মেলায় নতুন বই: চার ভাগের তিন ভাগই মানহীন

বৃহস্পতিবারের বইমেলার দৃশ্য
বৃহস্পতিবারের বইমেলার দৃশ্য  © সংগৃহীত

লেখক ও প্রকাশকদের দাবির প্রেক্ষিতে অমর একুশে বইমেলা দুদিন বাড়ানো হয়েছে। চলবে আজ শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবারও। তবে বৃহস্পতিবার বইমেলার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সমাপনী অনুষ্ঠানে মাসব্যাপী বইমেলার প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বইমেলার সদস্য-সচিব ড. জালাল আহমেদ। 

প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে ড. জালাল আহমেদ বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলা একাডেমি আনুমানিক ২ কোটি ১৫ লাখ ৯১ হাজার টাকার বই বিক্রি করেছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত স্টল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং আজকের সম্ভাব্য বিক্রি যুক্ত করলে বলা যায় যে, এবার বইমেলায় গতবারের বিক্রির তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি বিক্রি হয়েছে (গতবারের বিক্রির পরিমাণ ছিল ৭০ কোটি ৫০)। মেলায় প্রকাশিত ৪ হাজার ৬৮৫টি নতুন বইয়ের মধ্যে মানসম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা ১ হাজার ১৫১টি। অর্থ্যাৎ চার ভাগের তিন ভাগই মানহীন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, একুশে বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। এই মেলা সারাদেশের জ্ঞান জগতে যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে তা অবিস্মরণীয়। এটি শুধু বিকিকিনির মেলা নয় বরং একটি জাতীয় সাংস্কৃতিক উৎসবে রূপ নিয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি।  অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। অন্যানের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন নিরাপদ মিডিয়ার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বইমেলা উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য দেশবাসীর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এবারের মেলা অতীতের যেকোনো বারের তুলায় ছিল বিস্তৃত, ব্যাপক ও বর্ণাঢ্য। প্রথমবারের মতো মেলার আয়োজনে এবার যুক্ত ছিল-লেখক বলছি মঞ্চ, কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, বাচিকশিল্পীদের পরিবেশনা এবং নান্দনিক সমাপনী আয়োজন। তবে মেলার শেষ মুহূর্তে আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রকাশকদের যে ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি করেছে সে জন্য আমরা সমবেদনা ও দুঃখ প্রকাশ করছি। এই দুর্যোগ আবারও প্রমাণ করেছে অমর একুশে বইমেলা আয়োজনের জন্য স্থায়ী মেলা মাঠ বরাদ্দের কোনো বিকল্প নেই যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধের সার্বিক ব্যবস্থা থাকবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, অমর একুশে বইমেলা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এক বিশাল জ্ঞানোৎসব। এবারের মেলা দেশ-বিদেশের জ্ঞানপিপাসু মানুষের মনে যে সাড়া জাগিয়েছে তা প্রমাণ করে এদেশের মানুষ জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বইমেলায় মানুষের মাঝে বই নিয়ে যে আগ্রহ দেখা গেছে তাতে প্রমাণ হয় প্রযুক্তির ব্যাপক বিকাশেও মুদ্রিত বইয়ের গুরুত্ব কিছুমাত্র হ্রাস পায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ