দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবি

৩০ নভেম্বর থেকে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট-ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতি, ৪ ডিসেম্বর কমপ্লিট শাটডাউন

২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৮ PM
সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ

সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ © টিডিসি ছবি

১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে এক সপ্তাহের কর্মসূচির রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ঘণ্টা ও ৩ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি এবং ৪ নভেম্বর কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা দিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে ৪ দিনের আল্টিমেটাম দেন পরিষদের সমন্বয়ক ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (এম-ট্যাব) মহাসচিব মো. বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব। তিনি জানান, এ সময়ে সারাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ এবং স্মারক লিপি প্রদান করবে সংগঠনটি।

কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, ৩০ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করা হবে। পরবর্তীতে ১ ও ২ ডিসেম্বর সময় নিয়ে আবারও ৩ ডিসেম্বর অর্ধদিবস (সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত) কর্মবিরতি পালন করবেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা।

এছাড়া ৪ ডিসেম্বর পূর্ণদিবস কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। এরপরেও সরকার যদি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ন্যায্য অধিকার ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন না করে তাহলে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের সমন্বয়কারী মো. রিপন শিকদার বলেন, স্বাস্থ্যসেবা একটি টিম ওয়ার্ক, যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ তত্ত্বাবধানে চিকিৎসক ও নার্সদের পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টগণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। রোগীদের সেবাদানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো যেমন (এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, রক্ত পরীক্ষা, ক্যানসার প্রতিরোধে রেডিওথেরাপী, ফিজিওথেরাপি, ডেন্টাল) রোগ নির্ণয়ে সর্বাত্মক ভূমিকা রাখেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা। ফার্মাসিস্টরা মেডিসিন স্টোরের দায়িত্ব, ঔষধের চাহিদাপত্র প্রস্তুতকরণ, সংরক্ষণ, মান নিয়ন্ত্রন, বিতরনসহ ইত্যাদি দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন। এ পেশায় বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এ পেশায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বরং অবহেলিত রয়েছে বছরের পর বছর।

তিনি বলেন, নানাবিধ বৈষম্য আর বঞ্চনায় জর্জরিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পেশার দুর্ভাগ্যজনক অধ্যায় তিন দশকেও ১০ম গ্রেডের পদমর্যাদা বাস্তবায়িত না হওয়া। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়েই এ পেশার পথচলা শুরু হলেও ১৯৮৯ সাল পরবর্তী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পেশাজীবীদের ১০ম গ্রেড পদমর্যাদার দাবিটি অব্যাহতভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ে বারংবার উপস্থাপিত হয়ে আসছে। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন, সংগ্রাম, সহায়ক কর্মসূচি পালন, দাপ্তরিক চিঠি চালাচালি, আবেদন, সর্বোপরি জনপ্রশাসন বিধি শাখার সমস্ত চাহিদা পূরণ করা হয়েছে তা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাব, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও নানাবিধ উদ্দেশ্যে মন্ত্রণালয় অবিরতভাবে কোয়ারী দেওয়ার মাধ্যমে সময়ক্ষেপণ ও জটিলতাই তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, ১৯৯৪ সাল হতে ২০২৫ পর্যন্ত সুদীর্ঘ ৩১ বছর এই জাতি ১০ম গ্রেড পদমর্যাদার জন্য সংগ্রাম করে আসছে। ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সকল গ্রুপকে ২য় শ্রেনীর গেজেটেড এবং বেতন ১০ম গ্রেড উন্নীত করণের বিবেচনার জন্য ২০০৩ সালে প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উপস্থাপন হলেও অদ্যাবধি দাবিটি বাস্তবায়ন হয়নি।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১০ম গ্রেড পদমর্যাদার দাবি পুনরায় আলোচনায় এসেছে। সর্বশেষ গত বছর একাধিকবার ১০ম গ্রেডের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। তার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ০১ জানুয়ারি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বরাবির ১০ম গ্রেড প্রদানসংক্রান্ত প্রস্তাবনা প্রেরণ করেন।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৪ সালে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের পদে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমাধারীদের ২য় শ্রেণির পদমর্যাদাসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ২০১৭ সালে নার্সিং ডিপ্লোমাধারীদের ২য় শ্রেণির পদমর্যাদাসহ বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ২০১৮ সালে কৃষি ডিপ্লোমাধারীকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। আমরা সরকারের সদয় সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে একই সমযোগ্যতা সম্পন্নকারীদের ১০ম গ্রেড প্রদান করা হলেও সমযোগ্যতা সম্পন্ন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স, ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ন্যায় সম-ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদেরকেও ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

রিপন শিকদার বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করি, সরকার আমাদের যৌক্তিক দীর্ঘদিনের ন্যায্য অধিকার ১০ম গ্রেড এর সরকারি আদেশ জারির মাধ্যমে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং ফার্মাসিস্টদের দীর্ঘ ৩১ বছরের বৈষম্যের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে আন্দোলনের পথে ঠেলে দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। অন্যথায় আগামী সপ্তাহ থেকে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি এবং কর্মবিরতির মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমটিএ) সভাপতি খাজা মাইনুদ্দীন মঞ্জু, বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের সভাপতি আব্দুস সামাদ, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গাজী মো. সাইফুল্লাহ, এমট্যাবের সভাপতি একেএম মুসা আল লিটন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরামের সভাপতি মো. সোহেল রানা, ডিপ্লোমা ফার্মাসি অ্যাসোসিয়েশন (ডিফ্যাব) সদস্য সচিব মো. নাজমুল হুদা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

৬ষষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্…
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
খালেদা জিয়াকে দেখে এভারকেয়ার থেকে রাত ২টায় বের হলেন তারেক র…
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
বাবরের আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন তার স্ত্রী
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
দেশজুড়ে তীব্র শীতে কষ্টে মানুষ, শৈত্যপ্রবাহ থাকবে কতদিন?
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
ঝালকাঠিতে আ. লীগ নেতাসহ ২৫ জনের মনোনয়নপত্র জমা
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
নির্বাচন নিয়ে জোটের সিদ্ধান্তকেই আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মেন…
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫