চবিতে জুনিয়রের হাতে লাঞ্ছিত সিনিয়র: তদন্ত কমিটি গঠন, শোকজ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহিত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাখা ছাত্রলীগের জুনিয়র দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে সিনিয়র দুই নেত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় চার সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হল কর্তৃপক্ষ। এবং চার কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া হলে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ এনে অভিযুক্ত তাসফিয়া জাসারাত নোলক নামে একজনকে কারণ দর্শানোর নেটিশ দেয়া হয়েছে। 

তদন্ত কমিটি গঠন: এ ঘটনায় হল কর্তৃপক্ষ হলের সিনিয়র শিক্ষক ড. শাহ আলমকে আহ্বায়ক, হলের আবাসিক শিক্ষক উম্মে হাবিবাকে সদস্য সচিব ও সহকারী প্রক্টর আহসানুল কবির ও হাসান মুহাম্মদ রোমানকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে৷ 

শোকজ: এছাড়া হলে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ এনে কারণ দর্শানের নোটিশ দিয়েছে তাসফিয়া জাসরাত নোলককে৷ পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধার এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ৷

এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলে এ ঘটনা ঘটে। হলের রুমে প্রবেশে অনুমতি নিতে বলায় এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী হলেন- ছাত্রলীগের উপ-স্কুলছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও সংস্কৃত বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের ছাত্রী সিমা আরা শিমু এবং উপছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সাজামুন নাহার ইষ্টি।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ নেতার চাপ, প্যাডে স্বাক্ষর দিয়ে নিখোঁজ হন কুবির তারেক

অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ও ছাত্রলীগের নেত্রী। তাদের একজন ইংরেজি বিভাগের তাসফিয়া জাসারাত নোলক ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক। অন্যজন হলেন- নির্জনা ইসলাম নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রলীগের উপ-কৃষিশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে অভিযুক্ত তাসফিয়া জাসারাত নোলককে মাদকদ্রব্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশ থেকে রাত ১২টার দিকে হাতেনাতে ধরেন প্রক্টরিয়াল বডি। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেত্রী সাজমূল নাহার ইষ্টি ও তার রুমমেট নির্জনা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হলের ২০৩ রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে নির্জনা ও ইস্টি রুমের মধ্যে ছিলো। এ সময় নোলক তাদের রুমে প্রবেশ করেন। নোলকে হুটহুট নক না করে রুমে প্রবেশ করতে বারণ করায় নির্জনা ও নোলক ইষ্টির সঙ্গে তর্কে জড়ায়। এরপর ইষ্টি নির্জনার মা ও নোলকের বাবাকে এ বিষয় জানালে নোলক আবার তার রুমে আসেন এবং ইষ্টির সঙ্গে আবারও তর্কে জড়ান। এ সময় পাশের ছাত্রলীগ নেত্রী ও নাট্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী সীমা আক্তার তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করলে তাকে চড় মারেন। এরপর তারা উভয়ে এক অপরকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেত্রী ইস্টি জানান, ‘নোলক আমার রুমে হুটহাট করে ডুকে। এভাবে রুমে না আসতে বলায় নোলক তর্কাতর্কি শুরু করে। এ বিষয়ে আমি নির্জনার আম্মু ও নোলকের বাবাকে ফোনে জানাই। এরপর নোলক আমার রুমে এসে গালাগালি করে। সীমা আপু তাকে থামানোর চেষ্টা করলে সে সীমা আপুকে চড় মারে। পরে হলের অন্য শিক্ষার্থীরা আমাদের উদ্ধার করেন।’


সর্বশেষ সংবাদ