বিসিএসে স্বপ্নভঙ্গ, নন ক্যাডার পেয়েও হতাশ নন তারা

চাকরিপ্রত্যাশীরা
চাকরিপ্রত্যাশীরা  © সংগৃহীত

সম্প্রতি ৪০তম বিসিএসের ফল প্রকাশিত হয়েছে। এই বিসিএসে ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৬৩ জন। আর নন ক্যাডার পদের জন্য ৮ হাজার ১৬৬ জনের রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। বিসিএসে ক্যাডার পদ পাওয়ার স্বপ্ন থাকলেও অনেকেই শুরুর দিকে সফল হন না। নন ক্যাডার পদ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় অনেক শিক্ষার্থীকে।

এবছর রেকর্ড পরিমাণ শিক্ষার্থীকে পাস করানো হয়েছে বলে জানা গেছে। ৪০তম বিসিএসে আবেদন করেছিলো মোট ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে প্রিলিমিনারীতে উত্তীর্ণ হয় ২০ হাজার ২৭৭ জন। পরে লিখিত পরীক্ষা শেষে ভাইভার জন্য ডাকা হয় ১০ হাজার ৯৬৪ জনকে। তাদের মধ্যে ক্যাডার পদের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হন ১ হাজার ৯৬৩ জন। নন ক্যাডার পদের জন্য নির্বাচিত হন ৮ হাজার ১৬৬ জন।

চাকরিপ্রত্যাশীরা জানান, নন ক্যাডার পদের জন্য নির্বাচিত হলেও সবাই চাকরি পান না। ৩৮তম বিসিএসে প্রায় ৫০০ জনের মতো নন ক্যাডার থেকে চাকরি পান নি বলে জানান তারা।

৩৮তম বিসিএস থেকে নন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত রাশেদুল ইসলাম রাসেল জানান, নন ক্যাডারের তালিকায় থাকলেও অনেকে চাকরি পান না। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নন ক্যাডারে চাকরির ক্ষেত্রে কিছু শর্ত থাকে। বিষয় নির্ধারণ করে দেয়া থাকে। যার কারণে অনেকেই চাকরি পান না। এক্ষেত্রে বেশি বঞ্চিত হয় ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন- ৪০তম বিসিএস: প্রথম হওয়া চার প্রকৌশলীর গল্প

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী বলেন, ক্যাডার পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবধান তৈরি করে লিখিত অংশ। লিখিত পরীক্ষায় তিনটি বিষয়ে খুব ভালো করতে হয়। ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানে যারা ভালো নাম্বার পান তারা ক্যাডার পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকেন।

নন ক্যাডার পদ পেলেও হতাশ নন রাসেল। তিনি বলেন, ৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা ভালো হয়েছে। আবার ৪৩তম বিসিএসে প্রিলিমিনারীতে উত্তীর্ণ হয়েছি। আশা করি কাঙ্খিত ক্যাডার পদ পাবো। তিনি নন ক্যাডারপ্রাপ্তদের ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে ঘাটতি থাকলে দ্রুত সেটি পূরণ করে নিতে বলেন। একই সঙ্গে মানসিক দক্ষতাও জোর দিতে বলেন।

সরকারি ব্যাংকে চাকরি করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা আরমান উদ্দিন আহমেদ। তিনি ৪০তম বিসিএস প্রথম ভাইভা দিয়ে নন ক্যাডারের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, এই বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় বিজ্ঞানের প্রশ্নটা একটু কঠিন হওয়ায় মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণের হার কম ছিলো। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা ভালো করেছেন।

আরও পড়ুন- এসএসসিতে ফেল, ট্যাক্স ক্যাডার হলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহেল

তিনি বলেন, এবার অনেক শিক্ষার্থীকে পাস করানো হয়েছে। ফলে নন ক্যাডারের সংখ্যাও বেড়েছে। এটার একটা কারণ থাকতে পারে, এখানে যারা উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের কেউ কেউ ৩৮ বা এর আগের বিসিএসে নন ক্যাডারে চাকরি করছেন। পিএসসির কাছে সব তথ্যই সংরক্ষিত থাকে। যারা একটি গ্রেডে চাকরি করছেন তারা ওই গ্রেড বা তার নিচের পদে আবেদন করতে পারবেন না। সে অনুযায়ী নন ক্যাডারে উত্তীর্ণ বেশি দেখালেও অনেকে এই ক্যাটাগরিতে বাদ পড়ে যাবেন। আবার অনেকে বিভিন্ন ব্যাংকে চাকরি করছেন। তারা সাধারণত ৯ম বা দশম গ্রেডের নিচে আবেদন করবেন না। পিএসসি এবার ১২তম গ্রেড পর্যন্ত নিয়োগ দেবে। সেক্ষেত্রেও বেশ কিছু আসন ফাঁকা থাকবে।

আরমান বলেন, নন ক্যাডার পেয়ে হতাশ নই। সামনে আরও বিসিএসের সুযোগ আছে। প্রস্তুতিও ভালো। আশা করি স্বপ্ন পূরণ হবে।

উল্লেখ্য, ৪০তম বিসিএসে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা ভালো ফল করেছেন। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই নন ক্যাডার পদ পেয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ