ঠাকুরগাঁওয়ে রাতের আঁধারে ড্রেন নির্মাণ, স্থানীয়দের ক্ষোভ
- ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৬ PM , আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৬ PM

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঠাকুরগাঁও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৫ কোটি টাকার কাজ শেষ করতে অনেকটা তড়িঘড়ি করে রাতের আঁধারেই ড্রেন নির্মাণে ঢালাইকাজ চলিয়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
রাতের আঁধারে লাগাতার কাজ চলমান রাখায় গত ১৫ মার্চ রাতে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের টিকাপাড়া এলাকায় মেসার্স নন্দন প্রেস নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর শফিউল ইসলাম আবারও শ্রমিকদের নিয়জিত করে ঢালাইকাজ করতে গেলে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাতে বন্ধ করেননি কাজ তিনি। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে ছবি তুলতে গেলে নানা অনিয়ম চোখে পড়ে। দেখা গেছে, শ্রমিকরা মাটিযুক্ত ও অপরিচ্ছন্ন বালু দিয়ে সিমেন্ট ও পাথরের মিশ্রণে ঢালাই কাজ করছেন। অন্যদিকে রাতের আঁধারে তড়িঘড়ি করে শেষ করার কারণে কাজের মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।
তবে এভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ চলমান রাখলেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: মাত্র দুজন কর্মকর্তা দিয়ে চলছে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্রুত কাজটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে কী কারণে, তা অজানা। আর দ্রুত কাজ শেষ করতে গিয়ে নানা অনিয়ম করা হচ্ছে। আর যারা দেখভাল করবেন, তাদের দেখা যায়নি। ঠিকাদার যা ইচ্ছে তাই করছেন। এতে কাজের মান খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।
এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদকর্মীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীবকে বিষয়টি অবগত করলে পরদিন রোববার দিনের বেলা ঘটনাস্থলে এসে ড্রেনের কাজ পরিদর্শন করে দায় সারেন। উল্টো সাফাই গান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের।
পরবর্তী সময়ে সংবাদকর্মীরা এ কাজের তথ্য চাইলে তিনি কোনো তথ্য না দিয়ে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন। তবে যেহেতু পৌরসভায় এ কাজটি বাস্তবায়ন হচ্ছে, সে কারণে তথ্য সরবরাহ করে পৌর কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: জাতীয়করণের নামে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ‘রমরমা ব্যবসা’
পৌর কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য বলছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় পৌর শহরের ১২টি ওয়ার্ডে ড্রেনসহ কয়েকটি অবকাঠামো উন্নয়নে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। এ কাজ বাস্তবায়নে রাজশাহীর মেসার্স সারা ইন্টারন্যাশনাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সালাউদ্দিন সোহাগ, তানভীর সিদ্দিকি কর্পোরেশন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আছিয়া আক্তার জাহানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের মেসার্স নন্দন প্রেস ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শফিউল ইসলাম কাজটি বাস্তবায়ন করছেন।
কাজের অনিয়মের বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, ‘রাতে কাজ করতে গেলে যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ ভালো হয় না। কেন রাতের আঁধারে ড্রেনের কাজ করা হচ্ছে, তা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা বলতে পারবেন। পৌরসভায় যেহেতু কাজটি হচ্ছে, সে কারণে আমরা শুধু অবগত। কাজ বাস্তবায়নে সমস্ত দায়িত্ব জনস্বাস্থ্যের।’
আরও পড়ুন: সময়োপযোগী হচ্ছে বিসিএসের সিলেবাস, কার্যকর ৪৮তম থেকে
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। কাজ চলমান থাকায় ড্রেনের পাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতেই রাতে কাজ চলমান রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে রাতে কাজ করার কোনো নিয়ম আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।