শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ যাচ্ছে মাউশির অধীনে
- শিহাব উদ্দিন
- প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৪ PM , আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৫ AM

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে প্রায়ই অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিকে কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার জন্য ক্ষেত্র বিশেষে ৮ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ আছে। এ অবস্থায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে সুপারিশের ক্ষমতা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) দেওয়ার প্রস্তাব করবে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)।
এ প্রস্তাব অনুমোদন হলে মাউশির ৯টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করে নিয়োগ সুপারিশ করা হবে বলে জানা গেছে। মাউশি এবং ডিআইএ সূত্র জানায়, বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ বা এনটিআরসিএ। চূড়ান্ত যোগদান হয় ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে।
প্রতিষ্ঠানগুলোতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতা এখনো ম্যানেজিং কমিটির হাতে রয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে কর্মচারী নিয়োগ হওয়ায় ক্ষেত্র বিশেষে ৮ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। এর ফলে একজন কর্মচারী যোগদানের পর থেকেই নান ধরনের অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান।
এতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম অনেকটাই রোধ হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানগুলোতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতা এখনো ম্যানেজিং কমিটির হাতে রয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে কর্মচারী নিয়োগ হওয়ায় ক্ষেত্র বিশেষে ৮ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। এর ফলে একজন কর্মচারী যোগদানের পর থেকেই নান ধরনের অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান।
এটি বন্ধ করতে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ সুপারিশের ক্ষমতা মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোকে দেওয়ার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে ডিআইএ। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগেও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। এটি বন্ধ করতে এ নিয়োগের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষমতা মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোকে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এজন্য আমরা একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করছি। পরবর্তীতে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের কাছে প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহকারী প্রধান, অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষমতা এনটিআরসিএকে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবে বলা হয়, ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান ও সহকারী প্রধান, সুপারিনটেনডেন্ট, সহকারী সুপার নিয়োগের ক্ষেত্রে এনটিআরসিএ থেকে প্রার্থী নির্বাচন ও সুপারিশ সংক্রান্ত প্রস্তাব বিবেচনার জন্য পাঠানো হলো।’
এতে এনটিআরসিএ আইন সংশোধন ও একটি নতুন ধারা ও উপধারা সংযোজন এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধান নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ বিধিমালা প্রণয়নের কথাও বলা হয়েছে। সংসদ কার্যকর না থাকায় প্রস্তাবে অর্ডিন্যান্স জারির কথাও বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন: আরও এক হাজার জাল সনদধারীর তথ্য পেয়েছে ডিআইএ
এ বিষয়ে ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান, ‘সহকারী প্রধান নিয়োগের ক্ষেত্রে এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধান নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এতে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন হয়। প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে এটি বন্ধ হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় প্রভাবশালী কিংবা ম্যানেজিং কমিটির হাতে নিয়োগের ক্ষমতা থাকায় নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে তদবির করেন অনেকে। লেনদেন হয় মোটা অঙ্কের অর্থ। এ বিষয়টি বন্ধ করতে প্রতিষ্ঠান প্রধান থেকে শুরু করে সহকারী প্রধান পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষমতা এনটিআরসিএকে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের বিষয়টি মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করার প্রস্তাব খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে।’