প্রতীকী ছবি © সংগৃহীত
আজকের ডিজিটাল যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেন জীবনের এক অপরিহার্য অংশ। অনেকে প্রতিদিন নিজের ছবি, চিন্তা, মতামত, কিংবা জীবনের মুহূর্তগুলো শেয়ার করে লাইক ও মন্তব্যের ভিড়ে নিজের উপস্থিতি জানান দেন। কিন্তু এরই মাঝে এমন এক শ্রেণির মানুষ আছেন, যারা কোনো কিছুই পোস্ট করেন না। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স বা লিংকডইন সব জায়গায় একেবারে নীরব। তাঁরা আছেন, কিন্তু যেন অদৃশ্য।
কেন তাঁরা এমন? চলুন জেনে নিই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষ্ক্রিয় বা নীরব মানুষদের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য।
তাঁরা পর্যবেক্ষক
এসব ব্যক্তি নিজেরা কিছু না বললেও চারপাশের সবকিছুই দেখেন। কে কী করছে, কোন ট্রেন্ড চলছে, কার জীবন কেমন বদলাচ্ছে সব তাঁদের নজরে থাকে। তাঁরা তথ্য সংগ্রহ করেন, কিন্তু খুব কমই প্রতিক্রিয়া জানান।
ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় বিশ্বাসী
নীরব ব্যবহারকারীরা সাধারণত তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন প্রকাশ করতে চান না। তাঁরা মনে করেন, ইন্টারনেটে নিজের জীবন প্রকাশ মানে গোপনীয়তার ঝুঁকি নেওয়া। তাই ব্যক্তিগত মুহূর্ত, সম্পর্ক বা ভাবনা সব কিছুই তাঁদের কাছে ব্যক্তিগত থেকে যায়।
আত্মবিশ্বাসী কিন্তু অন্তর্মুখী
এই শ্রেণির মানুষ সাধারণত আত্মবিশ্বাসহীন নন বরং আত্মবিশ্বাসী। তবে তাঁরা অন্তর্মুখী প্রকৃতির, নিজেকে প্রকাশ করার চেয়ে নিজেকে বোঝা বা চিন্তা করায় বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
সময় অপচয়কে ঘৃণা করেন
তাঁদের কাছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রল করা মানেই সময়ের অপচয়। তাঁরা সময়কে কাজে লাগাতে চান বই পড়া, কাজ করা, কিংবা বাস্তব জীবনে সম্পর্ক গড়ার মধ্যে। তাই নিউজফিড নয়, বাস্তব জীবনের ঘটনাই তাঁদের আকর্ষণের কেন্দ্র।
ট্রেন্ডে আগ্রহ নেই
যেখানে অধিকাংশ মানুষ নতুন ট্রেন্ড বা ভাইরাল বিষয় নিয়ে মাতামাতি করেন, সেখানে তাঁরা একেবারেই উদাসীন। তাঁরা নিজস্ব রুচি ও চিন্তার জগতে থাকেন ট্রেন্ডিং বা হ্যাশট্যাগ তাঁদের কাছে অপ্রাসঙ্গিক।
তাঁরা বিশ্লেষণধর্মী চিন্তক
এঁদের মধ্যে অনেকেই বিশ্লেষণধর্মী চিন্তক। তারা সহজে কিছু বিশ্বাস করেন না বা তাড়াহুড়ো করে মতামত দেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্যবন্যায় তাঁরা যাচাই না করে কিছু শেয়ার করা থেকে বিরত থাকেন।
নীরবতা তাঁদের শক্তি
সবশেষে, তাঁদের নীরবতাই তাঁদের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ। তাঁরা জানেন সব কথা বলা, সব ভাবনা লেখা বা সব মুহূর্ত শেয়ার করা জরুরি নয় বরং অনেক সময় নীরবতাই সবচেয়ে জোরালো বার্তা বহন করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় না হওয়া মানে এই নয় যে কেউ উদাসীন বা বিচ্ছিন্ন বরং অনেকে নীরবে থেকেই আরও গভীরভাবে সমাজ, মানুষ ও নিজেকে বোঝেন। তাঁদের নীরব উপস্থিতিই আমাদের মনে করিয়ে দেয় ডিজিটাল যুগেও নীরবতা এক ধরণের শক্তি।