ঈদযাত্রায় সদরঘাটে জনস্রোত: নির্বিঘ্ন নৌপথে ঘরমুখো মানুষের ঢল

  © সংগৃহীত

ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছাড়ছে লাখো মানুষ। প্রতিবছরের মতো এবারও শেকড়ের টানে প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ছুটছেন নগরবাসী। ঈদযাত্রার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল প্রাণ ফিরে পেয়েছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়ে।  

শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সরেজমিনে দেখা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। বিভিন্ন জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি লঞ্চ কানায় কানায় পূর্ণ। কেবিনের টিকিট অগ্রিম কেটে রাখলেও অনেকেই নিরুপায় হয়ে ডেকে জায়গা নিয়েছেন। ভোলার ইলিশা রুটসহ বরিশাল, পটুয়াখালী, হাতিয়া, চাঁদপুরগামী লঞ্চগুলোতে ছিল তীব্র ভিড়।  

প্রতিবছরই ঈদের সময় সদরঘাটে টিকিটের জন্য যাত্রীদের হাহাকার দেখা যেত। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর সড়কপথের উন্নতির ফলে এবার তেমন সংকট নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। লঞ্চ মালিকরা জানান, আগের তুলনায় চাপ কিছুটা কমলেও ঈদের সময় যাত্রীদের সেবায় তারা প্রস্তুত।  

নৌপথে নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনীও সক্রিয়। আনসার, নৌ-পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনী সদরঘাট এলাকায় কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ মোবারক হোসেন জানান, "যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা বিশেষ লঞ্চ পরিচালনা করছি, যাতে সবাই নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারেন।"  

যাত্রীদের অভিজ্ঞতাও এবার স্বস্তিদায়ক। সদরঘাটে আসতে কিছুটা যানজটে পড়লেও, টিকিট ও যাত্রার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানান যাত্রীরা। অভিযানের এক যাত্রী সামাদ হোসেন বলেন, "জ্যাম ঠেলে সদরঘাট আসতে কষ্ট হয়েছে, তবে কেবিন পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছি।"  

নৌশ্রমিকরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। দীর্ঘদিন অলস সময় কাটানোর পর ঈদের ভিড় সামলাতে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। শ্রমিক কবির হোসেন জানান, "১৫ বছর ধরে লঞ্চে কাজ করছি, তবে গত কয়েক বছর যাত্রী কমে গিয়েছিল। এবার ঈদের কারণে কিছুটা চাপ বেড়েছে।"  

লঞ্চ মালিক সমিতির সদস্য সচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, "সারাবছর লঞ্চ চালানো কঠিন হলেও ঈদের দুই-তিনদিন ভালো যাত্রী পাওয়া যায়। তবে এবার সড়কপথ উন্নত হওয়ায় চাপ কিছুটা কমেছে।"  

যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে এবার অনেকটাই নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা উপভোগ করছেন মানুষ। ঈদের দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে সদরঘাটে যাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ