বশেমুরবিপ্রবিতে ৭ মার্চের ভাষণের উপর সেমিনার

সেমিনারে অতিথিবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা
সেমিনারে অতিথিবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষন উপলক্ষে ‘‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ: ‘ডি ফ্যাক্টো’ স্বাধীনতা প্রসঙ্গ’’ এর উপর বিশেষ সেমিনার ও প্রদর্শনী বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার আইন অনুষদের উদ্যোগে এবং ল ডিবেটিং ক্লাবের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ৫০১ নং কক্ষে সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং আইন অনুষদের ডিন ড. মো. রাজিউর রহমান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কিউ এম মাহবুব। প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর ড. মো শাহজাহান মন্ডল। বিশেষ আলোচক হিসেবে ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালযয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বশেমুরবিপ্রবি আইন বিভাগের সভাপতি মানসুরা খানম। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তাগণের বক্তব্যের পর ৭ই মার্চের ভাষণের উপর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সম্মাননা পুরুষ্কার প্রদান করা হয়।

আরও পড়ুন: নারী দিবসে বশেমুরবিপ্রবিতে বিতর্ক, নাটক পরিবেশন

প্রবন্ধ উপস্থাপক প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান মন্ডল বলেন, বঙ্গবন্ধু এ ভাষণে একবারের জন্যও পূর্ব-পাকিস্তান বলেননি তিনি এদেশকে বাংলাদেশ নামে উল্লেখ করেছেন। রাষ্ট্র গঠনের পাঁচটি উপাদানের সবগুলোই ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে অন্তর্ভুক্ত তাই তখন থেকেই বাংলাদেশ ছিলো ডি ফ্যাক্টো অর্থাৎ কার্যত স্বাধীনরাষ্ট্র। বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণকে ৩০ অক্টোবর ২০১৭ সালে ইউনেস্কো ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ইউনেস্কো কর্তৃক এখন পর্যন্ত স্বীকৃত ৪৭৭ টি বিশ্ব ঐতিহ্যের মধ্যে এটিই একমাত্র ভাষণ। এটি ছিল ইতিহাসের অমর প্রয়োজনীয়তা। বঙ্গবন্ধুর অলিখিতভাবে প্রদত্ত এ ভাষণকে বাংলাদেশের প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে অন্তত একটি কোর্সে ও আন্তর্জাতিক আইনের পাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত করা অতীব জরুরি।

আইন অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের যে ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন হিন্দু, মুসলিম, বাঙালি অবাঙালি যারা আছেন তারা আমাদের ভাই তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের উপর। এই কথাটির সাথে আমাদের সংবিধানের ১২ নং অনুচ্ছেদ অর্থ্যাৎ ধর্ম নিরপেক্ষতার মিল রয়েছে। অর্থনৈতিক মুক্তি ও শোষণ মুক্ত সমাজ এবং কৃষক শ্রমিকের মুক্তির কথা বলেছেন তিনি, যেটি আমাদের সংবিধানের ১৪ নং অনুচ্ছেদে দেখতে পায়। বিল অব রাইটস, ম্যাগনা কর্টা, হিউম্যান রাইটস এ সমস্ত বিষয়গুলোর একটি সমন্বয় ছিলো বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ।

আরও পড়ুন: ৭ মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির শ্রদ্ধা

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কিউ এম মাহবুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি বাংলাদেশের জন্য দরকার ছিল। এই ভাষণ না হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এতো অল্প সময়ের মধ্যে অর্জিত হতো না। এটি বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি জনগণকে স্বাধীনতা যুদ্ধে উচ্ছসিত করে। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে দেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তির কথা বলে গেছেন। তাঁর মধ্যে আদর্শ নেতার গুণাবলী এবং দূরদর্শিতা অত্যন্ত প্রখর ছিলো যেটার কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হয়েছে ।


সর্বশেষ সংবাদ