স্কুলের ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সভাপতি-প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে
আগের কেনা জমি পুনরায় তিনগুণ দামে ক্রয় দেখিয়ে স্কুল তহবিল থেকে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সভাপতি ও প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম খন্দকার নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বেলায়েত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি এবং মো. আমিনুল কবীর একই স্কুলের প্রধানশিক্ষক।
গত ৪ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির তিন অভিভাবক সদস্য। অভিযোগের ২৪ দিন পেরিয়ে গেলেও ঘটনা তদন্তে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সালমগীর হোসেন।
জানা যায়, শিক্ষকদের আবাসনের নাম করে আগের কেনা ছয় শতাংশ জমি থেকে তিন দশমিক ৬০ শতাংশ পুনরায় ক্রয় দেখিয়ে নতুন ১০ জন দাতা সদস্যদের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন আত্মসাৎ করেন ওই স্কুলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম খন্দকার ও প্রধানশিক্ষক মো. আমিনুল কবীর। পরে বিষয়টি জানতে পেরে জড়িতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দেন আবুল কালাম, আলতাব হোসেন ও খোকা মিয়া।
তবে স্কুল থেকে খানিক দূরত্বে তিন দশমিক ৬০ শতাংশ জমি স্থানীয় দুই ভাই মতি মিয়া ও ওয়াজ উদ্দিনের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকায় কেনার কথা জানান বেলায়েত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক আমিনুল কবীর।
মতি মিয়া জানান, জমি স্কুলকে দান করেছেন। বিনিময়ে কোনো টাকা গ্রহণ করেননি তিনি। একই মৌজার রাস্তার পাশের জমি প্রতি শতাংশ তিন লাখ টাকায় ছয় মাস আগে কেনার কথা জানান মতি। অথচ স্কুলকে দান করা রাস্তাবিহীন নাল জমি কিভাবে প্রতি শতাংশ সাড়ে পাঁচ লাখ হয়ে গেল তার সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে প্রধানশিক্ষক আমিনুল কবীর বলেন, দলিলে চৌহুদ্দি ভুল ছিল। পরে তা সংশোধন করা হয়ে গেছে। কমিটি ও জমির মালিকের সাথে কথা বলেই দাম নির্ধারণ হয়। ক্রয়কৃত তিন দশমিক ৬০ শতাংশ জমির দখল বুঝে পেয়েছি। বর্তমান বাজারমূল্যের চেয়ে তিনগুণ বেশি দামে জমি ক্রয়ের প্রসঙ্গটি সুকৌশলে এড়িয়ে যান প্রধানশিক্ষক।
ডৌকার চর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাসুদ ফরাজী স্কুলের সভাপতি ও প্রধানশিক্ষকের পক্ষ নিয়ে বলেন, স্কুলের প্রয়োজনে ক্রয় করা জমির মূল্য নিয়ে যারা অভিযোগ দিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানের মঙ্গল তারা চায় না।
একই জমি আবারও ক্রয় দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিচার দাবি করেন ডৌকারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান কাঞ্চন।
অভিযোগকারী আবুল কালাম বলেন, তিনিসহ চারজন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রেজুলেশন বইয়ে স্বাক্ষর করেননি। জমি ক্রয়ের নামে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সরেজমিনে তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান রায়পুরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষ কর্মকর্তা সালমগীর হোসেন।