ভাসানী ক্ষমতার চেয়ে জনতার রাজনীতিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন: শিক্ষা উপদেষ্টা

২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২৫ PM , আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২৯ PM
ডিকলোনাইজেশন অ্যান্ড মওলানা ভাসানী শীর্ষক সম্মেলনে শিক্ষা উপদেষ্টা

ডিকলোনাইজেশন অ্যান্ড মওলানা ভাসানী শীর্ষক সম্মেলনে শিক্ষা উপদেষ্টা © টিডিসি

মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ক্ষমতার রাজনীতির চেয়ে জনতার রাজনীতিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)।

তিনি বলেন, ভাসানীর রাজনীতি কখনোই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল না; দরিদ্র কৃষক, শ্রমজীবী ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েই তিনি রাজনীতি করেছেন। ক্ষমতার রাজনীতির চেয়ে জনতার রাজনীতিকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (কারাস) কর্তৃক আয়োজিত ‘ডিকলোনাইজেশন অ্যান্ড মওলানা ভাসানী’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে উপস্থিত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে কারাসের পরিচালক অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেনের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কারাসের চেয়ারম্যান ও ইমিরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অব ব্রুনাই দারুসসালামের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইফতেখার ইকবাল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা নন; তিনি ছিলেন জনতার বিবেক, নৈতিকতার প্রতীক এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দূরদৃষ্টি রাষ্ট্রচিন্তক।

তিনি আরও বলেন, ভাসানী রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, সাংস্কৃতিক মর্যাদা ও মানবিক সম্মানের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে দেখতেন। এ কারণেই তিনি খুব আগেই পাকিস্তানি শাসনব্যবস্থার বৈষম্য শনাক্ত করতে পেরেছিলেন এবং ১৯৫৭ সালে তার ঐতিহাসিক ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারণ করেন।

অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, ভাসানীর কাছে শিক্ষার মানে ছিল চেতনার জাগরণ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস সৃষ্টি; বাস্তব জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন শিক্ষা মুক্তির পথ হতে পারে না।

আরও পড়ুন: রাবির আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের অবমাননার প্রতিবাদ বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের

সভাপতির বক্তব্যে ইমিরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন এই দেশের মানুষের মুক্তির জন্য আজীবন সংগ্রামরত একজন সমাজবিপ্লবী ও দূরদর্শী রাষ্ট্রচিন্তক। তিনি নিজেকে প্রথমে বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন এবং নদী, কৃষক, শ্রমিক ও প্রান্তিক মানুষের প্রশ্নকে রাজনীতির কেন্দ্রে এনেছেন। ভাসানীর রাজনীতি ছিল ক্ষমতা বা নির্বাচনের জন্য নয়; বরং সাম্য, সামাজিক মালিকানা ও গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য। আজকের বৈশ্বিক সংকটের প্রেক্ষাপটে মওলানা ভাসানীর পথই মানবমুক্তি ও প্রকৃত স্বাধীনতার দিশা বলে তিনি উল্লেখ করেন।

স্বাগত বক্তব্যে কারাসের পরিচালক অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন ঔপনিবেশিক শাসন, পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এক বিরল সমাজবিপ্লবী নেতা। তিনি কলোনিয়াল বাংলা, আসাম, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের চারটি রাজনৈতিক পরিসরে সংগ্রামের অভিজ্ঞতা অর্জন করে উপমহাদেশের কৃষক আন্দোলনে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। বাংলাদেশ ও আসামের কৃষক বিদ্রোহের ইতিহাস পুনর্লিখনে মওলানা ভাসানীর ভূমিকা নতুন করে মূল্যায়ন করা জরুরি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে মওলানা ভাসানীর জীবন ও সংগ্রামভিত্তিক একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য, আগামী ২৪ ডিসেম্বর সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মওলানা ভাসানীর বিশ্বদর্শন, রাজনৈতিক চিন্তা ও বি-উপনিবেশায়ন প্রক্রিয়ায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে আলোচক হিসেবে অংশ নেবেন অধ্যাপক আহমেদ কামাল, অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহসহ বিশিষ্ট গবেষক ও শিক্ষাবিদগণ।

এছাড়া কারাস গবেষক দলের উদ্যোগে ‘ফিরে দেখা ফারাক্কা লংমার্চ’ শীর্ষক একটি বিশেষ পর্যালোচনা অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের রাজনৈতিক ও সামাজিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা হবে।

 

চতুর্থ দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
বিপিএলের রেকর্ড বইয়ে পাকিস্তানি তারকা অলরাউন্ডার
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
আল্লাহর পরিকল্পনায় ধানের শীষের জোয়ারের বিপক্ষে লড়তে হচ্ছে: …
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
গণতন্ত্র কোনো চূড়ান্ত গন্তব্য নয়, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া:…
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সুপারিশের তিন মাসেও হয়নি গেজেট, পদায়নবঞ্চিত ৩৫০০ চিকিৎসক
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
জামায়াতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে আরও একটি দল
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫