জিপিএ-৫ পেয়েও কৃষিতে সিলেকশনের অনিশ্চয়তায় আত্মহত্যার হুমকি

মো. মিলন হুসাইন
মো. মিলন হুসাইন  © ফাইল ছবি

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন মো. মিলন হুসাইন। স্বপ্ন দেখেন কৃষিবিদ হবার। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তবে সিলেকশনের নামে শিক্ষার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় টিকবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন তিনি। স্বপ্ন পূরণ করতে না পারলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন মিলন।

মঙ্গলবার (৭ জুন) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান মিলন। নিচে নিজের মোবাইল নম্বর উল্লেখ করে দেন।

সেই নাম্বারে কল দেওয়া হলে মিলন হুসাইন জানান, তার বাড়ি মাগুড়ায়। ২০২০ সালে মাগুড়ার বিহারীলাল শিকদার সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন তিনি। সে বছর (২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন মিলন। তবে প্রাথমিক সিলেকশন থেকেই বাদ পড়ে যান তিনি। এরপর থেকেই হতাশায় ভুগছেন তিনি।

তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে কৃষিবিদ হব। দেশের কৃষিতে অবদান রাখব। নিজেকে সেভাবেই প্রস্তুত করেছি। তবে কৃষি গুচ্ছ কর্তৃপক্ষের সিলেকশন প্রক্রিয়ার কারণে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছি না। কোন দিকে যাবো সেটি ভেবে পাচ্ছি না। তাই এবার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ না পেলে আত্মহত্যা করব। 

মিলন আরও বলেন, কৃষি গুচ্ছে সিলেকশন বৃদ্ধি অথবা বাতিল কিংবা একাধিক শিফটে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করলে অনেক মেধাবীর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে। আমরা সরাসরি সিট চাচ্ছি না। আমরা নিজেদের প্রমাণ করতে চাই। নিজেকে প্রমাণের সুযোগ না পেলে আত্মহত্যাই একমাত্র পথ।

আরও পড়ুন: অধ্যক্ষদের নিয়ে কক্সবাজার যাচ্ছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর

জানা গেছে, কৃষি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোট আসনের ১০ গুন শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়। কৃষিতে মোট আসন রয়েছে ৩ হাজার ৪০০। সে হিসেবে গত শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ পেয়েছেন ৩৪ হাজার শিক্ষার্থী। তবে ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় শুধুমাত্র বিজ্ঞানে ১ লাখ ২৩ হাজার ৬২০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। আর ২০২১ সালে বিজ্ঞানে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ২৩০ জন শিক্ষার্থী। সিলেকশনের ফলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই অবস্থায় সিলেকশন বাতিল অথবা বৃদ্ধি কিংবা একাধিক শিফটে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের দাবি শিক্ষার্থীদের।

মিলন জানান, কৃষিতে সিলেকশনের ফলে শুধু আমি না; আমার মতো জিপিএ-৫ পাওয়া প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার কৃষি গুচ্ছের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনও আমাদের পক্ষে কথা বলেছেন। তবে কৃষি গুচ্ছ কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। তাই বিষয়টি নিয়ে হতাশায় দিন পার করছি।

শিক্ষার্থীদের এসব দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি নিয়ে আমি উপাচার্যদের সাথে আলোচনা করবো। সব উপাচার্য যে মতামত দেবেন সেভাবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ