রাশিয়াকে এস-৪০০ ব্যবস্থা ফেরত দিতে চায় তুরস্ক, নেপথ্যে কী?

২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১১ AM
রাশিয়াকে এস-৪০০ ব্যবস্থা ফেরত দিতে চায় তুরস্ক

রাশিয়াকে এস-৪০০ ব্যবস্থা ফেরত দিতে চায় তুরস্ক © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের লক্ষ্যে রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা এস–৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে তুরস্ক। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে তুরস্কের প্রতিরক্ষা খাতে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান কর্মসূচিতে পুনরায় অন্তর্ভুক্তির পথ খুলতে পারে। বিষয়টি নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান গত সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আঙ্কারা একদিকে মস্কো ও কিয়েভ উভয় দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক বজায় রাখছে, অন্যদিকে মন্ট্রেক্স কনভেনশনের আওতায় কৃষ্ণসাগরে রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই দেশেরই নৌযান প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে। ন্যাটোর দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনীসমৃদ্ধ দেশ তুরস্ক রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় অংশ না নিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করছে, আবার ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহও অব্যাহত রেখেছে। এ অবস্থায় এরদোয়ান যেমন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছেন, তেমনি পুতিনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, এরদোয়ান রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা এস–৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ফেরত নিতে পুতিনকে অনুরোধ করেছেন। গত সপ্তাহে তুর্কমেনিস্তানে দুই নেতার বৈঠকে এ অনুরোধ জানানো হয়, যা এর আগে তুর্কি ও রুশ কর্মকর্তাদের মধ্যে হওয়া নীরব আলোচনার ধারাবাহিকতা। তবে ক্রেমলিন দাবি করেছে, ওই বৈঠকে এমন কোনো অনুরোধ জানানো হয়নি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আঙ্কারা শুধু রুশ নির্মিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাবই দিচ্ছে না, বরং এর বিনিময়ে অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেছে। সম্ভাব্য একটি ব্যবস্থায় রাশিয়া থেকে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার অর্থের সঙ্গে এস–৪০০–এর মূল্য সমন্বয়ের কথাও আলোচনায় রয়েছে। তবে এ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

আরও পড়ুন: হিমাগার থেকে বের করা হয়েছে হাদির মরদেহ

২০১৭ সালে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তিতে তুরস্ক রাশিয়ার কাছ থেকে এস–৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার সিদ্ধান্ত নেয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র আপত্তির মুখে পড়ে। ওয়াশিংটন উন্নত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানানোয় আঙ্কারা ওই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেয়। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে প্রথম দফা এস–৪০০ সরবরাহের পর তুরস্ককে এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়া হয় এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেশটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ২০২০ সালের মধ্যে তুরস্ক চারটি এস–৪০০ ব্যাটারি গ্রহণ করে। প্রতিটি এস–৪০০ ব্যবস্থায় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণযন্ত্র, রাডার, কমান্ড ইউনিটসহ বিভিন্ন যান অন্তর্ভুক্ত থাকে।

ব্লুমবার্গ জানায়, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এস–৪০০ পরিত্যাগের জন্য তুরস্কের ওপর চাপ বাড়ছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এরদোয়ানের বৈঠকেও বিষয়টি আলোচনায় আসে। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক চলতি মাসে গণমাধ্যমকে বলেন, আঙ্কারা এখন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ছাড়তে আগের চেয়ে ‘আরও কাছাকাছি’। তাঁর মতে, চার থেকে ছয় মাসের মধ্যে এ বিরোধের সমাধান হতে পারে।

রুশ সামরিক সরঞ্জাম পরিত্যাগ করলে তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পথ খুলতে পারে বলে ব্লুমবার্গের সূত্রগুলো জানিয়েছে। এক শীর্ষ তুর্কি কূটনীতিকের বরাত দিয়ে বলা হয়, তিনি আশা করছেন আগামী বছরই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। ব্লুমবার্গের মতে, এস–৪০০ ত্যাগের কূটনৈতিক সুফল ইতোমধ্যে এতে ব্যয় হওয়া কয়েক বিলিয়ন ডলারের চেয়েও বেশি হতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এস–৪০০ তুরস্কে পৌঁছালেও দেশটি কখনোই এই ব্যবস্থা সক্রিয় করেনি। ন্যাটো আগেই সতর্ক করেছিল, পশ্চিমা যুদ্ধবিমানের সঙ্গে রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করলে সংবেদনশীল তথ্য মস্কোর হাতে চলে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এসব উদ্বেগের কারণেই ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ককে এফ–৩৫ কর্মসূচি থেকে বহিষ্কার করে। পরের বছর কাউন্টারিং আমেরিকাজ অ্যাডভারসারিজ থ্রু স্যাংশনস অ্যাক্ট (ক্যাটসা) আইনের আওতায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তুরস্কের সংবেদনশীল মার্কিন সামরিক প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার বন্ধ করা হয়।

ব্লুমবার্গ বলছে, লকহিড মার্টিন নির্মিত এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান তুরস্কের জন্য এখনও একটি বড় লক্ষ্য। সবচেয়ে উন্নত সংস্করণের প্রতিটি এফ–৩৫ বিমানের মূল্য ১০ কোটি ডলারেরও বেশি। এস–৪০০ ফেরত দেওয়ার মাধ্যমে আঙ্কারা এসব যুদ্ধবিমানে পুনরায় প্রবেশাধিকার পেতে এবং পুরোপুরি পশ্চিমা প্রতিরক্ষা কাঠামোয় ফিরে যেতে চায়।

সাধারণ ছুটির দিনেও খোলা থাকবে ব্যাংকের যেসব শাখা
  • ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
বিদায়ী ২০২৫ সালে ‌‘মব’ দিয়ে শুরু ‘গুলিতে’ শেষ
  • ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে চাকরি, আবেদন অনলাইনে
  • ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে জরুরি বৈঠকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর
  • ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ইবির ইউট্যাব ও জিয়া পরিষদের শোক
  • ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়ার নাম দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক…
  • ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫