ) বলেন, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় দুই বছর বন্ধ ছিলো। এতে বিগত ঈদে তেমন ঘোরাঘুরি করা সম্ভব হয়নি। তবে ক্যাম্পাসের বন্ধুদের সাথে একসাথে ঈদ উদযাপন করেছি বেশ। বাংলাদেশের মানুষদের মন অনেক সুন্দর। তারা মিশতে জানে। নামাজের পর বাঙালিসহ সকল বিদেশি বন্ধুদের সাথে একসাথে ঘুরেছি। সুন্দর মুহূর্তগুলোকে স্মরণীয় করে রাখতে ছবি তুলেছি। দিনাজপুরের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে গোরে-এ-শহীদ বড় ময়দান, সুখ সাগর, রামসাগর সহ বিভিন্ন স্থান ইতিমধ্যে ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছে ।
আরও পড়ুন: সড়কে ঝড়ে গেল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর প্রাণ
ডায়েরির পাতায় লিখে নিয়েছি বাংলাদেশের ঈদ উদযাপন উল্লেখ করে আবু বকর সাইদু (নাইজেরিয়া) বলেন, উচ্চশিক্ষার জন্যই হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি হয়ে হাবিপ্রবিতে এসেছি। পরিবারের বাইরেও আরেকটি পরিবার হয়ে উঠেছে যার নাম হাবিপ্রবি । বাঙালিসহ সকল বিদেশি বন্ধুরা একসাথে ঘুরেছি, আনন্দ করেছি। আমার ডায়েরির অনেকগুলো পাতায় লিখে নিয়েছি এ দেশের ঈদ উদযাপনের নানা ঘটনা । এই ঈদ আমার জীবনে স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে। বাঙ্গালীর কৃষ্টি কালচার আমার মনে স্থান করে নিয়েছে। এখানে ঈদে সালামি দেয়া হয় বিষয়টি দেখে অনেক ভালো লেগেছে। এছাড়া বাঙ্গালিদের রান্নার কোনো তুলনা হয় না। এদেশে লেখাপড়া করতে না আসলে হয়তো উক্ত বিষয় গুলো সম্পর্কে জানাই হতো না।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি ) তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। গতবছর হাবিপ্রবিতে প্রায় ১৩৮ জন বিদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত ছিলেন।