যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় নববধূকে পিটিয়ে হত্যা

নিহত ঝুমুর ও তার স্বামী  তৌহিদ
নিহত ঝুমুর ও তার স্বামী তৌহিদ  © সংগৃহীত

ফেনীতে যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় মারজান আক্তার ঝুমুর নামে এক নববধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। শনিবার (১৫ মার্চ) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নববধূর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই নিহত  ঝুমুরের শ্বশুর সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

রবিবার (১৬ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুজ্জামান।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৮ ডিসেম্বর ফেনী সদর উপজেলার দক্ষিণ গোবিন্দপুর এলাকার কামু ভূঞা বাড়ির প্রবাসী ছায়েদুর রহমান তৌহিদের সঙ্গে সোনাগাজীর আলমপুরের ঝুমুরের মোবাইলে বিবাহ হয়। পরে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঝুমুরের স্বামী দেশে আসার পর বড় করে বিয়ের আয়োজন করা হয়। 

সূত্র আরও জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা তিন লাখ টাকা ও পাঁচ ভরি স্বর্ণ যৌতুক দাবি করে আসছিল। ঝুমুরের বাবা একজন নির্মাণ শ্রমিক হওয়ায় এ দাবি পূরণ করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৪ মার্চ স্বামী সাইদুর রহমান, শ্বশুর সাহাব উদ্দিন ও শাশুড়ি বিবি হাজেরা মিলে তাকে (ঝুমুর) মারধর করে গুরুতর আহত করেন। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ১২ দিন আইসিইউতে থাকার পর গতকাল শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়।

নিহত ঝুমুরের মা ফরিদা আক্তার বলেন, খবর পেয়ে মেয়েকে দেখতে আমরা চট্টগ্রাম হাসপাতালে যাই। সেখানে মেয়ের মুখে নির্যাতনের বিস্তারিত জেনে বুধবার (১২ মার্চ) ফেনী মডেল থানায় মেয়ের জামাই তৌহিদ, শ্বশুর সাহাব উদ্দিন ও শাশুড়ি হাজেরাকে আসামি করে আমার স্বামী আবদুল আলিম বাদী হয়ে মামলা করে। শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে আমার মেয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেন, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার হয়ে এক নববধূর মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা করেছেন। মামলার প্রেক্ষিতে নিহতের শ্বশুর সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, নিহতের স্বামী ঘটনার পরপর আবার প্রবাস চলে গিয়েছে বলে  জানতে পেরেছি।


সর্বশেষ সংবাদ