ধর্মীয় উন্মাদনা রোধে বই প্রকাশে নজরদারি পুলিশের

  © ফাইল ফটো

আগের বছরগুলোর ন্যায় এবারও বইমেলায় কোন ধরনের বই প্রকাশ করা যাবে, আর কোনটি যাবে না, তা পুলিশের নজরদারিতে থাকবে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন বই মেলায় থাকতে দেওয়া যাবে না। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সদর দপ্তরে অমর একুশে গ্রন্থমেলার নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত সমন্বয় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি হলেও পুলিশ এই আয়োজনের অংশ হয়ে গেছে। বইমেলা ঘিরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে, এমন বই মেলায় থাকতে দেওয়া যাবে না।

উল্লেখ্য, গত বছরও বাংলা একাডেমির সার্ভেইল্যান্স টিম ও পুলিশের গোয়েন্দারা মেলায় আসা বইয়ের বিষয়বস্তুর ওপর নজরদারি করে। ২০১৫ সালে বইমেলায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে বই প্রকাশ করার অভিযোগে রোদেলা প্রকাশনীর স্টল বন্ধ করা হয়েছিল। একই অভিযোগে ২০১৬ সালে বদ্বীপ প্রকাশনীর স্টল বন্ধ করা হয় এবং গ্রেপ্তার হন কোনো কোনো লেখক ও প্রকাশক। ২০১৫ সালে বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায়কে বইমেলা থেকে ফেরার পথে টিএসসির কাছে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি হামলার শিকার হয়েছিলেন সাহিত্যিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ।

আগামী ০২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করবেন বলে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

গতকাল ডিএমপির ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোসাম্মৎ জোহরা খাতুন, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল, ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা, ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।

বইমেলার নিরাপত্তাব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, মেলায় বই নজরদারির কমিটি থাকবে। তিনি আরও জানান, এবারের বইমেলায় ৫৩৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে ৪১১টি প্রতিষ্ঠান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২৭টি প্রতিষ্ঠান স্টল দেবে।

এছাড়া বইমেলা প্রাঙ্গণে শিশুচত্বর, মসজিদ, টয়লেট ব্যবস্থাপনা, ফুড পার্ক ও প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র থাকবে। মেলার নিরাপত্তায় তিন শতাধিক সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। বাঁশ ও টিন দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণ শক্ত করে বেষ্টনী দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি স্টলে অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র বাধ্যতামূলকভাবে রাখতে প্রকাশকদের বলা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ