খায়রুনকে লাথি মেরে সেই রাতে বাইরে চলে যান স্বামী মামুন

কলেজছাত্র মামুন হোসেন
কলেজছাত্র মামুন হোসেন  © ফাইল ফটো

নাটোরে বহুল আলোচিত কলেজশিক্ষক খাইরুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী কলেজছাত্র মামুন হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে দাম্পত্য কলহের ব্যাপারে সত্যতা জানা গেছে।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন তাদের দাম্পত্য কলহের কথা স্বীকার করেছেন। মামুন জানান, শনিবার রাত ২টায় স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হলে তিনি খাইরুনকে লাথি মেরে বাইরে চলে যান।

সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মামুনকে জেলা দায়রা জজ আদালতে তোলা হয়।

এ সময় মামুনের জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার স্বপন। তবে এই আবেদন নাকচ করে মামুনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেম উদ্দীন।

তথ্য মতে, মামুন বের হয়ে যাওয়ার পর শিক্ষক খাইরুন নাহার বেশ কয়েকবার ফোন করলেও মামুন ফোন রিসিভ করেননি। এতে ক্ষোভে খাইরুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান মামুন। সেদিন রাত ২টা থেকে ৬টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে মামুনের ঘোরাঘুরির তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

রোববার সকাল ৭টার দিকে শহরের বলারিপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধারের পর মামুনকে আটক করা হয়।

খাইরুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তার দ্বিতীয় স্বামী ২২ বছর বয়সী মামুনের বাড়ি উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে।

আট মাস আগে তারা বিয়ে করলেও সম্প্রতি এই বিয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা হয়।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাত ৩টার দিকে মামুন তাদের ডেকে বলেন, তার স্ত্রী খায়রুন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে ঘরের মেঝেতে শোয়ানো অবস্থায় খায়রুনের মরদেহ দেখতে পান।

আরও পড়ুনঃ চোখের পলকে শেষ এক পরিবার, গাড়ির চালক বাবা-পেছনে নবদম্পতি

এ ঘটনায় সন্দেহ হলে এলাকাবাসী মামুনকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। পরে মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যায়।

সে সময় বাসার কেয়ারটেকার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘রাত দুইটার দিকে মামুন বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর তিনটার দিকে বাসায় ফিরে সবাইকে ডাকাডাকি করে বলেন, তার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে সবাই ঘরে ঢুকে মেঝেতে মরদেহ শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পায়।’

নাটোর মডেল থানা পুলিশ জানায়, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের পর এক ছেলেকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই থাকতেন খায়রুন। ফেসবুকের মেসেঞ্জারে ২০২১ সালের ২৪ জুন মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয় খাইরুন নাহারের। পরিচয়ের ছয় মাস পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজী অফিসে গিয়ে গোপনে তাকে বিয়ে করেন খায়রুন।


সর্বশেষ সংবাদ